আসানসোল (পশ্চিম বর্ধমান): সারদা চিটফান্ড কেলেঙ্কারিতে নাম জড়িয়েছিল সুদীপ্ত সেনের। পশ্চিম বর্ধমান জেলার চিত্তরঞ্জন সহ আসানসোলের মোট পাঁচটি থানায় সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পাঁচটি মামলা দায়ের করা হয়। সেই মামলাগুলিতেই সোমবার আসানসোল আদালতে হাজিরা দিলেন জেলে থাকা সুদীপ্ত সেন।
এ দিন, পাঁচটি মামলায় বেলবন্ড জমা দেন সুদীপ্ত। তার মধ্যে চিত্তরঞ্জন থানার একটি মামলায় স্পেশাল সরকারি আইনজীবী বা পিপি হিসাবে ছিলেন তাপস উকিল।
জানা গিয়েছে, ২০১৩ সালের ২৩ ডিসেম্বর আসানসোল আদালতে চলা এই মামলাগুলিতে সুদীপ্ত সেনের জামিন হয়েছিল। কিন্তু তিনি সেই সময় বেলবন্ড জমা দিতে পারেননি। সোমবার আসানসোলের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম মনোজ কুমার প্রসাদের এজলাসে সুদীপ্ত নিজে সওয়াল করেন। তিনি বিচারককে বলেন, ‘আমার আর্থিক অবস্থা ঠিক নেই। তাই আমাকে পিআর বন্ড দেওয়া হোক।’ এরপর বিচারক সুদীপ্ত সেনের আবেদন মতো ডিএলএস বা ডিস্ট্রিক্ট লিগ্যাল সার্ভিস থেকে আইনজীবী এনামুল হককে নিয়োগ করেন। তিনি সুদীপ্ত সেনের হয়ে বেল বন্ডের আবেদন করেন।
এ দিন সুদীপ্ত সেন এজলাসে বলেন, ‘আমার নামে মোট ২৮৫ টি মামলায় হয়েছিল। ২০১৪ সালে সুপ্রিম কোর্ট একটি রায়ে বলে সব মামলা যেন এক জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেই নির্দেশ মত ১৩০ টি মামলা এক জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আসানসোলের এই পাঁচটি মামলাকেও সেখানে পাঠানো হোক।’ এরপর বিচারক বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের সেই রায় দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’ এ দিনের হাজিরার পরে আবারও সুদীপ্ত সেনকে প্রেসিডেন্সি জেলে ফিরে নিয়ে যাওয়া হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ২৩ এপ্রিল কাশ্মীরের সোনমার্গ থেকে সুদীপ্ত সেনকে গ্রেফতার করা হয়। একইসঙ্গে গ্রেফতার করা হয় তাঁর সঙ্গী দেবযানী মুখোপাধ্যায়কে। পরের বছর জুন মাসে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তদন্তে নামে সিবিআই। অভিযুক্ত সুদীপ্ত, দেবযানী-সহ ছ’জনকে তাদের হেফাজতে নেয়। আদালতের নির্দেশে সিবিআই অভিযুক্তদের নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জেরা শুরু করে। সে বছরই অক্টোবর মাসে সারদা কেলেঙ্কারির তদন্তে নামার ৮৪ দিন পর প্রথম চার্জশিট পেশ করে সিবিআই। এরপর চলে দীর্ঘ মামলা মোকদ্দমা।
এরপর গত ৬ এপ্রিল জেল হেফাজত থেকে মুক্তির স্বাদ পান সুদীপ্ত ও রোজভ্যালির কর্তা গৌতম কুণ্ডু।কলকাতার বিচার ভবনের সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের (PMLA Court) বিচারক সৈয়দ মাসুদ হোসেনের কাছে তাঁরা আবেদন করেন সাজার মেয়াদ পার করেও তাঁরা জেলে রয়েছেন। তাঁদের সেই আবেদনে সাড়া দেন বিচারক।