দুর্গাপুর : কাজ ফেলে রাখা যাবে না। চটপট কাজ করে ফেলতে হবে। আজ দুর্গাপুরের সৃজনী প্রেক্ষাগৃহে দুই বর্ধমান জেলার প্রশাসনিক বৈঠকে এই নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। কারণ যে কোনও দিন পঞ্চায়েতের ভোট ঘোষণা হতে পারে। আর কাজ না হলে কী হবে, সেকথাও নিজেই জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলে দিলেন, ভোট ঘোষণার আগে কাজ না হলে পঞ্চায়েতে বসে থাকতে হবে। ললিপপ খেতে হবে।
আজ দুই বর্ধমান জেলার প্রশাসনিক বৈঠকে একশো দিনের কাজ ও প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা নিয়ে কেন্দ্রকে আক্রমণ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, গত ৬ মাস ধরে একশো দিনের কাজের টাকা দিচ্ছে না কেন্দ্র। কিন্তু, ১৫ দিনের মধ্যে শ্রমিকদের টাকা পাওয়ার কথা। টাকা না পাওয়া নিয়ে তিনি বলেন, “অনেকে বলছেন নামের সংকটের জন্য টাকা দিচ্ছে না কেন্দ্র। কিন্তু, একশো দিনের কাজে নামের সংকট কোথায়। সব জায়গায় তো একই নামে কাজ হয়।” আর বাংলার আবাস যোজনা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “রাজস্থানে স্থানীয় নামে হতে পারে, গুজরাটের বাড়ি সেখানকার নামে হতে পারে। তাহলে বাংলার আবাস বাংলার নামে হতেই পারে। এই নিয়ে আমি দিল্লিতে গিয়ে কথা বলব।”
এরপরই তিনি বলেন, “কোন অপরাধে অপরাধী করা হল। একশো দিনের কাজ ও আবাস যোজনায় তো টাকা আমরাও দিই।” কেন্দ্রের টাকা না পেলেও গ্রামীণ রাস্তা তৈরির কাজ ফেলে রাখা যাবে না বলে জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। জেলা পরিষদ ও পঞ্চায়েত সমিতিকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, “গ্রামীণ রাস্তার টাকা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জেলা পরিষদ ও পঞ্চায়েত সমিতি যে টাকা পায়, আপনাদের কাজের মধ্যে গ্রামীণ রাস্তা রয়েছে। এখন শুধু রাস্তাটা করুন। অন্য দফতর আপনাদের বাকি কাজ করে দেবে।” জেলা পরিষদ ও পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যদের মমতা বলেন, “গ্রামীণ রাস্তা করলে সেই কাজটা অনেক চোখে পড়বে। যে টাকা পান, তার ৫০ শতাংশ টাকায় রাস্তা করুন। বাকি টাকায় অন্য কাজ করুন। গ্রামীণ রাস্তা খারাপ থাকলে কেউ ভোট দেবে না। দরকার হলে নিজে ইট বইবেন। আমি একবার ইট বয়ে গ্রামের রাস্তা করিয়েছি। দরকার হলে আমাকে ডাকবেন। আমার এ গুলো করতে ভাল লাগে।” দলের নেতাদের সতর্ক করে দিয়ে মমতা বলেন, “চটপট কাজগুলো করে দিন। না হলে পঞ্চায়েতে বসেই থাকবেন, ললিপপ খাবেন। যে কোনও দিন পঞ্চায়েতে ভোট ঘোষণা হতে পারে।”
২০১৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচন হয়েছিল। ২০২৩ সালে ফের পঞ্চায়েত ভোট রয়েছে। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে শাসকদলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে সরব হয়েছিল বিরোধীরা। ওয়াকিবহাল মহল বলছে, ২০২৩ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে তাই এখন থেকে দলের নেতাদের সতর্ক করে দিচ্ছেন মমতা। নেতাদের বুঝিয়ে দিলেন, এখনই কাজ না করলে পঞ্চায়েতে দলের ফলাফলে তার প্রভাব পড়বে।