আসানসোল: দুর্গাপুরের সৃজনী হলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে দুই বর্ধমানের প্রশাসনিক বৈঠকে বার্নপুরের দামোদরের ওপর সেতু তৈরির দাবি জানানো হয়েছিল ব্যবসায়ী ও বণিকসভা সংগঠনের পক্ষ থেকে। পত্রপাঠ সেই দাবি নাকচ করে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন বার্নপুরে দামোদর নদীর ওপর সেতু তৈরি করবে না রাজ্য সরকার। তা তৈরি করতে হবে কেন্দ্রীয় সরকারকে। তারপর থেকেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপার উতোর। দুই বর্ধমান ও বাঁকুড়া জেলার দামোদর বিহারীনাথ সেতুবন্ধন কমিটির পক্ষ থেকে জোরদার আন্দোলনের ডাক দেওয়া হল এবার।
সেতুবন্ধন কমিটির অভিযোগ, এই সেতুটি রাজ্যের পূর্ত দফতরের তৈরি করার কথা ছিল। সেরকমই আশ্বাস দিয়েছিলেন পূর্তমন্ত্রী। সেতু তৈরির ডেমোগ্রাফিক সার্ভে হয়েও লগিয়েছিল। তারপরও কেন মুখ্যমন্ত্রী পাকা সেতুর দাবি নাকচ করে দিলেন, তা ভেবে কূলকিনারা পাচ্ছেন না দামোদরের দুই পারের মানুষ। এই ঘটনায় তাঁরা হতাশ এবং অবাকও। মুখ্যমন্ত্রী ওই প্রশাসনিক সভায় সরাসরি বলেছেন, ‘দামোদরের ওপর সেতু নির্মাণ করবে না রাজ্য। এটা কেন্দ্রের ব্যাপার, কেন্দ্র তৈরি করুক ওই সেতু।’ স্বাভাবিক ভাবেই মানুষের মধ্যে হতাশা তৈরি হয়েছে।
অন্যদিকে, আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পালও এই ইস্যুতে সরব হয়েছেন। গত কয়েক বছর ধরে পশ্চিম বর্ধমান, পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ার মানুষের দাবি ছিল, দামোদরের ওপর স্থায়ী সেতু তৈরি করতে হবে। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের পর অগ্নিমিত্রা আক্রমণ শানিয়েছেন রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে। তিনি জানিয়েছেন, দামোদরের স্থায়ী সেতু তৈরির ব্যাপারে দিল্লিতে কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রী নীতীন গড়করির কাছে তিনি গিয়েছিলেন। কেন্দ্রীয়মন্ত্রী তাঁকে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ন্যাশনাল হাইওয়ে বা জাতীয় সড়কের ওপর সেতু তৈরি হলে তা কেন্দ্র তৈরি করে আর রাজ্য সড়কের ওপর সেতু তৈরি করে রাজ্য।
সে ক্ষেত্রে বার্নপুরের দামোদরের ওপর পাকা সেতু কেন্দ্রের এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে না বলেই দাবি অগ্নিমিত্রার। তিনি আরও জানান, রাজ্যের পূর্ত দফতরের মন্ত্রী মলয় ঘটককে সেতু তৈরির জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি। তখনই বিধায়ককে ও সেতুবন্ধন কমিটিকে রাজ্যের পূর্তমন্ত্রী আশ্বাস দিয়ে জানিয়েছিলেন, রাজ্য সরকার এই সেতু তৈরির পরিকল্পনা করছে। কিন্তু মলয় ঘটককে পাশে বসিয়েই মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছেন, সেতু তৈরি করবে কেন্দ্র। তাতে হতবাক এলাকার মানুষ।
বর্তমানে বার্নপুরে নেহরু পার্কের কাছে নড়বড়ে একটি বাঁশের সেতু নদী পারাপারের একমাত্র ভরসা। বর্ষাকালে দামোদরে জল বেড়ে গেলে এই সেতু ভেসে যায়। তখন অন্য দিক দিয়ে ঘুরে মানুষকে যেতে হয়।