Lakshmir Bhandar: লক্ষ্মীপুজোর আগে ‘লক্ষ্মীলাভ’, প্রথম টাকা পেয়ে আত্মহারা ওঁরা
Lakshmi Puja: তাঁদের কামনা, সরকারের এই লক্ষ্মী ভাণ্ডার যেন অটুট থাকুক। রাজ্যেরও লক্ষ্মী লাভ হোক। তাই লক্ষ্মীপুজো করে নিজেদের তো বটেই, রাজ্যেরও শ্রীবৃদ্ধি কামনায় ব্রতী হয়েছেন আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া ওই মহিলারা।
আসানসোল: ওঁরা কেউ দিনমজুরের কাজ করেন। কেউবা সেলাই দিদিমণি। কেউ আবার করেন খাবারের হোম ডেলিভারির কাজ। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর নানা কাজে তাঁরা সর্বদা ব্যস্ত। স্বামীরা সবাই দিনমজুর। কোনওরকম চলছে অভাবের সংসার। পাকা বাড়ি কারওর-ই নেই। তাঁরাই এবার বড় করে আয়োজন করেছেন লক্ষ্মীপুজোর। হঠাৎ কেন এমন আয়োজন? সৌজন্যে রাজ্য সরকারের লক্ষ্মীর ভাণ্ডার (Lakshmir Bhandar) প্রকল্প। আসানসোলে (Asansole) কুলটির মিঠানির মা সারদা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা তাই মেতেছেন লক্ষ্মীপুজোয়।
এঁরা সবাই পিছিয়ে পড়া জনজাতিভুক্ত। রাজ্য সরকারের নয়া প্রকল্পে প্রথমবার একসঙ্গে ২ হাজার টাকা করে পেয়েছেন সবাই। এই লক্ষ্মীলাভ তাঁদের কাছে ছিল বিস্ময়ের। ভাবতে পারেননি এমনটাও হতে পারে। তাই পাড়ার মহিলারা একত্রিত হয়ে আয়োজন করলেন লক্ষ্মীপুজোর। কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর আয়োজনে এখন দম ফেলার ফুরসৎ নেই কারও। নিজেদের কাজ সামলেই হইই ই করে তাঁরা নেমে পড়েছেন পুজোর আয়োজনে।
লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে ওঁরা পেয়েছেন প্রথমবার। তাই দিয়ে এবার পুজো করতে চান সবাই। যা ভাবা, তাই কাজ। এই প্রথমবার লক্ষ্মীপুজো করতে একত্রিত হলেন মা সারদা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা। বাসন্তী, মালা, ঋনা, সুষমা তাঁদের আর্থিক স্বাচ্ছন্দ নেই। তবে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকায় কিছুটা হলেও এখন মুখে হাসি ফুটেছে ওঁদের। মা লক্ষ্মী নামাঙ্কিত যখন সরকারি প্রকল্প বা পরিষেবা, তাই ছোট করে হলেও কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর আয়োজন করেছেন কুলটির মিঠানির মা সারদা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা।
গ্রামের মুচিকুলিতে দেখা গেল মাটির বাড়ির দাওয়ায় চলে এসেছে লক্ষ্মী প্রতিমা। সবে মাত্র আম-পল্লব টাঙানো হচ্ছে। পুজোর আয়োজনও প্রায় প্রায় শেষের মুখে। বুধবারই তো পুজো। তার আগে থেকে মহিলাদের উৎসাহ চোখে পড়ার মতো। তাঁদের মনে খুশির ঢেউ। কারণ, এবার অ্যাকাউন্টে হাজার টাকা করে অন্তত দু দু’বার দু’ হাজার টাকা করে পেয়েছেন তাঁরা। সেই টাকা পেয়েই তাঁরা সামান্য টাকা অনুদান দিয়ে পুজোর আয়োজন করেছেন। তাঁদের কামনা, সরকারের এই লক্ষ্মী ভাণ্ডার যেন অটুট থাকুক। রাজ্যেরও লক্ষ্মী লাভ হোক। তাই লক্ষ্মীপুজো করে নিজেদের তো বটেই, রাজ্যেরও শ্রীবৃদ্ধি কামনায় ব্রতী হয়েছেন আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া ওই মহিলারা।
উল্লেখ্য, গত ১৬ অগস্ট থেকে এ রাজ্যে শুরু হয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মস্তিষ্কপ্রসূত লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প। ১৬ অগস্ট থেকে দুয়ারে সরকার প্রকল্প পুনরায় চালু হয়। সেখানেই শুরু হয় লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প। সেপ্টেম্বর থেকে এই প্রকল্পের সুবিধা পেতে শুরু করেছেন রাজ্যের মহিলারা। প্রতিমাসে সরকারের ঘর থেকে সরাসরি আবেদনকারী মহিলাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে চলে এসেছে প্রকল্পের টাকা।
২৫ থেকে শুরু করে ৬০ বছর বয়স পর্যন্ত সমস্ত মহিলারা এই প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন। মূলত তপশিলি জাতি-উপজাতি মহিলাদের জন্য মাসে ১০০০ টাকা ও সাধারণ মহিলাদের জন্য মাসে ৫০০ টাকা করে তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা দিচ্ছে রাজ্য সরকার। তবে পুজো উপলক্ষে এবার ২ মাসের টাকা একসঙ্গে দেওয়া হয়েছে। তাতেই খুশির রেশ এই মহিলাদের মনে।
আরও পড়ুন: Khardah: ৪৪ বছর ধরে শাসক দলের প্রার্থী ‘বহিরাগত’! সাংগঠনিক দুর্বলতা, নাকি অন্য কিছু?