পশ্চিম মেদিনীপুর: একে বৃষ্টি, দোসর চাষজমিতে হাতির তাণ্ডব। পশ্চিম মেদিনীপুরে হাতির তাণ্ডবে নাকাল স্থানীয় গ্রামবাসীরা। ঘাগরা, দতাল, মেটলা, নলবনা সহ বিভিন্ন এলাকায় গত তিন দিন ধরে চাষের জমিতে ঢুকে তাণ্ডব হাতির পালের। ক্ষতিগ্রস্ত ধান ও সবজি। এদিকে বারবার বন দফতরকে অভিযোগ জানিয়েও মেলেনি কোনও সুরাহা। এমনকি ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামবাসীরা পাননি কোনও ক্ষতিপূরণও।
৪০-৫০ টি হাতির একটি দল দাপিয়ে বেড়াচ্ছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন এলাকায়। সামনেই লক্ষ্মী পূজা ঠিক তার আগেই যেভাবে ধানের ক্ষতি হচ্ছে, তাতে মাথায় হাত চাষিদের। একদিকে আকাশের খামখেয়ালিপনা, অন্যদিকে হাতির দল দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ধানের খেত। সাঁড়াশি ফলায় বিদ্ধ চাষিরা ।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার নয়াবসত রেঞ্জের ছয় থেকে সাতটি গ্রামে গত কয়েকদিন ধরে হাতির একটি দল ঘুরে বেড়াচ্ছে। বিঘার পর বিঘা ফসল এমনিতেই পুজোর আগে টানা বর্ষণে নষ্ট হয়েছে। এলাকাবাসীর বক্তব্য, ঘাগরা, দতাল, মেটলা, নলবনা-সহ বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টিতেই চাষের ক্ষতি হয়েছে। বাকি যা ছিল, তা হাতি খেয়ে গিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিঘার পর বিঘা চাষের ধান ও সবজি।
চাষিদের অভিযোগ বনদফতরকেও জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। এমনকি ক্ষতিগ্রস্তরা ক্ষতিপূরণও পাননি। এক ক্ষতিগ্রস্ত চাষির কথায়, “এমনিতেই এমন ভারী বৃষ্টি চলছে তো চলছেই। কীভাবে ফসল বাঁচাব? যাওবা বাঁচতো, হাতিই সব খেয়ে গেল! সারা বছরের আয়। কীভাবে গোটা বছরটা চালাব। আমরা সবাই ধারদেনা করেই চাষ করি। ধারও বা কীভাবে শোধ করব। ভেবে আমরা কূল কিনারা করতে পারছি না। এরপরই শুনবেন কত চাষি আত্মঘাতী হচ্ছে!”
আরেক চাষির কথায়, “প্রশাসন তো একটু আমাদের কথা ভাবতে পারে। কিছু ক্ষতিপূরণ দিতে পারে। কিন্তু কোথায় কী! আমাদের তো খোঁজই নেননি কেউ। বনদফতরকে বারবার বলেও সাড়া মেলেনি।”
এদিকে আবার আবহাওয়াবিদরা জানাচ্ছেন, আজ, সোমবার উপকূলবর্তী জেলাগুলোতে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইবে। মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যাওয়ার ওপর আগেই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। বৃষ্টি হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর-সহ দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে।
আরও পড়ুন: Medinipur: ‘কোলে বাচ্চাকে বসিয়ে বাস থেকে ধাঁ হয়ে গেল!’ একরত্তিকে নিয়ে বিড়ম্বনায় মাছ ব্যবসায়ী