আসানসোল : বিচারককে চিঠি দিয়ে হুমকি দেওয়ার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে আইনজীবী মহল। যাঁর জামিনের আর্জি জানিয়ে ওই হুমকি চিঠি, সেই অনুব্রত মণ্ডলও বলেছেন, তিনি বিচারকের কাছে ওই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের আর্জি জানাবেন। কিন্তু কে দিল এই হুমকি চিঠি? কার মাধ্যমে চিঠি পাঠানো হল? তারই তদন্ত শুরু করল পুলিশ। সিবিআই বিশেষ আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী তাঁকে পাঠানো হুমকি চিঠির বিষয়ে দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটকে অবগত করেছেন। এরপরই বিষয়টা খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে পুলিশ।
চিঠি পাওয়ার পরই বিচারক সিবিআই আদালতের পাশাপাশি কলকাতা হাইকোর্টকে বিষয়টি জানিয়েছিলেন। এবার লিখিতভাবে পুরো বিষয়টা জানালেন দুর্গাপুরের পুলিশ কমিশনারকেও। এরপর পুলিশ প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেছে বলে সূত্রের খবর। আদালতে আসা ওই চিঠি কি ডাক বিভাগের মাধ্যমে এসেছে? নাকি কেউ হাতে করে দিয়ে গিয়েছেন? তা খতিয়ে দেখা হবে বলে জানা গিয়েছে। সূত্রের খবর, ডাক বিভাগের মাধ্যমে চিঠি এসে থাকলে প্রথমে পোস্ট অফিসকে চিহ্নিত করবে পুলিশ, তারপর সেই পোস্ট অফিসে কোন আধিকারিক দায়িত্বে ছিলেন, তা খোঁজ নেওয়া হবে। প্রয়োজনে পোস্ট অফিসের সিসিটিভি ফুটেজও খতিয়ে দেখা হতে পারে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী তাঁর অভিযোগে জানিয়েছেন, তাঁর কাছে একটি হুমকি চিঠি এসেছে, যেখানে বলা হয়েছে, বীরভূমের তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলকে জামিন দিতে হবে, নাহলে বিচারক ও তাঁর পরিবারকে মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হবে।
বুধবারই চারদিনের সিবিআই হেফাজত শেষে আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে পেশ করা হবে অনুব্রতস মণ্ডলকে। আগের দিনের শুনানিতে অনুব্রতর জামিনের আর্জি জানিয়েছিলেন তাঁর আইনজীবীরা। মূলত শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে তাঁর জামিনের আর্জি জানানো হয়েছিল। যদিও সিবিআই-এর আর্জিই মঞ্জুর করে আদালত। গরু পাচার মামলায় দু দফায় মোট ১৪ দিনের হেফাজতে ছিলেন অনুব্রত। এই ১৪ দিনে মামলার তদন্তে বীরভূমের একাধিক জায়গায় তল্লাশিও চালিয়েছে সিবিআই। সামনে এসেছে অনুব্রতর রাইস মিলের ব্যবসা।
উল্লেখ্য, বিচারককে হুমকি দেওয়ার এই ঘটনায় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির দ্বারস্থ হতে চলেছে বিজেপি। বুধবার দুপুরেই প্রধান বিচারপতি এন ভি রমণের সঙ্গে দেখা করবেন বিজেপির আইনজীবী সেলের প্রতিনিধিরা। এই ঘটনায় বিচার ব্যবস্থাকে নিশানা করা হয়েছে বলে প্রধান বিচারপতির কাছে জানাবেন তাঁরা।