‘কোয়াক’দের প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ‘ব্যবহার’ মেনে নেওয়া হবে না! আন্দোলনের হুঁশিয়ারি ডক্টর্স ফোরামের
Mamata Banerjee: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবারই ঘোষণা করেন, কোয়াক ডাক্তারদেরও এখন থেকে গ্রামাঞ্চলে ব্যবহারের জন্য গাইডলাইন তৈরি করা হচ্ছে।
কলকাতা: গত বৃহস্পতিবার এসএসকেএমে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একগুচ্ছ ঘোষণা করেন। সবক’টিই চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী সংক্রান্ত। এর মধ্যে অন্যতম ছিল কোয়াক ডাক্তার, যাঁরা ভাল কাজ করছেন, তাঁদের স্বীকৃতি দিয়ে প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে কাজে লাগানোর কথাও ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই ঘোষণায় তীব্র আপত্তি ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টর্স ফোরামের। রীতিমতো প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরেছে তারা।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবারই ঘোষণা করেন, কোয়াক ডাক্তারদেরও এখন থেকে গ্রামাঞ্চলে ব্যবহারের জন্য গাইডলাইন তৈরি করা হচ্ছে। চলতি কথায় যাঁরা হাতুড়ে চিকিৎসক বলে পরিচিত, তাঁদের ডাক্তার হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া না হলেও যেখানে চিকিৎসকের অভাব রয়েছে, সেখানে নির্দিষ্ট গাইডলাইন মেনে তাঁদের কাজে লাগানোর বিষয়ে রাজ্য পদক্ষেপ করছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টর্স ফোরামের স্পষ্ট বক্তব্য, ‘ হাতুড়ে চিকিৎসকদের গ্রামে সরকারি হাসপাতালে নিয়োগ করার কথা এবং নার্সিং প্র্যাক্টিশনার তৈরি করার কথা বলেছেন মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী। আমাদের সংগঠন সর্বতোভাবে এই ঘোষণার বিরোধিতা করছে।’
ফোরামের দাবি, ‘আমাদের দেশের আইন অনুযায়ী পাশ করা ডাক্তারবাবু ছাড়া কেউ রোগী দেখতে পারেন না। কিন্তু প্রশাসনের নাকের ডগায় অসংখ্য অপ্রশিক্ষিত লোক চিকিৎসক সেজে মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই প্রশাসন কোনও পদক্ষেপ করে না। উপরন্তু এখন এই ম্যালপ্রাক্টিসকে সরকারি বৈধতা দেওয়ার অপচেষ্টাকে আমরা ন্যক্কারজনক বলে মনে করি। আমরা মনে করি স্বাস্থ্যক্ষেত্রে মডার্ন মেডিসিনের ডাক্তারদের যেমন ভূমিকা রয়েছে, তেমনি ভূমিকা রয়েছে আয়ুশ ডাক্তারদের। এবং নার্সদের ভূমিকা অবশ্যই অনস্বীকার্য। আমরা চাই জনস্বার্থে প্রত্যেকে নিজেদের পরিধির ভিতরে থেকে নিজেদের ভূমিকাটুকু পালন করুক।’
এ প্রসঙ্গে ফোরামের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘যখন কেন্দ্রীয় সরকার আয়ুশ ডাক্তারদের মডার্ন মেডিসিনের ওষুধ লেখার অনুমতি দিতে চেয়েছিল, আমরা তার সক্রিয় বিরোধিতা করেছি। ঠিক সেই ভাবে নার্সিং প্র্যাক্টিশনার তৈরির ভাবনাচিন্তারও আমরা বিরোধিতা করছি। মানুষের স্বাস্থ্যের অধিকার সুরক্ষিত রাখতে West Bengal Doctors Forum যে কোনও ধরনের হাতুড়ে বা খিচুড়ি চিকিৎসা ব্যবস্থার বিরোধী ছিল, আছে এবং থাকবে। আমরা রাজ্য প্রশাসনের কাছে বিনীত অনুরোধ রাখছি, এই ধরণের জনস্বার্থ বিরোধী প্রচেষ্টা থেকে বিরত থাকার জন্য। আমরা আশাবাদী রাজ্য সরকার এই ধরনের হঠকারী পরিকল্পনাকে বাস্তবায়িত করবে না।’ এমনটা হলে বড়সড় আন্দোলনে নামার হুমকিও দিয়েছে ফোরাম।
সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন, এবার থেকে প্রত্যেক বৃহস্পতিবার বা ১৫ দিন অন্তর একবার করে তিনি এসএসকেএম হাসপাতালে বসবেন। সেই মতোই গত বৃহস্পতিবার এসএসকেএমে গিয়ে তিনি একাধিক ঘোষণা করেন। বলেন, রাজ্যের চিকিৎসক ও নার্সদের বাড়ি তৈরির জন্য বিনামূল্যে জমি দেবে রাজ্য সরকার। হিডকোর চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিমকে ১০ কাঠা জমি বরাদ্দ করতে বলেন তিনি। যাতে সেখানে ডাক্তার ও নার্সদের আবাসন তৈরি করা যায়। পাশাপাশি ডাক্তারদের অভাব মেটাতে ‘প্র্যাক্টিশনার সিস্টার’ হিসাবে প্রশিক্ষিত নার্সদের ব্যবহারের কথাও বলেন মুখ্যমন্ত্রী। আরও পড়ুন: সারদার সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটে নাম কুণালের, তৃণমূল নেতার দাবি, ‘স্নায়ুর চাপ সৃষ্টির কৌশল’