ঘাটাল: ঘাটাল আর বন্যা যেন সমার্থক। বর্ষা আর বৃষ্টির প্রাবল্যে প্রতিবারই জলে ডোবে গ্রামের পর গ্রাম। এবছরও তার ব্যতিক্রম নয়। নিম্নচাপের প্রভাব একটু বাড়তেই চরম উৎকণ্ঠায় প্রহর গুনতে শুরু করেছে ঘাটালবাসী। রাস্তাঘাট, সেতু, সবই ক্রমশ জলের তলায় চলে গিয়েছে। দ্রুত গতিতে বাড়ছে ঝুমি ও শিলাবতী নদীর জল। যে কোনও মুহূর্তে গ্রামের ঘরবাড়িও চলে যেতে পারে জলের তলায়, এমনই আশঙ্কা করছেন গ্রামবাসীরা। সোমবার সকালে দেখা গেল খরস্রোতা নদীর মাঝে সেতু আগলাচ্ছেন গ্রামবাসীরা।
ঘাটালের মনসুকা এলাকায় ঝুমি নদীর উপর ছিল দুটি সাঁকো। দুটিই জলের তোড়ে ভেঙে গিয়েছে। খরস্রোতা নদীতে আপাতত প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় পার হচ্ছেন গ্রামবাসীরা। অন্যদিকে, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা নদীর ঘোষখিরা এলাকায় যোগাযোগের একমাত্র উপায় কাঠের সাঁকো বাঁচাতে আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন গ্রামের মানুষজন।
খরস্রোতা নদীর মাঝেই সাঁকোতে আটকে থাকা জঞ্জাল নিজেরাই সরাচ্ছেন গ্রামের মানুষজন। দু দিনের টানা বৃষ্টি তো ছিলই, তার সঙ্গে জল ছাড়তে শুরু করেছে ডিভিসি। ফলে সোমবার দুপুর থেকে ঘাটালের ঝুমি ও শিলাবতী নদীতে হু হু করে বাড়তে শুরু করেছে জলস্তর। ঘাটাল ব্লকের নীচু এলাকাগুলিতে ইতিমধ্যেই জল ঢুকতে শুরু করেছে। চন্দ্রকোনার কেঠিয়া ও শিলাবতী নদীতেও জল বাড়ছে ক্রমশ।
এভাবে জল বাড়তে থাকলে কী হবে! সেটা ভেবেই চরম দুশ্চিন্তায় প্রহর গুনছে ঘাটাল সহ চন্দ্রকোনার মানুষজন। ঘাটালের মনসুকা এলাকায় খরস্রোতা নদীতে হাজার হাজার পার হচ্ছেন নৌকোয়। তার জন্য দীর্ঘক্ষণ ধরে অপেক্ষা করতে হচ্ছে তাঁদের। রাত বাড়লে আর চলবে না নৌকা। ফলে চরম সমস্যায় পড়ছেন এলাকাবাসী। কৃষি জমি সহ ঘাটাল মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকার কৃষি জমি জলের তলায়।
যদি এ বিষয়ে ঘাটালের মহকুমা শাসক সুমন বিশ্বাস বলেন, সমস্ত নদীতে জল বাড়ছে। তাই সব ব্লকের বিডিও দের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জরুরি পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে। প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে। সমস্ত দিকে নজরদারি চালানো হচ্ছে। যদি বৃষ্টি আরও হয় এবং ডিভিসি আরও জল ছাড়ে, তাহলে পরিস্থিতির অবনতি হবে বলেই জানিয়েছেন মহকুমাশাসক।