পশ্চিম মেদিনীপুর: নিম্নচাপের জেরে টানা বর্ষণ। তার জেরে দুর্ভোগের সম্মুখীন ঘাটালবাসী। অতি ভারী বৃষ্টির ফলে ঘাটাল ব্লকের মনসুকা এলাকায় ঝুমী নদীর জ্বলস্তর বেড়েছে। তার ফলে যাতায়াতের সমস্যায় পড়তে হয়েছে গ্রামবাসীদের।
এক মাস আগের বন্যার ক্ষত এখনও সারেনি, ঝুমী নদীর জলের তোড়ে ভেঙেছিল একাধিক কাঠের সাঁকো, সমস্যায় পড়েছিলেন মনসুকা গ্রামের বাসিন্দারা। যাতায়াতের জন্য জল কমতেই বাঁশ ও কাঠের সাঁকো পুনরায় তৈরি করেছিলেন তাঁরা। আবার বৃষ্টির ফলে ঝুমী নদীর জল বাড়ায় সমস্ত সাঁকো জলের তোড়ে ভেঙে নিয়ে চলে গেছে ।
ফলে নদীতে রাতদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকোতে করতে হচ্ছে পারাপার। যে কোনও সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। সেতুগুলি ভেসে যাওয়ায় এলাকাবাসীর একমাত্র উপায় নৌকা। এর ফলে মনসুকা ১ -২ গ্রাম পঞ্চায়েত মানুষ ও হুগলি ও মেদিনীপুর দুই জেলার দূরদুরন্ত থেকে আসা মানুষদের ব্যাপক ভোগান্তির সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
গ্রামবাসীদের বক্তব্য, “প্রতি বর্ষাতেই আমাদের এই দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হয়। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করতে হয়। সকলের সমান অবস্থা। রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে হয় প্রবল সমস্যা।” গ্রামবাসীদের বক্তব্য, এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন। একটা নিম্নচাপ পার হতে না হতেই আরও এক নিম্নচাপের সম্মুখীন ঘাটালবাসী।
এদিকে, বৃহস্পতিবারই কেলেঘাই নদীর বাঁধ ভেঙেছে ৬ নম্বর চাইলকুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের শ্যামকিশোরপুর এলাকায়। বেশ কয়েক ফুট নদী বাঁধ ভেঙে পরপর বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবনের আশঙ্কা করছে স্থানীয় প্রশাসন । ইতিমধ্যেই ওই সমস্ত গ্রামের কয়েক হাজার মানুষকে পার্শ্ববর্তী উঁচু সরকারি জায়গাতে স্থানান্তরিত করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
দুর্যোগ-দুর্ভোগের অন্ত নেই। নিম্নচাপের পিছনেই আরও একটি নিম্নচাপের আশঙ্কা। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, শুক্রবারে বাংলা লাগোয়া বঙ্গোপসাগরের উপর একটি ঘূর্ণাবর্ত সৃষ্টি হতে পারে। সেটিও নিম্নচাপে ঘনীভূত হবে, এমনই সম্ভাবনা দেখছেন আলিপুরের আবহবিদরা। বাড়ছে ঘাটালের শিলাবতী নদীর জল হু করে, তাই যাতে ঘাটালের ভাসাপোলের ওপর দিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন না হয়, তার জন্য তৎপর পৌর প্রশাসনের কর্মীরা। জোর কদমে চালাচ্ছে নজরদারি।
এদিকে, ঘাটাল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল চত্বরে জল জমে দুর্ভোগে পড়েছেন রোগীর আত্মীয়-সহ স্বাস্থ্যকর্মীরা। নিকাশি ব্যবস্থা বেহাল থাকায় বৃষ্টি হলেই সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল চত্বরে জমে হাঁটু সমান জল। দূর্ভোগে পড়তে হয় রোগীর আত্মীয় সহ স্বাস্থ্যকর্মীদের।
ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান ও জলে ডুবেছে। হাসপাতালে আসা বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রোগীর আত্মীয়দের অভিযোগ, বেহাল নিকাশি নালার কারণেই বৃষ্টি হলেই হাসপাতাল চত্বরে জল জমে যায়।
অবিরাম বৃষ্টির জেরে কেশিয়াড়ি ব্লকের ইতিমধ্যেই প্রায় দুশোটির কাছাকাছি কাঁচা বাড়ি ভেঙে পড়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে খবর। ইতিমধ্যেই রাতে দেয়াল চাপা পড়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। মৃত ব্যক্তির নাম বিজলি পাতর।
আরও পড়ুন: সদ্যোজাতর মৃত্যুতে চিকিত্সায় গাফিলতির অভিযোগ, কাঠগড়ায় ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র