আসানসোল: শনিবার সকাল-সকালই বিজেপি নেত্রী চৈতালি তিওয়ারির (Chaitali Tiwari) বাড়িতে হাজির হয় পুলিশ (Police)। আসানসোল কম্বল বিতরণ-কাণ্ডে এদিন মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় চৈতালিকে। একটানা ২ ঘণ্টা জেরা করা হয় তাঁকে। আর এই জেরার পরই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন চৈতালি তিওয়ারি স্বামী তথা আসানসোল পুরনিগমের প্রাক্তন মেয়র জিতেন্দ্র তেওয়ারি।
এ দিন তিনি অভিযোগ করে বলেন, “জেরা করার নামে চৈতালি তেওয়ারিকে মানসিক ভাবে হেনস্থা করা হয়েছে। আর এটা পুলিশ করেছে তৃণমূল কংগ্রেসকে খুশি করতে। আজ কিছু তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা দুটো রুটি বেশি করে খাবেন।” প্রাক্তন মেয়রের দাবি, “হাইকোর্ট একমাত্র এই মামলার তদন্তকারী অফিসার বা আইওকে জেরা করার কথা বলেছিল। কিন্তু এদিন সাতজন অফিসার আমার ঘরে চৈতালিকে জেরা করেছে। যা হওয়া অনুচিত। হাইকোর্ট ২ ঘন্টা জেরা করার কথা বলেছিলো। তা বলে ২ ঘন্টা জেরা করতেই হবে? কম সময় একটু করা যেত না? একজন মহিলাকে এইভাবে জেরা করা যায়? চৈতালি তেওয়ারি তো ক্রিমিনাল নয়।” জিতেন্দ্র আরও বলেন, “ওই জেরা করার পরে চৈতালি তেওয়ারি অসুস্থ হয়ে পড়েছে। জানিনা, আর পুলিশ জেরা করতে আসবে কি না। তবে হাইকোর্টের নির্দেশ মত সোমবার ২ ঘণ্টা পুলিশ জেরা করতে আসতে পারে।”
এ দিন, বারোটার সময় জেরা করে বের হন এই মামলার তদন্তকারী অফিসাররা। তবে সাংবাদিকদের সামনে কোনও মন্তব্য করতে চাননি তাঁরা। শনিবার চৈতালি তেওয়ারিকে জেরা করার জন্য ঘনশ্যাম এপার্টমেন্টকে কার্যত দূর্গের মতো করে ঘিরে রাখে পুলিশ। লোহার ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়। চৈতালি তেওয়ারি যে আবাসনে থাকেন সেখানে সাংবাদিকদের জেরা করার সময় ঘেষতে দেওয়া হয়নি।
উল্লেখ্য, দুদিন আগে নোটিস পাঠানো হয়েছিল চৈতালির বাড়িতে। কিন্তু তিনি বাড়ি না থাকায় পুলিশকে ফিরে আসতে হয়। ইতিমধ্যেই আদালত নির্দেশ দিয়েছে, চৈতালিকে পুলিশি তদন্তে সাহায্য করতেই হবে। হাইকোর্টের রক্ষাকবচও পেয়েছেন চৈতালি। শুক্রবার তৃতীয়বারের জন্য ওই নোটিস চৈতালি তিওয়ারির আবাসনের দরজায় সাঁটিয়ে দিয়ে আসে পুলিশ। নোটিসে বলা হয়, শনিবার যেন চৈতালি বাড়িতে থাকেন। সেই মতো বাড়িতে ছিলেন তিনি। এরপর শনিবার সকাল দশটা থেকে হয় জিতেন্দ্র জায়াকে জিজ্ঞাসাবাদ। দুই পুলিশ সুপার সহ মোট সাত পুলিশ আধিকারিক জেরা করেন তাঁকে।
প্রসঙ্গত, উল্লেখ্য, গত বুধবার আসানসোল পুরনিগমের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের রেলপারের রামকৃষ্ণ ডাঙালে শিবচর্চা ও মেগা কম্বল বিতরণ করার এক অনুষ্ঠান হয়। বকলমে, এই অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তা ছিলেন আসানসোল পুরনিগমের বিরোধী দলনেত্রী চৈতালি তেওয়ারি। এই ঘটনায় পদপিষ্ট হয়ে তিনজনের মৃত্যু হয়। মৃত একজন ঝালি বাউরির ছেলে সুখেন বাউরি পরের দিন আসানসোল উত্তর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে আসানসোল উত্তর থানার পুলিশ একটি মামলা করে। অনিচ্ছাকৃত খুন সহ তিনটি ধারায় একটি এফআইআর হয়। তাতে জিতেন্দ্র তেওয়ারি, চৈতালি তেওয়ারি সহ নির্দিষ্ট করে ১০ জনের নাম ছিল। এখানো পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়েছে ৬ জনকে।