পশ্চিম বর্ধমান: ১৩ মাসেরও বেশি সময় ধরে আসানসোল বিশেষ সংশোধনাগারে থাকা গরু পাচারকাণ্ডের (Cattle Smuggling) অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত এনামুল হক (Enamul Haque) বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মুক্তি পেলেন। সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ সোমবারই তাঁকে জামিন দিয়েছিল।
কিন্তু আদালতের সেই জামিনের নির্দেশে বলা ছিল আসানসোলের সিবিআই আদালত এনামুলের জামিনের শর্তগুলি ঠিক করবে। স্বাভাবিকভাবেই বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের ওই নির্দেশকে সামনে রেখে আসানসোলের সিবিআই আদালতে এনামুলের আইনজীবী শেখর কুণ্ডু এনামুলের জেল থেকে মুক্তির জন্য শর্তগুলি ঠিক করতে আবেদন করেন।
সেই সময় শুনানিতে সিবিআইয়ের আইনজীবী রাকেশ কুমার সওয়াল করেন এনামুল হক যেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাকে এই মামলায় তদন্ত করতে সহযোগিতা করেন। পাল্টা, এনামুলের আইনজীবী তাঁর জামিনের পক্ষে সওয়াল করেন। জামিনের পক্ষে মত দিয়ে পাল্টা বিচারক শর্ত আরোপ করেন, এনামুলের পার্সপোর্ট সিজারের কপি চারদিনের মধ্যে আদালতকে দিতে হবে।
পাশাপাশি বিচারকের নির্দেশ, ২ লক্ষ টাকার বন্ডের জামিনে এনামুলকে মুক্তি দেওয়া হবে ও আগামী ৪ মাস প্রতি সপ্তাহে একদিন করে কলকাতার নিজাম প্যালেসে সিবিআই দফতরে হাজিরা দিতে হবে। এই শর্তগুলি না মানলে পুনরায় এনামুলের জামিন খারিজ হবে। আদালতের নির্দেশে এনামুলকে বিকেলের মধ্যেই আসানসোল সংশোধনাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৭ নভেম্বর দিল্লিতে এনামুলকে গরু পাচারকাণ্ডে গ্রেফতার করা হয়। পরের দিন ৮ নভেম্বর এনামুলের করোনা ধরা পড়ে। চিকিৎসার প্রয়োজনে ছাড়া হলেও সুস্থ হলে তাঁকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেয় সিবিআই আদালত। ঐ বছরই ১১ ডিসেম্বর তিনি আত্মসমর্পণ করেন। প্রথমে তাঁর জেল হাজত হয়। পরে আবার সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এনামুলকে নিজেদের হেফাজতে নেয়। তারপর থেকে ফের জেলেই দিন কেটেছে এনামুলের।
এই মামলায় হাইকোর্টে আবেদন করলেও সেখানে জামিন না মেলায় ২০২২ সালের ২৪ জানুয়ারি সুপ্রিমকোর্টে স্পেশাল লিভ পিটিশন দায়ের করা হয়। সেই আবেদনের ভিত্তিতে গত সোমবার এনামুলকে জামিন দেয় সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। প্রসঙ্গতঃ ২০১৫ সাল থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে প্রায় ২০ হাজার গরু অবৈধভাবে পাচার করা হয় সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে । সেই পাচারকীর্তিতে কোটি কোটি টাকা আয় করেছিলেন এনামুলরা এমনটাই দাবি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার। গরু পাচার মামলায় আরও কয়েকটি শীর্ষ স্থানীয় ব্যক্তির নামও উঠে এসেছিল। এই মামলায় অন্যতম আরেক অভিযুক্ত বিএসএফের কমান্ড্যান্ট সতীশ কুমার আগেই জামিন পেয়েছেন। বর্তমানে তিনি ছত্তিশগড়ে কর্মরত।
আরও পড়ুন: ‘বয়কট’ ধর্মঘট! বনধ ছেড়ে বিকল্প খুঁজছে বাম শিবির, তড়িঘড়ি বৈঠকে রাজ্য কমিটি
আরও পড়ুন: গরু পাচারকাণ্ডে সতীশ কুমারের গ্রেফতারির পর কড়া বিএসএফ, দেড় বছরে ৩৩ জনকে কোর্ট মার্শাল