পশ্চিম মেদিনীপুর: দুর্যোগ-দুর্ভোগের অন্ত নেই। নিম্নচাপের পিছনেই আরও একটি নিম্নচাপের আশঙ্কা। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, শুক্রবারে বাংলা লাগোয়া বঙ্গোপসাগরের উপর একটি ঘূর্ণাবর্ত সৃষ্টি হতে পারে। সেটিও নিম্নচাপে ঘনীভূত হবে, এমনই সম্ভাবনা দেখছেন আলিপুরের আবহবিদরা। বাড়ছে ঘাটালের (Ghatal) শিলাবতী (Shilabati) নদীর জল হু করে, তাই যাতে ঘাটালের ভাসাপোলের ওপর দিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন না হয়, তার জন্য তৎপর পৌর প্রশাসনের কর্মীরা। জোর কদমে চালাচ্ছে নজরদারি। দড়ি দিয়ে পোক্ত করে বাঁধা হচ্ছে ঘাটালের ভাসাপোলকে।
এদিকে, ঘাটাল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল চত্বরে জল জমে দুর্ভোগে পড়েছেন রোগীর আত্মীয়-সহ স্বাস্থ্যকর্মীরা। নিকাশি ব্যবস্থা বেহাল থাকায় বৃষ্টি হলেই সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল চত্বরে জমে হাঁটু সমান জল। দূর্ভোগে পড়তে হয় রোগীর আত্মীয় সহ স্বাস্থ্যকর্মীদের।
ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান ও জলে ডুবেছে। হাসপাতালে আসা বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রোগীর আত্মীয়দের অভিযোগ, বেহাল নিকাশি নালার কারণেই বৃষ্টি হলেই হাসপাতাল চত্বরে জল জমে যায়।
অবিরাম বৃষ্টির জেরে কেশিয়াড়ি ব্লকের ইতিমধ্যেই প্রায় দুশোটির কাছাকাছি কাঁচা বাড়ি ভেঙে পড়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে খবর। ইতিমধ্যেই রাতে দেয়াল চাপা পড়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। মৃত ব্যক্তির নাম বিজলি পাতর।
মধ্যম পশ্চিমবঙ্গ করে তৈরি হওয়া নিম্নচাপের জেরে এই বৃষ্টি এই নিম্নচাপ মধ্যপ্রদেশের দিকে সরে গেছে গুজরাটের দিকে। ফের একটি নিম্নচাপ তৈরি হচ্ছে। সঙ্গে মৌসুমী অক্ষরেখার প্রবল চাপ রয়েছে। সেই কারণে এই বৃষ্টিপাত বলে পূর্বাভাস আলিপুর আওয়া দফতরের।
বৃষ্টির কমলা সর্তকতা রয়েছে তিন জেলায়। দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর ও পশ্চিম মেদিনীপুরে বৃষ্টি হতে পারে ২০০ মিলিমিটার পর্যন্ত। ১০০ মিলি মিটার পর্যন্ত ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা, বাঁকুড়া, পূর্ব বর্ধমান, হুগলি, হাওড়া ও পুরুলিয়া জেলায়। ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুরে। ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইবে কলকাতা হাওড়া এবং পশ্চিম মেদিনীপুরে।
তবে আবহাওয়াবিদরা বলছেন, নিম্নচাপ ওড়িশার ভিতরে ঢুকে পড়ায় দুর্যোগ থেকে বড় রেহাই বাংলার। সর্বশক্তি নিয়ে ওড়িশাকে ভাসাচ্ছে নিম্নচাপ। রেকর্ডভাঙা বৃষ্টি পুরী-ভুবনেশ্বর-পারাদীপে। পশ্চিমে আরও এক নিম্নচাপের দাপটে ভাসছে গুজরাত। সেপ্টেম্বরে যা বৃষ্টি হয়, তার তিন গুণ বৃষ্টি হয়েছে মাত্র আট ঘণ্টায়।
মৌসমভবন সূত্রে খবর,পুরী শহরে বৃষ্টি হয়েছে ৩৪৩ মিলিমিটার। ভেঙেছে সেপ্টেম্বরে বৃষ্টির সর্বকালীন রেকর্ড। সেপ্টেম্বরে পুরীতে বৃষ্টি হওয়ার কথা ২৫৫ মিলিমিটার। ভুবনেশ্বরে বৃষ্টি হয়েছে ২০০ মিমি, পারাদীপে ২২১ মিমি।
এদিকে, গুজরাটের অবস্থাও ভয়াবহ। ভাসছে গুজরাতের রাজকোট, জুনাগড়, জামনগর। বন্ধ স্কুল-কলেজ। ব্যাহত স্বাভাবিক জনজীবন। রাস্তার উপর উঠে এসেছে নদী।
আরও পড়ুন: West Bengal Weather: বৃষ্টি কি আর থামবে না? জানুন আবহাওয়া দফতর ঠিক কী বলছে…