বেলপাহাড়ি : একসময় প্রায় প্রতিনিয়ত রক্তপাতের ছবি দেখেছে জঙ্গলমহল। মাওবাদীদের নিরাপদ ডেরা হিসেবে পরিচিত ওই সব এলাকায় মাওবাদীদের হাতে মৃত্যু হয়েছে অনেকেরই। কখনও পুলিশ, কখনও নেতাদের নিশানা করা হত। পরে আতঙ্কের ছবিটা কিছুটা বদলালেও, আবারও ফিরছে আতঙ্ক। ওই সব এলাকায় গত কয়েকদিন ধরে যে ভাবে পোস্টার দেখা গিয়েছে তাতে মাওবাদী সংগঠন যে আবারও মাথাচাড়া দিচ্ছে, তা স্পষ্ট। তার মধ্যে বৃহস্পতিবারই ল্যান্ডমাইন উদ্ধার হয়েছে বেলপাহাড়িতে। ১০-১১ বছর আগের সেই দিনগুলো আবারও মনে পড়ছে গ্রামবাসীদের। তাই মাওবাদীদের ডাকা বনধের জেরে কার্যত শুনশান গোটা এলাকা। চায়ের দোকানও খোলা হয়নি। রাস্তায় নামেনি কোনও বেসরকারি বাস। কেবলমাত্র ২-১ টা সরকারি বাস ছাড়া আর সব যান চলাচলই বন্ধ।
রাজ্য সরকারের দুর্নীতি, স্পেশাল হোমগার্ড পদে অপরাধীদের নিয়োগের প্রতিবাদে এবং দুর্নীতিগ্রস্ত তৃণমূল কংগ্রেস নেতাদের হুঁশিয়ারি দিয়ে শুক্রবার বাংলা বনধের ডাক দিয়ে মাওবাদী নামাঙ্কিত বেশ কিছু পোস্টার ঝাড়গ্রাম জেলার বিভিন্ন এলাকার পাশাপাশি বাঁকুড়া, পুরুলিয়া থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। আর তাতেই ছড়িয়েছে আতঙ্ক। যার ফলে শুক্রবার ঝাড়গ্রাম জেলার বেলপাহাড়ি সহ বিভিন্ন এলাকায় বনধের ভাল প্রভাব পড়েছে। প্রভাব পড়েছে ঝাড়গ্রাম শহরেও।
সরকারি বাস হাতে গোনা দু- একটি চললেও রাস্তায় একটিও বেসরকারি বাস নামেনি। বেশিরভাগ দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। রাস্তাঘাট একেবারে শুনশান। অন্যান্য দিনের তুলনায় শুক্রবার রাস্তায় মানুষজনকে সেভাবে দেখা যায়নি। মানুষের চোখে মুখে আতঙ্কের ছাপ। যানবাহন চলাচল না করায় সমস্যায় পড়েছেন বেশ কিছু নিত্যযাত্রী। যার ফলে তাঁরা তাঁদের কর্মস্থলে যেতে পারছেন না।
এ ছাড়া, মাওবাদী বনধের সর্বাত্মক প্রভাব পড়েছে বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলেও। বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলের রানিবাঁধ, রাইপুর, সারেঙ্গা ও সিমলাপাল এই চারটি মাওবাদী প্রভাবিত ব্লকে বাস চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ। ছোট গাড়ি চলাচলও বন্ধ রয়েছে। সকাল থেকে রানিবাঁধ, রাইপুর ও সারেঙ্গা এলাকায় দোকান বাজার সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। তবে জেলার অন্যত্র বন্ধের তেমন প্রভাব নেই।