মেদিনীপুর: ভুল চিকিৎসায় শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ। অসুস্থ মাও। চিকিৎসকের শাস্তির দাবিতে জেলাশাসক এবং জেলা স্বাস্থ্য দফতরের দ্বারস্থ দম্পতি। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের তরফে অভিযোগ পাঠানো হচ্ছে মেডিক্যাল নেগলিজেন্স বিষয়ক বিশেষ কমিশনের কাছে, জানালেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক। এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ মেদিনীপুর শহরের এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। চিকিৎসকের শাস্তির দাবিতে প্রশাসনের দ্বারস্থ মেদিনীপুর শহরের মুখোপাধ্যায় দম্পতি।
ঘটনার সূত্রপাত ২০১৫ সালে। গর্ভবতী হন স্বাগতা মুখোপাধ্যায়। চিকিৎসক কাঞ্চন ধারা তাঁর চিকিৎসা করেন। ২০১৬ সালের শুরুতেই সন্তান প্রসব করেন তিনি। প্রসবের পর থেকেই শিশুসন্তানের অনেক শারীরিক সমস্যা লক্ষ্য করা যায়। জন্মের ১০ মাস পর মৃত্যু হয় শিশুর। অভিযোগ, চিকিৎসক কাঞ্চন ধারার ভুল চিকিৎসার কারণেই মৃত্যু হয় শিশুর। এরপর থেকে ক্রমাগত অসুস্থ হতে থাকেন স্বাগতা মুখোপাধ্যায়ও।
অভিযোগকারীর বক্তব্য, “আমার স্ত্রীর নেগেটিভ গ্রুপ। সেক্ষেত্রে ডেলিভারির পর মাকে একটা ইঞ্জেকশন দিতে হয়, অ্যান্টি ডি বলে। সেটা দেওয়া হয়নি। আমাদের পরবর্তী বাচ্চা হওয়ার ক্ষেত্রেও সমস্যা হতে পারে। ”
যদিও সমস্ত অভিযোগকে উড়িয়ে দিয়েছেন চিকিৎসক কাঞ্চন ধাড়া। তাঁর দাবি, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই এমন অভিযোগ আনা হচ্ছে। চিকিৎসায় কোনওরকম গাফিলতি হয়নি বলেও দাবি তাঁর। তাঁর কথায়, “এটা একটা ভিত্তিহীন অভিযোগ। ওঁর স্ত্রী নেগেটিভ রক্তের গ্রুপ ছিল। বাচ্চা হওয়ার পর অ্যান্টি ডি ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়। তার নথিও রয়েছে। ভবিষ্যতে কার বাচ্চা হবে, না হবে, তা কোনও চিকিৎসক বলতে পারেন না। এর জন্য কোনও শিশু চিকিৎসক দায়ী, সেটা কি বলা যেতে পারে? ”
ইতিমধ্যেই মুখোপাধ্যায় দম্পতি দ্বারস্থ হয়েছে জেলা প্রশাসনের। অতি সম্প্রতি জেলা শাসক, জেলের মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকারিকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন স্বাগতা মুখোপাধ্যায়ের স্বামী সুমন মুখোপাধ্যায়। গোটা বিষয় নিয়ে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্য শঙ্কর সারেঙ্গী জানিয়েছেন, অভিযোগ তিনি পেয়েছেন। অভিযোগ পাঠানো হয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের ‘মেডিক্যাল নেগ্লিজেন্স’ বিষয়ক কমিশনের কাছে। সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেই জানাচ্ছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক। সব মিলিয়ে গোটা ঘটনাকে ঘিরে রীতিমতো শোরগোল জেলা সদরে।