Raniganj: ‘মাঠে গেলে গরু ঝলসে যায়’, ‘মৃত্যুপুরী’ রানিগঞ্জের ভয়াবহ বর্ণনা এলাকাবাসীদের

TV9 Bangla Digital | Edited By: সোমনাথ মিত্র

Jan 18, 2023 | 3:57 PM

বাউলহির গ্রাম। যে গ্রামের মাঠের পর মাঠে ইতিউতি চওড়া ফাটল। ফাটলের হাঁ থেকে ক্রমাগত বের হচ্ছে বিষাক্ত ধোঁয়া। লেলিহান আগুনের শিখা। ধোঁয়ায় ঢেকে যাচ্ছে গোটা এলাকা

Raniganj: ‘মাঠে গেলে গরু ঝলসে যায়’, ‘মৃত্যুপুরী’ রানিগঞ্জের ভয়াবহ বর্ণনা এলাকাবাসীদের
নিজস্ব চিত্র

Follow Us

রানিগঞ্জ: বাংলাতেও ‘জোশীমঠ’? খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই জল্পনা উস্কে দিয়েছেন। মঙ্গলবার তিনি বলেছেন, জোশীমঠের মতো পরিস্থিতি হতে পারে রানিগঞ্জেও। মৃত্যু হতে পারে কমপক্ষে ২০ হাজার মানুষের। কার্যত কেন্দ্রের কোর্টে বল ঠেলে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, গত ১০ বছর লড়াই করছি কেন্দ্রের সঙ্গে। টাকা দেওয়ার কথা ছিল মেলেনি। তাদের ঘর না করে দিলে, ধসে ৩০ হাজার মানুষ প্রভাবিত হতে পারেন। মুখ্যমন্ত্রীর আশঙ্কা কতটা সত্যি? কী পরিস্থিতি ধস কবলিত রানিগঞ্জের? সরেজমিনে ঘুরে দেখল TV9 বাংলা। ফুটে উঠল মুখ্যমন্ত্রীর আশঙ্কার চেয়েও করুণ চিত্র।

 

বাউলহির গ্রাম। যে গ্রামের মাঠের পর মাঠে ইতিউতি চওড়া ফাটল। ফাটলের হাঁ থেকে ক্রমাগত বের হচ্ছে বিষাক্ত ধোঁয়া। লেলিহান আগুনের শিখা। ধোঁয়ায় ঢেকে যাচ্ছে গোটা এলাকা। সেখানে বিপজ্জনক সাইনবোর্ড লাগিয়েছে ইসিএল কর্তৃপক্ষ। তাতেই কি সমস্যা সমাধান হয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের? এক বাসিন্দা বলেন, ২০১৭ সালে ভয়ানক ধস হয়েছিল। ফের ২০২২-এ নভেম্বরে ধস নামে। ভয়ে দিন কাটাচ্ছেন গ্রামের লোকেরা। আর এক বাসিন্দার কথায়, ‘ভয়ে কারোর রাতে ঘুম হয় না ভাল করে। কখন পরিবার নিয়ে ধসে মাটির তলায় চলে যাব, জানি না।’ গ্রামবাসীদের দাবি, এই মাঠে তাদের অনেক গরু নিখোঁজ হয়ে গিয়েছে। মাঝে মাঝে আগুনে ঝলসে গিয়েছে গরু। বিষাক্ত ধোঁয়ায় অনেকের শরীর খারাপও হচ্ছে। বিঘের পর বিঘে জমি গ্রামবাসীদের হলেও চাষের যোগ্য নয় বলেও অভিযোগ তাঁদের। এ নিয়ে একাধিক বার ইএসএল কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হলেও, কোন সুরাহা মেলেনি বলে দাবি গ্রামবাসীদের।

 

রানিগঞ্জের এগারায় ঢুঁ মেরে দেখা গেল কম বেশি বাড়িতে ফাটল ধরেছে। আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন গ্রামবাসীরা। এক ব্যক্তি বলেন, “কখন যে ধস হবে সেই আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি আমরা। ইএসএল-কে বললেও কোনও কাজ হচ্ছে না।” এক মহিলা বাসিন্দার কথায়, “ধোঁয়ায় ঢেকে চারদিক। অসুস্থ হয়ে পড়ছে অনেকে। শ্বাসকষ্ট শুরু হচ্ছে অনেকের। বাড়িতে ফাটল ধরেছে, কোথাও থাকব আমরা, বুঝতে পারছি না।” বর্ষাকালে আরও বেশি ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে রানিগঞ্জের এ সব জায়গা। স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, “বর্ষাকালে আরও বেশি ভয়। এই সময় ধস বেশি হয়। এত বছর ধরে রয়েছি। কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।”

 

গ্রাউন্ড জ়িরো থেকে একের পর এক খবর TV9 বাংলা সম্প্রচার করার পরই নড়েচড়ে বসে ইসিএল। জানা গিয়েছে, বাউলহির গ্রামের বাসিন্দাদের ফোন করে জানতে চাওয়া পরিস্থিতি। তাদের জমির দাগ-খতিয়ানের তালিকা জমা দিতে বলে ইসিএল। যদিও গ্রামবাসীদের অভিযোগ, ইসিএল-এর এই তৎপরতা প্রথম নয়। এর আগেও এমন তালিকা চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি। ‘ম়ৃত্যুপুরী’ থেকে রেহাই নেই তাঁদের।

Next Article
Raniganj Colliery Situation: রানিগঞ্জের মাঠে মাঠে যেন ‘নরকের দরজা’, ফাটল দিয়ে বেরচ্ছে তীব্র উত্তাপ, সাদা ধোঁয়া
Anubrata Mondal: ১৪ দিনের জেল হেফাজতের ইতি, আজ ফের আদালতে হাজিরা দেবেন কেষ্ট মণ্ডল