দুর্গাপুর : মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ক্ষমতায় আসার আগেই ঘোষণা করেছিলেন, ক্ষমতায় এলে তিনি জলের ওপর কোনও কর (Water Tax) বসাবেন না তিনি। কথাও রেখেছিলেন তিনি। ক্ষমতায় আসার পরই কর তুলে নেন। পরেও অনেক সভায় মমতাকে বলতে শোনা গিয়েছে, কেন্দ্র চাপ দেওয়া সত্ত্বেও তিনি জলের ওপরকর নেবেন না। কিন্তু, মমতার রাজ্যেই ভিন্ন ছবি। শুধু কর নেওয়া হচ্ছে তাই নয়, জলের কানেকশন নিতে দিতে হচ্ছে মোটা টাকা। এমনই অভিযোগ তুলছেন দুর্গাপুর পুরনিগম এলাকার বাসিন্দারা।
ওই এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বাড়িতে জলের কানেকশন নেওয়ার জন্য তাঁদের কাছে চাওয়া হয় ৮ হাজার টাকার কিছু বেশি, প্রায় ৮ হাজার ৮০০ টাকার মতো। এছাড়া মাসে মাসে দিতে হয় টাকা। অন্তত ৭০ টাকা করে দিতে হয় বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। তাঁদের দাবি, কেন টাকা নেওয়া হয়, সেটা জানানো উচিত পুরনিগমের।
তবে কর নেওয়ার কথা অস্বীকার করছে না পুর প্রশাসকমণ্ডলী। তাঁদের দাবি, রাজ্যের অন্যান্য জায়গার থেকে দুর্গাপুরের ছবিটা কিছুটা আলাদা। এই পুরনিগমকে অনেক বেশি টাকা দিয়ে দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন থেকে জল কিনতে হয়। সে কারণেই নাকি বাসিন্দাদের কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে ন্যুনতম টাকা।
দুর্গাপুর নগর নিগমের মুখ্য প্রশাসক অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন বা ডিভিসি একটি রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সংস্থা। সেখান থেকে এত বেশি টাকা দিয়ে জল কিনতে হচ্ছে যাতে বাসিন্দাদের বিনামূল্য জল দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। সমস্যা সমাধানের কথা তাঁরা ভাবছেন বলেই দাবি অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায়ের। প্রশাসকমণ্ডলীর অন্যতম সদস্য দীপঙ্কর লাহা জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীর কথা মেনে চলতে তৎপর তাঁরাও। কিন্তু দুর্গাপুরের পরিস্থিতিতে তা সম্ভব হচ্ছে না।
এদিকে এই ঘটনা সামনে আসতেই সুর চড়াচ্ছেন বিরোধীরা। বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী এই ঘটনায় রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে দ্বিচারিতার অভিযোগ তুলেছেন। তাঁর দাবি, মুখ্যমন্ত্রী বলে দিন যে জলের ওপর কর নেওয়া হবে। কর নেওয়া হবে না বলেও কর কেন নেওয়া হচ্ছে, সেই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি জল প্রকল্পে তোলাবাজির অভিযোগ উঠেছে নদিয়ার নবদ্বীপ পুরসভায়। পানীয় জলের কানেকশন দিতে প্রত্যেক বাড়ি থেকে ৩ হাজার টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সেখানে। সেই টাকা দিতে না পারলে জলের কানেকশন কেটে দেওয়া হচ্ছে বলেও দাবি বাসিন্দাদের। নবদ্বীপের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের তেঘড়িপাড়ায় এমন অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় কাউন্সিলরের উপস্থিতিতে নাকি কেটে দেওয়া হচ্ছে জলের লাইন এমনটাও অভিযোগে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তবে কি জলে এবার নতুন কোনও কেলেঙ্কারি?