মেদিনীপুর: ফের মেদিনীপুরের বাম রাজনীতিতে সক্রিয় মুখ হয়ে উঠছেন সিপিএমের সুশান্ত ঘোষ। আবারও পথে নেমে আন্দোলন, হুঁশিয়ারি-হুঙ্কার সুশান্ত ঘোষের গলায়। বিরোধী রাজনীতিতে তাঁকে খুব একটা দেখা যায়নি। কারণ, এ রাজ্যে বাম জমানার অবসানের পর সুশান্ত ঘোষও দীর্ঘদিন আড়ালে চলে গিয়েছিলেন। বেনাচাপড়া কঙ্কালকাণ্ডের পর হাজতবাস তাঁকে একটা বড় সময় প্রত্যক্ষ রাজনীতি থেকে দূরে রেখেছিল। সেই সুশান্ত আবারও একটু একটু করে প্রাসঙ্গিক হওয়ার চেষ্টা করছেন জেলার রাজনীতিতে। একুশের বিধানসভা ভোটে শালবনি থেকে সিপিএম প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি। হেরে গেলেও প্রচারে বেশ ঝাঁঝ রেখেছিলেন। এরপর তাঁকে পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা সম্পাদক করে দল। সম্প্রতি সিপিএমের রাজ্য কমিটিতেও জায়গা পেয়েছেন তিনি।
রবিবার সেই সুশান্ত ঘোষকে লাল ঝান্ডা নিয়ে মিছিল করতে দেখা গেল সবংয়ের বুড়ালে। এই মিছিলের সামনে যে ব্যানার ছিল তাতে লেখা, ‘জনগণকে বাঁচাও, দেশ বাঁচাও’। এই মিছিলে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন সুশান্ত। সঙ্গে ছিলেন দলীয় কর্মী-সমর্থকরাও। এই মিছিল থেকেই সুশান্ত ঘোষ হুঁশিয়ারি দেন, ‘যারা আমাদের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে, তাদের শান্তিতে ঘুমাতে দেব না।’
রবিবার দলীয় কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে মিছিলের পর সুশান্ত ঘোষ বলেন, “মানুষকে খুব বেশিদিন বোকা বানিয়ে রাখা যায় না। চিরকাল বোকা বানানো সম্ভব নয়। যারা আমাদের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে তাদের আমরা শান্তিতে ঘুমোতে দেব না। আর এই পরিস্থিতির বদল আমরা ঘটাবই। ঘুরে আমরা দাঁড়াবই। মানুষ সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে। দেউচা পাচামির কয়লা খনি নিয়ে আন্দোলন হোক আর আনিস খানের হত্যার প্রতিবাদে আন্দোলন হোক বা এখানে কৃষিজমি কেড়ে নিয়ে মাছের ভেরি তৈরি করার প্রতিবাদে আন্দোলন হোক। মানুষ ঘুরে দাঁড়াতে চাইছেন, এটাই ইঙ্গিতবাহী।” এদিন দলীয় কর্মী ও সমর্থকদের সঙ্গে প্রায় ৬ কিলোমিটার পথ হাঁটেন সুশান্ত ঘোষ। মিছিল শুরু হয় সবং বাজার থেকে। বুড়াল বাজারে গিয়ে তা শেষ হয়।
সম্প্রতি জেলার ভালুকবাসার জঙ্গল লাগোয়া গড়বেতা-২ ব্লকের মাকলি গ্রামপঞ্চায়েত এলাকায় চাষীদের সঙ্গে দেখা করেন সুশান্ত ঘোষ। মাঠে নেমে তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। সম্প্রতি শিলাবৃষ্টির জেরে এখানকার আলুচাষীরা চরম বিপাকে পড়েছিলেন। সেখানে তিনি বলেছিলেন, চাষীদের বিষয়ে সরকার নীরব। সরকারি আধিকারিকরা এসে রাস্তা দাঁড় করানো গাড়িতে বসেই মাঠ দেখে ফিরে যান। কৃষকদের সঙ্গে কথা পর্যন্ত বলেন না।