‘আমি কি অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে বাড়ি যাব?’, হাসপাতালের ‘ভুলে’ কয়েক সেকেণ্ডে মৃত্যু সদ্যোজাতর, হাহাকার বাবার!

Child Death: মৃতের পরিবারের অভিযোগ, শনিবার রাতে প্রসবযন্ত্রণা নিয়ে খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি হন সরিনা বিবি। রবিবার সকালে একটি পুত্রসন্তান প্রসব করেন তিনি। কিন্তু, তারপরেই চিকিত্‍সকেরা জানান, ওই শিশুর শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি রয়েছে।

'আমি কি অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে বাড়ি যাব?', হাসপাতালের 'ভুলে' কয়েক সেকেণ্ডে মৃত্যু সদ্যোজাতর, হাহাকার বাবার!
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 08, 2021 | 5:34 PM

পশ্চিম মেদিনীপুর: অক্সিজেনের অভাবে (Oxygen Crisis) সদ্যজাত শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ খড়গপুর  মহকুমা হাসপাতালে। অভিযোগ, হাসপাতালের গাফিলতির জেরেই প্রাণ গিয়েছে সদ্যোজাতর। ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র উত্তেজনা হাসপাতাল চত্বরে।

মৃতের পরিবারের অভিযোগ, শনিবার রাতে প্রসবযন্ত্রণা নিয়ে খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি হন সরিনা বিবি। রবিবার সকালে একটি পুত্রসন্তান প্রসব করেন তিনি। কিন্তু, তারপরেই চিকিত্‍সকেরা জানান, ওই শিশুর শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি রয়েছে। এরপর হাসপাতাল থেকে অতিরিক্ত অক্সিজেন সিলিন্ডারের জন্য ১০০০ টাকা দাবি করা হয় বলে অভিযোগ। সদ্যোজাতকে বাঁচাতে সেই টাকাও দিয়ে দেন পরিবার। তারপরেই, চিকিত্‍সকেরা জানান, শিশুর অবস্থার ক্রমেই অবনতি হচ্ছে। ফলে, তাকে মেদিনীপুর মেডিক্য়াল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার নির্দেশ দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ডাকা হয় অ্যাম্বুলেন্স। অভিযোগ, সেই অ্যাম্বুলেন্সে অক্সিজেন সিলিন্ডার ছিল না। হাসপাতালের কাছে অক্সিজেন সিলিন্ডার চাওয়া হলে কর্তৃপক্ষ তা দিতে চাননি বলে অভিযোগ। ফলে, অক্সিজেনের সিলিন্ডার ছাড়াই শ্বাসকষ্টে ভোগা শিশুকে  দোতলা থেকে একতলায় আনতে গিয়েই সব শেষ! মুহূর্তের মধ্যে নেতিয়ে পড়ে শিশু। অ্যাম্বুলেন্সে ওঠার আগেই নিথর হয়ে যায় দেহ। ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন সদ্যোজাতর পরিবার।

চোখের জল মুছতে মুছতে মৃত শিশুর বাবা বলেন, ” ছেলেটা জন্মেইছিল অক্সিজেনের ঘাটতি নিয়ে। অক্সিজেন ছাড়া ওকে বাঁচানো যেত না। আলাদা অক্সিজেন সিলিন্ডারের জন্য টাকা দিলাম। মেদিনীপুরে রেফার করতে বলল। অ্যাম্বুলেন্সে নিয়ে যাব ঠিক হল। কিন্তু, এমনই পরিষেবা দুটো অ্যাম্বুলেন্সের একটাতেও নাকি অক্সিজেন সিলিন্ডার নেই। এদিকে অ্যাম্বুলেন্স! হাসপাতালে বললাম অক্সিজেনের ব্যবস্থা করতে। যত টাকা লাগে দেব! হাসপাতালও দিল না। বাধ্য হয়ে ওইটুকু ছেলেকে কোলে নিয়ে দোতলা থেকে যখন নামানো হচ্ছে, তখনই আমি দেখছি ও নেতিয়ে পড়ছে। ডাক্তারকে বললাম। শুনল না। শেষে যখন পুরো নেতিয়ে পড়ল আবার উপরে নিয়ে গেলাম। সঙ্গে সঙ্গে বললাম অক্সিজেন দিতে। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ! কয়েক সেকেণ্ডে চোখের সামনে চলে গেল ছেলেটা! আমার তো সব শেষ হয়ে গেল। এ বার কি আমি অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে বাড়ি যাব!”

বিষয়টি নিয়ে অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, “সদ্যজাত শিশুর ক্ষেত্রে হাসপাতালে অক্সিজেন দিয়ে নামানোর কোনও নিয়ম নেই। শিশুর অবস্থা একেবারে খারাপ ছিল। তাই রেফার করা হয়েছিল। কিন্তু তার পরেও বাঁচানো যায়নি। তবে এছাড়া যদি পরিবারের কোনও গাফিলতির অভিযোগ থাকে তবে আমি খতিয়ে দেখব।” আরও পড়ুন: অভিষেকের কাছে ‘মিথ্যা অভিযোগ’! ৭ প্রধানের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা হুমায়ুনের