মেদিনীপুর: কন্যাশ্রীদের পাশে বসিয়ে দুয়ারে সরকার শিবিরে উপভোক্তাদের ফর্ম পূরণ করতে ব্যস্ত খোদ বিডিও। শুক্রবার এমনই ছবি দেখা গেল মেদিনীপুরের চন্দ্রকোণা-২ ব্লকের বান্দিপুরে। ছোট ছোট ‘কন্যাশ্রী’দের এমন এগিয়ে আসায় খুশি ‘ঘরের লক্ষ্মী’রাও। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের ফর্ম তুলতে এসে তেমনটাই জানালেন এলাকার মহিলারা।
বান্দিপুর-১ গ্রামপঞ্চায়েতের ঝাঁকরা হাইস্কুল। চন্দ্রকোনা ২ ব্লক প্রশাসন শুক্রবার ঝাঁকরা হাইস্কুলেই দুয়ারে সরকারের শিবির খোলে। সেখানে সকাল থেকেই সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা পেতে ভিড় জমান বহু মানুষ। সব থেকে দীর্ঘ লাইন লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের জন্যই। এই ভিড় সামলানো চারটি খানিক কথা নয়। যাতে কোনও রকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতি না তৈরি হয়, তত্ত্বাবধানে শিবিরে ছিলেন খোদ বিডিও।
বিডিওর পাশেই বসে একদল ‘কন্যাশ্রী’। দুয়ারে সরকার শিবিরে রীতিমতো হেল্প ডেস্ক খুলে উপভোক্তাদের সহযোগিতা করছে তারা। কম করে ২০-২৫ জন কন্যাশ্রীকে একটি ‘হেল্প ডেস্ক’ খুলে সাধারণ মানুষকে ফর্ম পূরণে সাহায্য করতে দেখা যায়।
বিডিও অমিত ঘোষ বলেন, “আর আমিও এখানে, কারণ অনেকেই বিডিওকে চেনেনই না। সকলে তো বিডিও অফিসে যেতে পারেন না। এখানে আমারও সকলের সঙ্গে একটা পরিচয় পর্বের সুযোগ রয়েছে। একই সঙ্গে সরকারি সাহায্য যা মানুষের প্রাপ্য তা প্রান্তিক মানুষদের কাছে পৌঁছে দিতে পারছি, এর থেকে ভাল আর কী হতে পারে।” একই সঙ্গে তিনি জানান, কন্যাশ্রীরা শিখে নিচ্ছে কী ভাবে ফর্ম ফিল আপ করতে হবে। দু’ একটি ফর্ম দেখে নেওয়ার পর ওরাই মানুষের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে। ওরাই দেশের ভবিষ্যৎ। সর্বক্ষেত্রে মানুষের পাশে দাঁড়ানোই ওদের কর্তব্য। নিজেদের কর্তব্যবোধও ওদের এ ভাবেই তৈরি হচ্ছে।
একদিকে শিবিরে উপস্থিত হয়ে ফর্ম পূরণে সহযোগিতা করে মানুষের পাশে দাঁড়ানো, অন্যদিকে তা খোদ বিডিওর পাশে বসে শিখে নেওয়া, স্বভাবতই খুশি কন্যাশ্রী মেয়েরা। এক ছাত্রীর কথায়, “আমরা মানুষকে সাহায্য করতে এসেছি। অনেকেই আমাদের জিজ্ঞাসা করছে ফর্মে কোথায় কী লিখতে হবে। কোথায় সই করতে হবে। আমরা বলে দিচ্ছি। বিডিও স্যর আমাদের সবটাই বলে বলে দিচ্ছেন। খুবই ভাল লাগছে।”
শিশু কোলে নিয়ে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের জন্য লাইন দিয়েছিলেন এক গৃহবধূ। কোলে ছোট্ট বাচ্চা। একাই এসেছেন। একা হাতে বাচ্চাকে নিয়ে কিছুটা হিমশিমই খাচ্ছিলেন। জানালেন, “ওই কন্যাশ্রীর মেয়েরা আমার ফর্ম ফিল আপ করে দিল। নিজেরা তো পারছি না। ওরা করে দিল খুব সুবিধা হল। আমার কোলে ২ বছর ১ মাসের বাচ্চা। বুঝতেই পারছেন কতটা মুশকিল হচ্ছে এত ভিড়ে। ওরা খুব সাহায্য করল।” আরও পড়ুন: ‘কোয়াক’দের প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ‘ব্যবহার’ মেনে নেওয়া হবে না! আন্দোলনের হুঁশিয়ারি ডক্টর্স ফোরামের