আসানসোল: এ এক অভূতপূর্ব দৃশ্য। যুদ্ধের দেশ থেকে বাড়ি ফিরেছে মেয়ে। তাই মেয়ের জন্য রইল গ্র্যান্ড ওয়েলকাম। একেবারে ব্যান্ড পার্টি, তাসা, আতসবাজি নিয়ে রাস্তায় নেমে অভ্যর্থনা জানাল পরিচিত-পরিজনরা। ইউক্রেন থেকে আসানসোলের ওকে রোডের বাড়িতে ফিরেছেন সালেহিন সাজিদ। ইউক্রেনের খারকিভে আটকে ছিলেন তিনি। প্রায় ২ সপ্তাহ ধরে এই যুদ্ধ পরিস্থিতি নিজের চোখে দেখেছেন তিনি। পরিবারের লোকজনও চিন্তায় দু’ চোখের পাতা এক করতে পারেননি। ভারত সরকারের সবরকম প্রচেষ্টায় সালেহিন বাড়ি ফিরতেই তাঁকে অভ্যর্থনা জানানো হল একেবারে অন্যভাবে। গলা ভর্তি ফুলের মালা, হাতে গোলাপ। পরিবারের লোকের সঙ্গে ঘরের চৌকাঠে পা রাখলেন ইউক্রেনের এই ছাত্রী। পিছনে প্রায় ১০০ মানুষ। উচ্চগ্রামে বাজছে বাজনা।
সালেহিন সাজিদ বলেন, “২০ কিলোমিটার পথ পার করে তারপর সীমান্তে পৌঁছাই। মাঝে যথেষ্ট সমস্যা হয়েছিল। ট্রেনে উঠতেই পারছিলাম না। অনেক কষ্ট করে সীমান্তে যেতে হয়। ভারতীয় দূতাবাস খুবই সহযোগিতা করেছে। তারাই আমাদের নির্বিঘ্নে দেশে পৌঁছনোর ব্যবস্থা করে দিয়েছে। আমাদের অনেক বন্ধুই ইতিমধ্যে দেশে ফিরে এসেছে। অবশেষে আমিও ফিরলাম। খুবই ভাল লাগছে। নিশ্চিন্ত লাগছে।”
সালেহিন জানান, খারকিভে ছিলেন তিনি। এই ক’টা দিন খুবই চিন্তায় ছিলেন। এমনও মনে হচ্ছিল যেন শ্বাস নেওয়ার সময়টুকুও পাচ্ছেন না। বাইরে অনবরত বোমাবর্ষণ। যুদ্ধের সাইরেন দিন-রাত এক করে দিয়েছে। তবে যুদ্ধ থামলে আবারও ইউক্রেনেই ফিরতে চান সালেহিন। তাঁর কথায়, “যেতে তো হবেই। আমার কোর্স এখনও শেষ হয়নি। পড়াশোনার জন্য ফিরতেই হবে সে দেশে।”
ইউক্রেনের যুদ্ধপরিস্থিতি যতই ভয়ঙ্কর হচ্ছিল, ততই চিন্তা বাড়ছিল সালেহিনের পরিবারের। মেয়েকে ফেরানো নিয়ে রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছিল বাড়ির লোকজনের। বাড়ির সকলের একটাই প্রার্থনা ছিল, মেয়ে যেন নির্বিঘ্নে ঘরে ফিরে আসে। রবিবার সন্ধ্যায় অবশেষে ঘরে ফিরলেন সালেহিন।