Landslide: রূপনারায়ণে বালি মাফিয়াদের দাপাদাপি, নদী গিলে খাচ্ছে আস্ত বাড়ি-জমি!

Sand Smuggling: স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, দিনের পর দিন বালি মাফিয়ারা অবৈধভাবে বালি উত্তোলন করে। নানাভাবে প্রশাসনকে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। বালি উত্তোলন আটকানো যায়নি।

Landslide: রূপনারায়ণে বালি মাফিয়াদের দাপাদাপি, নদী গিলে খাচ্ছে আস্ত বাড়ি-জমি!
রূপনারায়ণে ধস, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 31, 2021 | 8:33 PM

 পশ্চিম মেদিনীপুর: কোনওভাবেই বাগে আনে যাচ্ছে না বালি মাফিয়াদের (sand mafia)। অবৈধ বালির রমরমা ব্যবসার মাশুল গুনছে সাধারণ মানুষ। একের পর এক নদীর গর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে বাড়ি-জমি। নামছে ধস, ভাঙছে চাল। জীবন-মরণ হাতে নিয়ে কোনওরকমে বেঁচে রয়েছেন নদীপারের মানুষগুলো। ভয় ধরাচ্ছে রূপনারায়ণের তীরের সাম্প্রতিক ছবি।

রবিবারই, নদীর পার ধসে জলের তলায় চলে গিয়েছে গোটা কয়েকটি জমি। তলিয়ে গিয়েছে আস্ত ১০ টি বাড়ি। খড়কুটোটুকু হারিয়ে এখন আকাশের নীচেই আশ্রয় খুঁজছে ধুঁকতে থাকা পরিবারগুলো। নেই চাষের জমিও। সবই খেয়েছে নদী। কিছুদিন আগেই নিম্নচাপের জেরে বঙ্গে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দেয়। সেইসময়, কার্যত রূপনারায়ণের তীর জুড়ে কেবল যেদিকে তাকানো যায়, সেদিকেই জল। দীর্ঘদিন ধরে ঘাটাল-সহ একাধিক এলাকা ছিল জলের তলায়।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, দিনের পর দিন বালি মাফিয়ারা অবৈধভাবে বালি উত্তোলন করে। নানাভাবে প্রশাসনকে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। বালি উত্তোলন আটকানো যায়নি। যতদিন গিয়েছে তত তা বেড়েছে। অবৈধ বালিখাদানের জেরে এই বিপত্তি বলে অভিযোগ তাঁদের। ধসের জেরে বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি কিছু বাড়িতে ফাটলও দেখা দিয়েছে। গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, গত তিন দিন ধরে একটু একটু করে নদীর পাড়ে ফাটল শুরু হয়। শনিবার সকাল থেকে তা বাড়তে থাকে। শনিবার রাতেই পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠে।

এদিকে ধসের খবর পেয়েই দুর্ঘটনাগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে যান ঘাটালের মহকুমাশাসক সুমন বিশ্বাস এবং  বিধায়ক মমতা ভুঁইয়া। মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘খুবই দুঃখজনক ঘটনা। ওই সব এলাকার বাসিন্দাদের অন্যত্র রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। খাবারেরও ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’ রাজ্যের মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া বলেন, ‘‘বিষয়টি শুনেছি। সেচ দফতরের মন্ত্রী ও আধিকারিকদের জানানো হয়েছে। জেলাশাসককেও জানাব। আশা করছি দ্রুত এই পরিস্থিতির মোকাবিলা সম্ভব হবে।’’

নদী থেকে অবৈধ বালি উত্তোলন কোনও নতুন ঘটনা নয়। এর আগেও বিভিন্ন সময়ে এই অবৈধ বালি উত্তোলন করা হয়েছে। এক প্রশাসনিক আধিকারিক জানিয়েছেন, নদীতীরে ১০০ মিটার দূরে দূরে বালি তোলায় বরাবরই নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কিন্তু বহু জায়গাতেই ১০০ মিটারের মধ্যে বালি তোলা হচ্ছে। অনেক জায়গায় আবার জলপ্রবাহ রুখে নদীর মাঝবরাবর বাঁধ দেওয়া হচ্ছে। ফলে পাড় ঘেঁষে জলস্রোত বইতে থাকায় ভূমিক্ষয় ঘটছে।

বালি মাফিয়া রুখতে কড়া পদক্ষেপ করেছে রাজ্য সরকার। নতুন স্যান্ড মাইনিং পলিসির কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। নবান্নের সাংবাদিক বৈঠকে মমতা জানান, বালি খনন নিয়ে অনেক অভিযোগ সামনে আসছে। তাই ‘স্যান্ড মাইনিং পলিসি ২০২১ আনা হয়েছে। স্থানীয়  মাফিয়ারা বালি, কয়লা, পাথর পাচার করে বলে অনেক জায়গায় অভিযোগ উঠেছে। আবার কাউকে খননের দায়িত্ব দিলে তিনি চারগুণ বেশি খনন করে নেন। ফলে প্রাকৃতিক সম্পদ নষ্ট হচ্ছে। এতদিন কেবল জেলাশাসকের হাতেই খননের দায়িত্ব থাকত। সেই দায়িত্ব এ বার মাইনিং কমিটির হাতে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন মুখ্যমন্ত্রী।

আরও পড়ুন: Dilip Ghosh: তৃণমূলে যোগ না দিলে খেলায় ‘না’! লিয়েন্ডার নিয়ে বিস্ফোরক দিলীপ