WB Flood Situation: আবহাওয়া অনুকূল, জল ছাড়ার পরিমাণ এক ধাক্কায় প্রায় ৮হাজার কিউসেক কমাল দুর্গাপুর ব্যারেজ

Durgapur Barrage: দুর্গাপুর ব্যারেজ সূত্রে খবর, নতুন করে বৃষ্টি না হওয়ায়  দফায় দফায় কমানো হচ্ছে জল ছাড়ার পরিমাণ। শনিবার  সন্ধেয় জল ছাড়া হচ্ছিল ১,২৬,২০০ কিউসেক।

WB Flood Situation: আবহাওয়া অনুকূল, জল ছাড়ার পরিমাণ এক ধাক্কায় প্রায় ৮হাজার কিউসেক কমাল দুর্গাপুর ব্যারেজ
জল ছাড়ার পরিমাণ কমাল দুর্গাপুর ব্যারেজ
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 03, 2021 | 10:09 PM

পশ্চিম বর্ধমান:  বিগত দু’দিন ধরে আর বিশেষ বৃষ্টিপাত হয়নি। আবহাওয়া প্রায় অনুকূল বলাই চলে। পরিস্থিতি বুঝে রবিবার জল ছাড়ার পরিমাণ আরও কমাল দুর্গাপুর ব্যারেজ। এদিন সকাল থেকেই জল ছাড়ার পরিমাণ কমিয়েছিল দুর্গাপুর ব্যারেজ (Durgapur Barrage)। সকালের পর একধাক্কায় প্রায় ৮ হাজার কিউসেক জল কম ছাড়া শুরু হল। সকালে এই ব্যারেজ থেকে ১লক্ষ ১২ হাজার ১০০ কিউসেক জল ছাড়া হচ্ছিল। বিকেল থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লক্ষ ৪ হাজার ৪০০ কিউসেক।

দুর্গাপুর ব্যারেজ সূত্রে খবর, নতুন করে বৃষ্টি না হওয়ায়  দফায় দফায় কমানো হচ্ছে জল ছাড়ার পরিমাণ। শনিবার  সন্ধেয় জল ছাড়া হচ্ছিল ১,২৬,২০০ কিউসেক। সেচ দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, বৃষ্টি না হলে আরও কমানো হবে জল ছাড়ার পরিমাণ।

অন্যদিকে শনিবার মাইথন (Maithon Dam) ৭০ হাজার কিউসেক জল ছাড়ার পরিকল্পনা নিয়েছে। পাঞ্চেত জল (Panchet Dam) ছাড়ছে ৫৫ হাজার কিউসেক। অর্থাৎ দু’টি ড্যাম মিলিয়ে মোট জল ছাড়া হচ্ছে ১ লক্ষ ২৫ হাজার কিউসেক। শুক্রবার মাইথনে জল ছাড়ার পরিমাণ ছিল ১ লক্ষ ১৫ হাজার কিউসেক। পাঞ্চেত জল ছেড়েছিল ৩৫ হাজার কিউসেক। মোট দেড় লক্ষ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছিল শুক্রবার।

গত কয়েকদিনের প্রবল বৃষ্টি ভাসিয়েছে দক্ষিণবঙ্গের আট জেলা। সঙ্গে ডিভিসি আর দুর্গাপুর ব্যারেজের জল ছাড়ার কারণে পুজোর মুখে মহা দুর্ভোগে হাওড়া, হুগলি, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পূর্ব বর্ধমান, বীরভূমের বিস্তীর্ণ এলাকা। হেক্টরের পর হেক্টর কৃষি জমি জলের তলায়। শনিবারই আকাশপথে বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বেরোচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন দুপুর সাড়ে ১১টা হাওড়ার ডুমুরজলা স্টেডিয়াম থেকে উড়ে যাবে মুখ্যমন্ত্রীর কপ্টার। এরপর দুপুর সাড়ে ১২টায় হুগলির আরামবাগে পৌঁছবেন তিনি।

শুক্রবারই টিভি নাইন বাংলাকে দেওয়া টেলিফোন বার্তায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ডিভিসি জল ছাড়ার ফলে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলি প্লাবিত। প্রচুর মানুষ ত্রাণশিবিরে রয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী এবারও বলেছেন, ডিভিসির কারণেই বাংলার কপালে দুর্গতি। এই পরিস্থিতি ‘ম্যান মেড’ বলেই জানিয়েছেন তিনি।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “ঝাড়খণ্ডে যেহেতু অনেক বৃষ্টি হয়েছে ওরা আমাদের না বলে রাত ৩টের সময় আসানসোলে জল ছেড়ে দেয়। এদিকে আসানসোলের বৃষ্টির পরিমাণটাও প্রায় ৩৪৫ মিলিমিটার ছিল। আগে কখনও এত বৃষ্টি হয়নি। ফলে আসানসোল পুরো ডুবে যায়। একই সঙ্গে বাঁকুড়া, পুরুলিয়াও। তার পর কাল আবার ডিভিসি ১ লক্ষ কিউসেকের উপর জল ছেড়ে দিয়েছে। সমস্যা হচ্ছে, ঝাড়খণ্ডে বৃষ্টি হলে আমাদের ফেস করতে হচ্ছে, বিহারে বৃষ্টি হলে আমাদের ফেস করতে হচ্ছে। ওরা যদি ওদের ট্যাঙ্কগুলো, ড্যামগুলো একটু পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে রাখে, তা হলে কিন্তু অনেক জল জলাধারে ধরতে পারে। মাইথন, পাঞ্চেতে তো অনেক জল ধরার ক্ষমতা। কিন্তু ওরা দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে কোনও পরিষ্কার করে না। কোনও ড্রেজিং করে না। ফলে ওদের খেসারতটা আমাদের দিতে হচ্ছে। এটা খুব অন্যায়। আমি বার বার এর প্রতিবাদ করছি। যদি বৃষ্টির জলে আমাদের বন্যা হতো আমি বুঝতাম। বৃষ্টি বেশি হচ্ছে, আমি সামলাতাম। কিন্তু বন্যাটা হচ্ছে জল ছাড়ার জন্য। ম্যান মেড ফ্লাড।”

যদিও, মুখ্যমন্ত্রীর সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে ডিভিসি। দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন স্পষ্টই জানিয়েছে, রাজ্যের নির্দেশ মেনেই জল ছাড়া হচ্ছে। রাজ্যকে অন্ধকারে রেখে কিছুই করা হচ্ছে না। তাই মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ সঠিক নয় বলেই দাবি করেছে ডিভিসি।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ম্যান মেড’ তত্ত্বকে কটাক্ষ করে কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী বলেন, “ম্যান মেড না রাজ্য সরকারের ব্যর্থতা মেড তা আমরা জানতে পারছি না। ইডি, সিবিআই-এর হাত থেকে বাঁচতে সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছেন। অথচ এত বড় একটা অন্যায়, পশ্চিমবঙ্গকে ডুবিয়ে মারার জন্য বাঁধগুলো থেকে না জানিয়ে জল ছাড়া হচ্ছে, তাতে আদালতে যাচ্ছেন না? কমপক্ষে হাইকোর্টে তো যান! তাহলে আমরা জানতে পারি এটা মানুষের তৈরি বিপদ না এটা ভগবানের তৈরি বিপদ, না এটা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ব্যর্থতার বিপদ।”

অন্যদিকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন,  “জল ছাড়ার অনেক আগেই ডিভিসির পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়েছিল। সেই চিঠি আমার কাছেও আছে।”