পশ্চিম মেদিনীপুর: দুয়ারে সরকারের শিবিরে প্রবেশের আগেই বিজেপি (BJP) উপপ্রধানকে মারধর করে তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের (TMC) বিরুদ্ধে। বুধবার, খড়গপুর লোকাল থানার জফলা এলাকায় স্থানীয় স্কুলে দুয়ারে সরকারের শিবির চলছিল। সেখানেই তৃণমূল-বিজেপির সংঘর্ষ বাধে বলে অভিযোগ।
বিজেপির তরফে অভিযোগ, দুয়ারে সরকার শিবিরে তৃণমূলের দলীয় নেতৃত্ব উপস্থিত থেকে সাধারণ মানুষকে নানাভাবে ভুল বোঝাচ্ছিলেন। সেই খবর পেয়েই সেখানে যান বড়কলা গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান স্বপন বেরা। অভিযোগ, তিনি শিবিরে প্রবেশ করার আগেই তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা তাঁকে বাধা দেয়। শিবিরে প্রবেশ নিয়ে বচসা শুরু হলে তৃণমূল কর্মীরা তাঁকে মারধর করে তাড়িয়ে দেয় বলে অভিযোগ।
খড়গপুর ১ নম্বর ব্লকের বিজেপি মণ্ডল সভাপতি বুদ্ধদেব পলমল বলেন, “যফলাতে দুয়ারে সরকারের কার্যক্রম চলাকালীন দেখা যায়, গোটা সরকারি কর্মসূচিকেই দলের কর্মসূচিতে রূপান্তরিত করেছে তৃণমূল। ওখানে গিয়ে বোঝা যাচ্ছিল না ওটা সরকারি শিবির না অন্য কিছু। কিন্তু, আমাদের উপপ্রধান যেতেই তাঁকে মারধর করা হয়। শিবিরে ঢোকা তো অনেক দূরের ব্যাপার। এখন তো মনে হচ্ছে এটা সরকারের নয়, তৃণমূল কংগ্রেসের নিজস্ব অনুষ্ঠান।”
পাল্টা, বড়কলা অঞ্চলের তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অজিত মহাপাত্র বলেন, “আসলে একটা ব্যানার লাগানো নিয়ে অশান্তির সূত্রপাত। মঙ্গলবার রাতে বিজেপি উপপ্রধান দুয়ারে সরকারের একটি ব্যানার দেন। কিন্তু, সেই ব্য়ানারে কোথাও কোনও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি ছিল না। এমনকী, লোগোও ছিল না। আমরা প্রতিবাদ করে বলেছিলাম, দুয়ারে সরকারের লোগো ছাড়া এমনকী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি ছাড়া কী করে এই ব্যানার দেওয়া হল! এই নিয়ে বিতর্ক শুরু হল। আজ সকালেও ওই শিবিরে এসে অশান্তি করার চেষ্টা করেছিলেন বিরোধী উপপ্রধান। আমরা তখন তাঁকে বের করে দিয়েছি।”
রাজ্য সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী, দুয়ারে সরকারের শিবিরে সরকারি আধিকারিক ছাড়া কোনও দলীয় নেতৃত্বের অনুপ্রবেশের এক্তিয়ার নেই। এই পরিস্থিতিতে কী করে শাসক বা বিরোধী শিবিরের নেতৃত্ব ক্যাম্পে যেতে পারেন বা সেখানে কোনও বিরোধ ও সংঘর্ষ তৈরি হতে পারে? যদিও, এ বিষয়ে উত্তর দিতে নারাজ দুই শিবিরই। সম্প্রতি, পাঁশকুড়ায় দুয়ারে সরকারের কর্মসূচিতে গিয়ে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের ‘হামলার’ শিকার হন বিজেপি কাউন্সিলর সুকুমার ভুঁইয়া। ওই ‘হামলায়’ তাঁর কানে ও কপালে আঘাত লাগে। আক্রান্ত কাউন্সিলরকে দেখতে গিয়ে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের হামলার শিকার হন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, অভিযোগ এমনটাই। উল্লেখ্য, গত ১৬ অগস্ট থেকে রাজ্যে দুয়ারে সরকার প্রকল্প চালু হয়েছে। মাত্র এক সপ্তাহেই এই প্রকল্প ঘিরে একাধিক দুর্নীতির ছবিও সামনে এসেছে। প্রায়ই দেখা গিয়েছে অভিযোগের মূলে রয়েছে তৃণমূল। এ বার, ফের এই ধরনের বিরোধের জেরে চাঞ্চল্য় ছড়িয়েছে সংশ্লিষ্ট মহলে। আরও পড়ুন: দুয়ারে সরকার শিবিরে মিলছে ‘অমৃতসমান’ মুড়ি-ঘুগনি!