মেদিনীপুর: খেমাশুলিতে কুড়মি সমাজের অবরোধে সামিল প্রধান উপদেষ্টা অজিত মাহাতো। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়গপুর লোকাল থানার অন্তর্গত খেমাশুলিতে ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক-সহ রেলপথ অবরোধ চলছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সেই অবরোধে সামিল হলেন কুড়মি সমাজের কর্ণধর অজিত মাহাতো। তিনি সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বলেন, “আগামী দিনের কর্মসূচি আমাদের যা আছে সেটাই। সরকারকে বলেছি বিগত দিনে আপনাদের কথাই আমরা অবরোধ তুলে নিয়েছিলাম। কিন্তু কেন আমাদের কথা শুনা হল না আমাদের দুঃখ সেটাই। আমাদের দাবি রাজ্য সরকারের যেটুকু করার আছে করুক। রাজ্য সরকার যে জাস্টিফাই পাঠানোর ছিল সেটা পাঠাক তাহলে তো আমরা তুলে নেব। কেন আমাদের ওপর ছলনা, প্রতারণা হবে। আমরা এই আন্দোলন লাগাতার করে যাব।” তিনি আরও বলেন, “সরকার যদি বলে সঠিক চিঠি দিয়েছি তাহলে আমরা তুলে নেব। আমাদেরকে যেন দুর্বল না ভাবুক। এটা জাতিসত্তার লড়াই, আবেগের লড়াই। বহুবার সরকারের সঙ্গে কথা হয়েছে। কিন্তু এরা কথা বলে কথা রাখতে পারে না। যত সম্ভব তাড়াতাড়ি করুন না হলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে যাব।”
আদিবাসী কুড়মি জাতিকে তফশিলি উপজাতির তালিকাভুক্ত করা, সারনা ধর্মের স্বীকৃতি, কুড়মালি ভাষাকে সংবিধানের অষ্টম তফসিলের অন্তর্ভুক্ত করা-সহ রাজ্য সরকারের সিআরআই (কালচারাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট) রিপোর্ট কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাঠানোর দাবিতে ১ এপ্রিল থেকে জঙ্গলমহলে শুরু হয়েছে ‘ঘাঘর ঘেরা’ নামের অবরোধ কর্মসূচি। ‘কুড়মি সমাজ পশ্চিমবঙ্গ’ সংগঠনের রাজ্য সভাপতি রাজেশ মাহাতো আগেই পশ্চিম মেদিনীপুরের খেমাশুলি-তে সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়েছেন, গত ১ এপ্রিল থেকে পশ্চিমবঙ্গের ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া সহ বিহার, ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশা রাজ্যের জঙ্গলমহল এলাকা জুড়ে ‘ঘাঘর ঘেরা’ নামে, লাগাতার আন্দোলন কর্মসূচির নেওয়া হয়েছে। এর আগেও কুড়মিদের তালিকাভুক্ত করার জন্য বিভিন্ন দাবিতে পুজোর আগে খড়্গপুরের খেমাশুলিতে কেন্দ্র সরকারের অধীনে থাকা রেলপথ আর জাতীয় সড়ক টানা পাঁচ দিন ধরে অবরোধ করেছিলেন। বিশাল প্রভাব পড়েছিল গোটা রাজ্যে। রাজ্য সরকারের তরফ থেকে কেন্দ্র সরকারের কাছে সিআরআই (কালচারাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট) রিপোর্ট পাঠানো হবে এমন আশ্বাসে উঠেছিল সেই অবরোধ-বিক্ষোভ। কিন্তু অভিযোগ, সিআরআই রিপোর্ট কেন্দ্রের কাছে জমা পড়েনি। তাই আবারও বিক্ষোভ।