পশ্চিম মেদিনীপুর: একাধিকবার প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েও গ্রামের উন্নয়নমূলক কাজের কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ভোট বয়কটের ডাক দিতেই খবর গেল সাংসদ দেবের কাছে। তড়িঘড়ি গ্রামে পৌঁছালেন বিডিও। গ্রামের নাম পশ্চিম মেদিনীপুরের গোবিন্দনগর। ঢোকার রাস্তার মুখেই প্রধান রাস্তার উপরে ঝুলছে বড় পোস্টার। তাতে লেখা,”গোবিন্দ নগর পূর্ব বুথের, বেরা মাঝি,আদক ও দাসপাড়ার, পানীয়জল ও ঢালাই রাস্তার প্রতিশ্রুতির বঞ্চনার প্রতিবাদে ভোট বয়কট।” আর তার নীচে লেখা পাড়ার বাসিন্দা।
যদিও এ বিষয়ে গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য রেখা গোস্বামীর দাবি, অল্প বিস্তার কিছু সমস্যা রয়েছে। কিন্তু এর পিছনে অন্য অভিসন্ধি কাজ করছে বলে দাবি করেন তিনি। ভোট বয়কটের ডাক দিয়ে কিছু মানুষ এলাকায় বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে চাইছেন বলে দাবি তাঁর।
ভোট বয়কটের ডাক নড়ে চড়ে বসল প্রশাসন, প্রশাসনের কাছে খবর যেতেই, তড়িঘড়ি গ্রামে গিয়ে পৌঁছয়। ব্লকের বিডিও থেকে শুরু করে, স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দিয়ে প্রশাসনের উদ্যোগে, ভোট বয়কটের পোস্টার খোলা হয়।
২০২২ পেরিয়ে ২০২৩ সাল, বছরের প্রথমেই পানীয়জল ও যাতায়তের রাস্তার জন্য ভোট বয়কটের পোস্টার। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, ব্যাবহার করতে হচ্ছে পুকুরের জল, নেই রাস্তা, তাই এবার পাড়ায় পাড়ায় ভোট বয়কটের ডাক দিয়েছেন। পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর থানার গোবিন্দনগর গ্রামে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। গ্রামের মাজি,দাস,বেরা ও আদক পাড়ার প্রায় ২০টি পরিবারের শতাধিক মানুষের অভিযোগ, প্রায় ৪০ বছর ধরে তাঁরা বঞ্চনার স্বীকার।
গ্রামবাসীদের বক্তব্য, প্রধান দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, রাস্তা ও পানীয়জল, তা নিয়েই সমস্যা তাঁদের। এই দুটি দাবি দীর্ঘদিনের। কিন্তু ভোট আসে, ভোট যায়, প্রতিশ্রুতিও মেলে। কিন্তু দাবি পূরণ হয়নি এখনও। বছরের পর বছর ধরে বঞ্চিত তাঁরা।
গ্রামের বাসিন্দাদের এখনও ভরসা একটি কল। সেখান থেকে গিয়েই লাইনে দাঁড়িয়ে জল নিয়ে আসতে হয় তাঁদের। স্থানীয় নন্দনপুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের কোনও ব্যবস্থাই করেনি সমস্যার সমাধানের। সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার আগে এই বিষয়টি আবার ইস্যু করেছেন গ্রামবাসীরা। দাবি পূরণ না হলে, তাঁরা ভোট বয়কট করবেন বলে জানিয়েছেন।
ভোট বয়কটের খবর ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসতেই নড়ে চড়ে বসেন প্রশাসনের আধিকারিকরা। বুধবার বিকেলে গ্রামে গিয়ে পৌঁছন ব্লকের বিডিও বিকাশ নস্কর। যান স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বও। বিডিও গ্রামের মানুষকে দ্রুত সমস্যা সমাধানে আশ্বাস দেন। প্রশাসনে হস্তক্ষেপে ভোট বয়কটের পোস্টারও খোলানো হয়।
যদিও এ বিষয়ে এলাকার তৃণমূল নেতা কৌশিক কুলভির দাবি, “সাংসদ দেবের নির্দেশ মতোই আমরা এসেছি। সাংসদ আমাদের বলেছে দ্রুত গ্রামবাসীদের সমস্যা সমাধান করতে।”