Coal Scam: কয়লা ব্যবসায়ী লালার চার ‘ঘনিষ্ঠের’ আরও চারদিন সিবিআই হেফাজত
CBI: গত নভেম্বরে কয়লা পাচারকাণ্ডের তদন্তে মামলা দায়ের করে সিবিআই। দফায় দফায় রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালান তদন্তকারীরা।
পশ্চিম বর্ধমান: কয়লাকাণ্ডে (Coal Scam Case) ধৃত চারজনকে আরও চারদিনের হেফাজতে নিল সিবিআই। সোমবারই ধৃতদের সাতদিনের সিবিআই হেফাজতের মেয়াদ শেষ হয়। এরপরই চারজনকে নিজাম প্যালেস থেকে সোজা আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে তোলা হয় এদিন। বিচারক ধৃতদের চারদিনের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দেয়।
গত ২৭ সেপ্টেম্বর কয়লাকাণ্ডে প্রথম গ্রেফতার করে সিবিআই। একই সঙ্গে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতদের নাম জয়দেব মণ্ডল, নারায়ণ নন্দ, নীরদ মণ্ডল ও গুরুপদ মাজি। অভিযোগ, এই চারজন অনুপ মাজি ওরফে লালার কয়লা ব্যবসার সিন্ডিকেটের দেখাশোনা করতেন। এঁদের হাত ঘুরেই একাধিক প্রভাবশালীর কাছে পৌঁছত ‘কালো’ টাকা।
অভিযোগ, শুধু সিন্ডিকেটই নয়, লালার আরও একাধিক বেআইনি ব্যবসার সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন এই চারজন। মূলত, এই ব্যবসায় কয়লা পাচারের টাকা খাটানো হতো বলে অভিযোগ। সেই ব্যবসায় ডিরেক্টর পদে নাম রয়েছে চারজনের। সিবিআই এর আগেও বহুবার জিজ্ঞাসাবাদ করেছে তাঁদের। কোনও বারই সন্তোষজনক জবাব পায়নি। অবশেষে গত মাসের শেষে গ্রেফতার করে। এরপরই আদালত সাতদিনের সিবিআই হেফাজত দেয়।
সোমবার সেই মেয়াদ শেষ হওয়ার পরই কলকাতার নিজাম প্যালেস থেকে সোজা লালার চার সঙ্গীকে আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে পেশ করে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। বিচারক জয়শ্রী বন্দ্যোপাধ্যায়ের এজলাসে সিবিআইয়ের আইনজীবী রাকেশ কুমার বলেন, ‘এই মামলার শিকড়ে পৌঁছতে হলে এই চারজনকে আরও জেরা করার প্রয়োজন আছে। কেন না মূল মাথা এখনও অধরা। এই কয়লার কারবার আসানসোল থেকে বেনারস পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। সবমিলিয়ে ১ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। অনেক বড় বড় ব্যক্তিত্ব ও প্রভাবশালী মানুষ এর পেছনে রয়েছেন। তাই চারজনকে আরও চার দিনের রিমান্ড দেওয়া হোক।’
সিবিআইয়ের আইনজীবীর পাল্টা জবাবে জয়দেব মণ্ডল-সহ ধৃত চারজনের আইনজীবী শেখর কুণ্ডু ফের হেফাজতে নেওয়ার বিরোধিতা করে বলেন, গত সাতদিন রিমান্ডে নিয়ে জেরা করে তার মক্কেলদের কাছ থেকে সিবিআই কিছুই পায়নি। আর পেয়ে থাকলে কী পেয়েছে, তার কোনও কিছু আদালতকে সিবিআই দিতে পারেনি। এ ছাড়াও জয়দেব মণ্ডল সহ চারজন শারীরিকভাবে অসুস্থ।
শেখর কুণ্ডু এজলাসে বলেন, সিবিআই যখন ডেকেছে, তখনই তাঁর মক্কেলরা গিয়ে নিজেদের বক্তব্য জানিয়েছেন। তাই তাঁদের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করা হোক। কিন্তু দুই পক্ষের সওয়াল-জবাবের শেষে বিচারক চারজনেরই জামিন নাকচ করে সিবিআইয়ের আবেদন মতো আরও চারদিনের সিবিআই হেফাজতের আবেদন মঞ্জুর করেন। আগামী ৮ অক্টোবর আবার চারজনকে আসানসোলের সিবিআই আদালতে তোলা হবে বলে।
২০২০ সালের ২৭ নভেম্বর সিবিআই অবৈধ কয়লা খনি, কয়লা চুরি ও বেআইনি কয়লা পাচারের অভিযোগে পুরুলিয়ার বাসিন্দা অনুপ মাজি ওরফে লালা ও ইসিএলের দু’জন জেনারেল ম্যানেজার ও তিন নিরাপত্তা আধিকারিকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। এই মামলায় পরে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সারাদেশে প্রায় ৩০টি জায়গায় তল্লাশি চালায়।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর আসানসোলে ইসিএলের সাতগ্রাম এরিয়ার জেনারেল ম্যানেজারের বাড়িতে এবং অফিসে সিবিআই অভিযানে নামে। এখানেই শেষ নয়, সিবিআই তদন্ত শুরু করার পরে এই কাণ্ডে ইডিও আলাদা করে তদন্ত শুরু করে।