পশ্চিম মেদিনীপুর: বাংলায় তথ্য লুকোনো হয়, তাই করোনা বাড়ছে। মুখ্যমন্ত্রীর নিজের লোকেরাই বিধি মানেন না। খোঁচা বিজেপি সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষের।
পশ্চিম মেদিনীপুরে চা চক্রে যোগ দিয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ। সেখানে রাজ্যের করোনার জেরে উদ্ভূত পরিস্থিতি ও বিধি নিষেধের বেড়াজাল নিয়ে রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন দিলীপ ঘোষ। তবে বাংলার করোনা পরিসংখ্যান নিয়ে প্রশ্ন আগেও তুলেছিলেন বিরোধীরা। এবারও দিলীপ ঘোষ বলেন, “করোনা নিয়ে কোন খবর হয় না। এখানে দুবছর ধরে এটাই খবর। বাংলায় তথ্য় লুকানো হয়।”
রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে একজোট হয়ে করোনার বিরুদ্ধে লড়ার বার্তা দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত বছর থেকেই করোনা সংক্রমণ নিয়ে রাজ্যের সমালোচনায় বিজেপির স্বরই সবচেয়ে উঁচু ছিল। কখনও করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করা হচ্ছিল, কখনও সংক্রমণ সংক্রান্ত তথ্য গোপন করার অভিযোগ, কখনও আবার ত্রাণ নিয়ে রাজনীতি করার অভিযোগে শাসক দলের বিরুদ্ধে আঙুল তোলা হয়েছে দ্বিতীয় পর্যায় থেকেই। সেবার সঙ্গত দিয়েছিল বাম-কংগ্রেস। এবার তৃতীয় ঢেউয়ের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে সেই একই অভিযোগ তুললেন বিজেপির বর্যীয়ান নেতা দিলীপ ঘোষ।
তবে কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম সোমবারই দিলীপ ঘোষের বক্তব্যের পাল্টা বলেছেন, “রাজ্য সরকার বিরোধীদের কথায় চলতে পারে না। রাজ্য সরকারের নিজস্ব দায়িত্ব রয়েছে। মানুষের রুজিরুটিটাও রাজ্য সরকারের দায়িত্ব। শুধু চমকে আমি কিছু জায়গায় লিখে দিলাম, বক্তব্য রাখলাম, তাতে হয় না। পুরো পরিস্থিতি দেখে নিয়ে, মানুষের যাওয়া আসা, রোজগার সব দেখে আমাদের ইকোনমির দিকটা ভাবতে হয়। অর্থনীতি না দেখলে মানুষ করোনা আক্রান্ত হবেন না, না খেয়েই মরে যাবে। তখন লোকে বলবে, না খেয়ে পশ্চিমবঙ্গে মরে যাচ্ছে। আমাদের ইকোনমিটা দেখতে হবে। ভারতবর্ষের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের ইকোনমি ভালো। জিডিপি ভালো। সেটা নিয়ে আমি দিলীপদাকে প্রশ্ন করলাম, জবাব দিতে বলুন।”
গোটা বাংলাতেই লাফিয়ে বাড়ছে পজিটিভিটি রেট। রাজ্যে পজিটিভিটি রেট বেড়ে হয়েছে ১৯.৫৯ শতা্ংশ। লাগামছাড়া সংক্রমণ কলকাতায়। শুধু কলকাতাতেই কোভিড আক্রান্ত ২ হাজার ৮০১ জন। মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের। কলকাতায় পজিটিভিটি রেট প্রায় ৩৪ শতাংশ।
উত্তর ২৪ পরগনায় করোনা আক্রান্ত ১ হাজার ৫৭, মৃত ৪। হাওড়ায় এক দিনে করোনা আক্রান্ত ৬৬৫ জন। বাংলার একদিনে সংক্রমণমুক্ত ২ হাজার ৯১৭ জন। কলকাতায় পরিস্থিতি সামাল দিতে আগেই কনটেইনমেন্ট জোন ঘোষণা করেছেন মেয়র। এবার ঘোষণা করলেন মাইক্রো কনটেইনমেন্ট জোন। রাশ টানতে কলকাতায় ২৫ টি মাইক্রো কনটেইনমেন্ট জোন ঘোষণা করা হয়েছে। এক্ষেত্রে একটি আবাসনের ৪-৫ জন সংক্রমিত হলেই, সেটি মাইক্রো কনটেইনমেন্ট জোন হিসাবে ঘোষণা করা হয়।
আগে যেখানে একটি বড় এলাকা বা একটি গোটা পাড়াকে কনটেনমেন্ট জ়োন হিসেবে ঘোষণা করে এলাকার প্রবেশপথ বাঁশ, পুলিশের ব্যারিকেড দিয়ে আটকে দেওয়া হত, এখন পরিস্থিতি তেমন নয়। বর্তমানে ছোট ছোট এলাকা চিহ্নিত করে মাইক্রো কনটেনমেন্ট জ়োন ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে এক একটি মাইক্রো কনটেনমেন্ট জ়োনের মধ্যে একটি বহুতল ফ্ল্যাট বা একটি একক বাড়িও হতে পারে।