আগামী সাতদিন CBI’র হেফাজতে অনুব্রতর দেহরক্ষী, এদিন শুনানিপর্বে উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য…

CBI: আদালত এই মামলার তদন্তকারী কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার আইও (IO) বা তদন্তকারী অফিসারকে শোকজ করে।

আগামী সাতদিন CBI'র হেফাজতে অনুব্রতর দেহরক্ষী, এদিন শুনানিপর্বে উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য...
সেহেগল হোসেন অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষী।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 10, 2022 | 8:20 PM

পশ্চিম বর্ধমান: গরুপাচার মামলায় সাতদিনের সিবিআই হেফাজত হল সেহেগল হোসেনের। বীরভূম তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষী তিনি। বৃহস্পতিবারই দীর্ঘ জেরার পর তাঁকে গ্রেফতার করে সিবিআই। কলকাতার নিজাম প্যালেস থেকে গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। এরপর শুক্রবার সেহেগলকে নিয়ে যাওয়া হয় আসানসোলে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে। শুক্রবার বিকেলে এই মামলার দু’পক্ষের আইনজীবীর সওয়াল-জবাব শেষে সিবিআই আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী সেহেগলের জামিন নাকচ করে দেন। তবে এদিন অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ মোড় নেয় সেহেগল হোসেনের শুনানিপর্ব। আদালত এই মামলার তদন্তকারী কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার আইও (IO) বা তদন্তকারী অফিসারকে শোকজ করে। আইনের নির্দিষ্ট ধারায় নোটিস না পাঠিয়ে সেহেগলকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে এদিন জানান সেহেগলের আইনজীবী। কেন তা করা হল, কারণ দর্শানোর নোটিস দিয়ে তা জানতে চেয়েছেন বিচারপতি। ১৭ জুন এই মামলার পরবর্তী শুনানি। এদিনই আইওকে এই শোকজের জবাব দিতে হবে।

এদিন সেহেগলের শুনানি ঘিরে কড়া নিরাপত্তায় ঘেরা ছিল আদালতচত্বর। প্রচুর সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন ছিল। এরইমধ্যে দু’টি গাড়ি সেহেগলকে নিয়ে আদালতে পৌঁছয়। সরাসরি তোলা হয় বিচারক রাজেশ চক্রবর্তীর এজলাসে। কিছুটা আগেই আসানসোল আদালতে পৌঁছে যান সেহেগলের আইনজীবী অনির্বাণ গুহঠাকুরতা ও সঞ্জীব কুমার দাঁ। এদিন বেলা ১টা নাগাদ আসানসোল সিবিআই আদালতে তোলা হয় সেহেগল হোসেনকে। তবে আসানসোল আদালতে বার অ্যাসোসিয়েশনের কর্মবিরতি চলার কারণে শুনানি শুরু হতে কিছুটা দেরি হয়। কর্মবিরতি চলায় বার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা শুনানিতে বাধা দেন। কিন্তু বিচারক স্পষ্ট জানিয়ে দেন, তা হতে পারে না।

শেষ পর্যন্ত বিকেল তিনটেয় বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রাজেশ ওরফে বান্টি তিওয়ারির নেতৃত্বে বার অ্যাসোসিয়েশনের একটি দল শুনানিতে সম্মতি দেন। শুরু হয় শুনানি। শুরুতেই সেহেগলের দুই আইনজীবী এই গ্রেফতারি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। অনির্বাণ গুহঠাকুরতা এজলাসে বলেন, “এই গ্রেফতার বেআইনি। এক্ষেত্রে একজনের মৌলিক অধিকার হরণ করা হয়েছে। ১৬০ নম্বর ধারায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোটিস দিয়ে ডেকে পাঠিয়ে মক্কেলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এটা করা যায় না।” এ প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের একটি মামলার উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, কাউকে গ্রেফতার করতে হলে, সিআরপিসির ৪১ নম্বর ধারায় নোটিস দিতে হয়। এটা বাধ্যতামূলক। কিন্তু সেহেগল গ্রেফতারির ক্ষেত্রে তা করা হয়নি।

সিবিআইয়ের আইনজীবী রাকেশ কুমারের বক্তব্য ছিল, আইন মেনেই সবটা হয়েছে। কিন্তু তাঁকে বিচারকের বেশ কিছু প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়। মামলার আইও বিচারকের প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারেননি বলে আদালত সূত্রের খবর। শেষ পর্যন্ত এক ঘণ্টারও বেশি সময় সওয়াল জবাব শেষে বিচারক সেহেগলের জামিন নাকচ করে দেন। সিবিআই তাঁকে ১৪ দিনের হেফাজতে চেয়ে আদালতে আবেদন জানান। আদালত সাতদিনের সিবিআই হেফাজত দেন।