‘সেচ দফতরের গাফিলতিতেই ভেসে গেল বিঘার পর বিঘা জমি’, ক্ষোভে ফুঁসছেন চন্দ্রকোণার চাষিরা

TV9 Bangla Digital | Edited By: শর্মিষ্ঠা চক্রবর্তী

Sep 17, 2021 | 8:59 AM

Chandrakona: কৃষির উপরে নির্ভরশীল এই এলাকা। তাই এক মাস আগে বন্যার জল কমতেই এলাকাবাসীরা মাঠে ধান চাষ করেছিলেন।

সেচ দফতরের গাফিলতিতেই ভেসে গেল বিঘার পর বিঘা জমি, ক্ষোভে ফুঁসছেন চন্দ্রকোণার চাষিরা
চন্দ্রকোণায় ভেসে গেল বিঘার পর বিঘা ফসল (নিজস্ব চিত্র)

Follow Us

পশ্চিম মেদিনীপুর: এক মাসের ব্যবধানে আবারও বন্যা পরিস্থিতি (Flood Situation)। সেচ দফতরের গাফিলতির ফলেই চন্দ্রকোণা (Chandrakona) ১ নম্বর ব্লকের মনোহরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রায় ৩০ টি গ্রামের কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত। আর এর ফলেই এলাকাবাসীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে তীব্র ক্ষোভ।

স্থানীয়দের বক্তব্য, এক মাস আগের বন্যায় শিলাবতী নদীর জলের তোড়ে চন্দ্রকোণা ১ নম্বর ব্লকের খামারবেড়া এলাকায় ভেঙেছিল শিলাবতী নদীর বাঁধ। জল কমতেই ব্লক প্রশাসন ও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সেই বাঁধ ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে মেরামত করা শুরু হলেও, মাঝপথে সেই কাজের দায়িত্ব নেয় সেচ দফতরের আধিকারিকরা। আর তারপরই দেখা দেয় যত বিপত্তি।

সেচ দফতরের কাজ শুরু করতে সময় লেগেছিল বেশ কিছুদিন। কাজও হচ্ছিল খুব ধীর গতিতে। আর সেই কাজ চলাকালীন হঠাৎ করেই আবার বৃষ্টি। টানা বৃষ্টিতে পুনরায় শিলাবতী নদীর জল বেড়েছে। আর তাতে থমকে গিয়েছে খামারেড়িয়া এলাকায় বাঁধ মেরামতির কাজ। আর সেই ভাঙ্গা বাঁধ দিয়ে জল ঢুকে মনোহরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের খাঁপুর, গাঁচা, পাইকপাড়া, নিশ্চিন্তপুর, গ্রামের চাষের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।

এলাকাবাসীরা বলছেন সেচ দফতরের গাফিলতি রয়েছে। কারণ বাঁধ মেরামতির ক্ষেত্রে তাঁরা গড়িমশি করে কাজ করা জন্য এই অবস্থা । এমনকি এলাকার মানুষের দাবি, বেশ কয়েক বারের বন্যায় কৃষি ফসলের ক্ষতি হলেও মেলেনি কোন সরকারি সুযোগ-সুবিধা ।

কৃষির উপরে নির্ভরশীল এই এলাকা। তাই এক মাস আগে বন্যার জল কমতেই এলাকাবাসীরা মাঠে ধান চাষ করেছিলেন। এমনকি একাধিক শাকসবজিও লাগিয়েছিলেন তাঁরা। আর হঠাৎ করে মাঝ পথে আবার বন্যা সব শেষ হয়ে গেল! মাথায় হাত কৃষকদের। আগামী দিনগুলি কী করে চলবে, সেই নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তাঁরা।

এলাকাবাসীরা এই ধরনের অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করেছেন। এলাকার তৃণমূল নেতৃত্ব থেকে শুরু করে, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি- তাঁরাও সেচ দপ্তরে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন। এমনকি বিমার টাকা এখনও মেলেনি বলে জানিয়েছেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সূর্যকান্ত দোলই।

এক কৃষকের কথায়, “বাঁধটা বাঁধার কাজ চলছিল। কিন্তু একেবারে যে সময় বৃষ্টি এল, ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হবে। বাঁধটা যদি বাঁধা হয়ে যেত, তাহলে ফসলের এত ক্ষতি হত না। ২০-২৫ গ্রামের ফসলের ক্ষতি হল। আমরা যাতে বিমার টাকাটা পাই, সেটাই আবেদন জানাই।”

পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সূর্যকান্ত দোলুইয়ের কথায়, “নদীতে বাঁধ অনেকটাই বেঁধে এনেছিলাম। কিন্তু যখন সেচ দফতরের অধীনে চলে যায় তখন প্রথমে দ্রুত গতিতে কাজ চলছিল। কিন্তু পরের দিকে ঢিলেমি দিয়ে দেয়। এজেন্সির দুর্বলতার কারণেই এই ঘটনা। এক মাস আগে বল্লি ফেলে দিয়ে চলে যায়। পরে আবার এসে বল্লি গাঁথে। আর এই ঢিলেমির খেসারত দিতে হল কৃষকদের। আর এখানে বিমার টাকা পেতেও সমস্যা হয় চাষিদের। পলিসির টাকা পাওয়ায় যে পদ্ধতিটা রয়েছে, সে অত্যন্ত খারাপ।”

এ প্রসঙ্গে বিডিও রথীন্দ্রনাথ অধিকারী বলেন, “সেচ দফতরকে দ্রুত কাজ করার কথা বলা হবে। জল নামলেই তত্পরতার সঙ্গে যাতে কাজ করা হয়, সেটি দেখা হবে।” সেচ দফতরের আধিকারিকরা অবশ্য এই নিয়ে কিছু বলতে চাননি।

আরও পড়ুন: যাওয়া হল না শ্বশুরবাড়ি, জলে ভেসে আটকে গেলেন মাছ ধরার জালে! মেদিনীপুরে মর্মান্তিক ঘটনা

Next Article