মেদিনীপুর: তিন বন্ধু সকালে টিউশন পড়ে বাড়ি ফিরছিল। বাড়িতে কিছু খাওয়া-দাওয়া করে খড়্গপুর কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্র আরিয়ান মা-কে বলেছিল আরও একটা টিউশন রয়েছে। এরপরই রেলকর্মী মায়ের স্কুটি নিয়ে বাড়ি থেকে বেরোয় সে। ছুটির দিন, রবিবার বলে মা-ও বিশেষ বাধা দেননি! বাড়ি থেকে বেরিয়ে তার সহপাঠী তথা মামাতো ভাই পীয়ূষ-কে ডাকে সে। পীয়ূষ-ও বাড়িতে বলে, ‘টিউশন যেতে হবে, স্যার ডেকেছেন’। এরপর দুই বন্ধু মিলে তাদের আরেক বন্ধু আর্য-কে ডাকে! সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ তিন জনে মিলে খড়্গপুর শহরের ইন্দা নিউ ট্রাফিক এলাকা থেকে রওনা দেয় মেদিনীপুর ও খড়্গপুরের সংযোগস্থলে মোহনপুর ব্রিজ মানে বীরেন্দ্র সেতু সংলগ্ন অ্যানিকাট ড্যামে।
সাঁতার না জানা সত্ত্বেও আরিয়ান ও পীয়ূষ নেমে যায় খরস্রোতা ড্যামে। আরিয়ান ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে যায় এবং জলের তোড়ে ভেসে যেতে থাকে! তাকে বাঁচাতে ঝাঁপ দেয় পীয়ূষ-ও। দু’জনই তলিয়ে যেতে থাকে। এরপরই আর্যর চিৎকারে গ্রামবাসীরা ছুটে আসেন। আর্য-ও দুই বন্ধুকে রক্ষা করতে ঝাঁপ দিতে গেলে তাকে গ্রামবাসীরাই টেনে ধরেন। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ। গ্রামবাসীরা যতক্ষণে আরিয়ান ও পীয়ূষের দেহ উদ্ধার করেন, ততক্ষণে তাদের দেহে আর প্রাণ নেই।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় কোতোয়ালি থানার পুলিশও। মৃতদেহ উদ্ধার করে পাঠানো হয় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। কান্নায় ভেঙে পড়েন বাড়ির লোকজন । গোটা এলাকায় শোকের ছায়া । পরিবারের এক সদস্য বলেন, “ওরা সবসময়েই একসঙ্গে থাকত। বেশিরভাগ সময়েই টিউশন একসঙ্গে পড়তে যেত। কিন্তু এমনটা হতে পারে, বাড়ির লোক কখনও ভাবেননি। গোটা পরিবারটাই নিঃস্ব হয়ে গেল।”