দুর্গাপুর: কল্যাণী এবং আসানসোলের মতো দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলেও রুগ্ন অবস্থা বিশ্বকর্মা পুজোর। পশ্চিম বর্ধমানের এই শিল্প শহর দুর্গাপুরে রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানার সঙ্গে সঙ্গে ছিল রাজ্য সরকারের বেশ কয়েকটি কারখানা। এ ছাড়াও বেসরকারি সংস্থার ছোট-বড় কারখানাও ছিল। এই কারখানা যখন চালু ছিল তখন সেখানকার শ্রমিক ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা বিশ্বকর্মা পুজোয় মেতে উঠত। এই পুজোয় বড় বড় মন্ডপ হত। আলো দিয়ে সাজানো হত সমস্ত এলাকা। তিন দিন ধরে চলত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সঙ্গে খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা থাকতই। কিন্তু এ সবই এখন অতীত।
গত কয়েক বছর ধরেই সেই চেনা ছবির দেখা মেলে না দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে। বহু কারখানায় উৎপাদন বন্ধ। অনেক কারখানা চিরতরে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বিশ্বকর্মা পুজো ঘিরে আর আগের মতো আনন্দে মাতেন না সেখানকার শ্রমিরা। শ্রমিক মহল্লায় সেই উৎসবের ছবিটা আর দেখা যায় না। হাতে গোনা কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা এখনও বিশ্বকর্মা পুজোর আয়োজন করে। তবে সেই জৌলুশ আর নেই। শ্রমিকদের কথাতেও ধরা পড়েছে সেই হতাশা।
হিন্দুস্তান ফারটিলাইজার, এমএএমসি এবং বিওজিএল-র মতো রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বন্ধ হয়েছে দুর্গাপুরে। রাজ্য সরকারি সংস্থা দুর্গাপুর কেমিক্যালের গেটেও ঝুলেছে তালা। স্টিল অফরিটি অফ ইন্ডিয়া লিমিটেডের দুটি কারখানায় শ্রমিক সংখ্যা কমে হয়েছে চার ভাগের এক ভাগ। মালিকানা বদলের পরে এখনও কর্মহীন এলিগেন্ট ইস্পাতের বহু কর্মী। এই রকম আবহে দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে দেখা গেল নিময়রক্ষার বিশ্বকর্মা পুজো।
সূর্যনারায়ণ চ্যাটার্জি নামের এক শ্রমিক বলেছেন, “আগের মতো পরিস্থিতি আর নেই। কাজের পরিমাণ কমেছে। বিশ্বকর্মা পুজো এখনও করছি। আশা করছি আগামী দিনে ভাল পরিস্থিতি হলে পুজো আরও বড় করে করতে পারব।” হিন্দুস্তান ফার্জিলাইজারের বিশ্বকর্মা পুজো নিয়ে পাপ্পু সিং নামের এক স্থানীয় বলেছেন, “আগে এখানে এখানে বড় করে পুজো হত। কয়েক দিন ধরে গমগম করত এলাকা। এখন আর কিছুই নেই। কারখানা বন্ধ, পুজোও বন্ধ।” মিঠুন ঘোষ নামের এক শ্রমিক বলেছেন, “কারখানার অবস্থা ভাল নয়। ছোট করে পুজো করছি। আগে বড় পুজো হত। লোকজন খাওয়ানো হত।”