Dilip Ghosh: ‘দিনহাটায় উপনির্বাচন, তাই এসব’, গীতালদহে গুলিকাণ্ডে বললেন দিলীপ
Dinhata: বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, ভোটের আগে ইচ্ছাকৃত ভাবে ত্রাসের পরিস্থিতি তৈরি করার চেষ্টা করছে শাসকদল।
মেদিনীপুর: পঞ্চমীর রাতে কোচবিহারের (Coochbehar) গীতালদহে গুলি চলার ঘটনায় অভিযোগের আঙুল উঠেছে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর দিকে। এই ঘটনাকে ‘ইচ্ছাকৃত’ বলেই দাবি করলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সোমবার মেদিনীপুরে দলের বিভিন্ন কর্মসূচি এবং দুর্গা প্রতিমা দর্শন করতে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন দিলীপ ঘোষ।
সেখানেই দিলীপ ঘোষ বলেন, “আসলে ওই আসনে উপনির্বাচন রয়েছে। তাই ইচ্ছা করে উত্তেজনা তৈরি করে ভোটকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এসব করা হচ্ছে যাতে সাধারণ মানুষ ভোট দিতে না আসেন। আসলে তৃণমূল কংগ্রেসের হেরে যাওয়ার ভয়টা যে রয়েছে।”
রবিবার সন্ধ্যায় কোচবিহারের দিনহাটায় গীতালদহ-২ ব্লকের মরাকুঠি এলাকায় স্থানীয় একটি ব্রিজের কাছে তৃণমূলের দুই পক্ষের মধ্যে গোলমাল বাধে বলে অভিযোগ। শুরু হয় সংঘর্ষ, গুলির লড়াই, বোমাবাজি। দুই তৃণমূল কর্মী প্রাণও হারান। অভিযোগ, সিতাই বিধানসভা এলাকায় বিধায়ক জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া ও বর্ষীয়ান নেতা আবু আল আজাদের গোষ্ঠীর মধ্যে দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। পঞ্চমীর সন্ধ্যার গোলমাল তারই রেশ বলে অভিযোগ ওঠে।
যদিও এ প্রসঙ্গে সিতাইয়ের তৃণমূল নেতা বিধায়ক ঘনিষ্ঠ জগদীশ বর্মা বসুনিয়ার ঘনিষ্ঠ নুর আলম বলেন, “রাজনৈতিক গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জের। যারা তৃণমূলকে জয়যুক্ত করেছে, তাদের উপর যারা বিজেপির দালালি করেছে তারা আঘাত করেছে। যারা বিধায়কের অনুগামী লোক রয়েছে, তাদের প্রাণের মারার চেষ্টা করেছে।” অন্যদিকে, দিনহাটা ২ নম্বর ব্লক সভাপতি সঞ্জয় বর্মন বলেন, “এখানে গোষ্ঠীকোন্দলের কোনও ব্যাপার নেই। আমি যতটুকু জানি, এটা ওদের পারিবারিক বিবাদ।”
এর আগে গত মাসেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গীতালদহ। সেখানেও তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বেরই অভিযোগ ওঠে। সেই দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করেও গুলি চলে। ঘটনায় আহত হয়েছিলেন দু’জন। তৃণমূলের দলীয় সূত্রে খবর, সিতাই বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া ও তৃণমূল নেতা আবু আল আজাদ গোষ্ঠীর বিবাদ থেকেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়। সেই সময় আজাদ ঘনিষ্ঠ এক তৃণমূল কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। মফজুর রহমান নামে একজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছিল তখন।
পুজো মিটটেই রাজ্যের চার বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন। খড়দহ, গোঘাট, শান্তিপুরের পাশাপাশি ভোট রয়েছে দিনহাটাতেও। এখানে একুশের ভোটে বিজেপির প্রার্থী ছিলেন সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক। তিনি জয়ীও হন। তবে বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেন তিনি। ফলে বাকি তিন কেন্দ্রের সঙ্গে এ কেন্দ্রেও ভোট হবে আগামী ৩০ অক্টোবর। ফল প্রকাশ হবে ২ নভেম্বর।
দিনহাটায় তৃণমূলের প্রার্থী উদয়ন গুহ। বিজেপির হয়ে লড়বেন অশোক মণ্ডল, বামেদের মুখ ফরওয়ার্ড ব্লকের আব্দুর রউফ। পাশাপাশি খড়দহে তৃণমূলের শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির জয় সাহা। এই কেন্দ্রে সিপিএম প্রার্থী দেবজ্যোতি দাসও লড়াই করছেন। শান্তিপুরে তৃণমূলের প্রার্থী ব্রজকিশোর গোস্বামী, বিজেপির প্রার্থী নিরঞ্জন বিশ্বাস, সিপিএমের প্রার্থী সৌমেন মাহাতো। গোসাবায় সুব্রত মণ্ডল তৃণমূলের মুখ। বিজেপির প্রতীকে লড়বেন পলাশ রানা, আরএসপির প্রার্থী অনিল চন্দ্র মণ্ডল।
বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, ভোটের আগে ইচ্ছাকৃত ভাবে ত্রাসের পরিস্থিতি তৈরি করার চেষ্টা করছে শাসকদল। মানুষ যাতে ভোট দিতে না বের হন সেটাই লক্ষ্য।
আরও পড়ুন: Durga Puja 2021: মা নিজেই চেয়েছিলেন চার হাত, বাঁকসার চৌধুরী বাড়িতে উমা চতুর্ভুজা