পশ্চিম মেদিনীপুর: একসময় বেআইনি নির্মাণ তৈরি করে তার মধ্যেই ভাড়া দেওয়া শুরু করেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।এবার আদালতের নির্দেশে ভাঙা শুরু হল সেই দোকান ও ঘর। যার জেরে পথে বসল ১৭টি পরিবার। দোকান বাঁচাতে প্রশাসনের আধিকারীকদের পা ধরে রীতিমত কান্না পরিবারগুলির। কিন্তু এরপরও শেষ রক্ষা হল না।
গ্রীন ট্রাইব্যুনালের নির্দেশে ভাঙা হচ্ছে একাধিক দোকান-বাড়ি। দোকান রক্ষার জন্য প্রশাসনের আধিকারিকদের পা পর্যন্ত ধরে কান্নাকাটি শুরু করলেন অসহায় মানুষগুলি। কিন্তু ওই যে, আদালতের নির্দেশ। তাই মঙ্গলবার থেকে বাড়ি ভাঙার কাজ শুরু করল প্রশাসন।
জানা গিয়েছে, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার রামজীবনপুর পৌরসভা এলাকায় বাবুলাল বিদ্যাভবনের একটি ডোবা পাড়ে ভরাট করে বড় বিল্ডিং করে সেখানে ব্যবসা করার জন্য দোকান ভাড়া দেয় স্কুল কর্তৃপক্ষ। সে প্রায় দশ বছর আগে। এবার সেই সময় পুকুর ভরাট করা নিয়ে স্কুল পরিচালন কমিটির মধ্যে বিভাজন তৈরি হয়। তখন একপক্ষ দ্বারস্থ হয় আদালতের।
কিন্তু এলাকার সাধারণ মানুষকে ভুল বুঝিয়ে ওই কমিটি লক্ষ লক্ষ টাকা জমা নেয়। মাসিক ২০০ টাকার ভাড়া বাবদ হিসাবে ১৭ জনকে এই বাড়ি গুলি ভাড়ায় দেওয়া হয়। এরপর আদালত নির্দেশ দেয় ওই বাড়ি গুলি অবিলম্বে ভেঙে দিতে হবে। আর সেই মতো আদালতের নির্দেশে বাড়ি ভাঙার অর্ডার আসতেই মঙ্গলবার থেকে শুরু হল কাজ।
এতসবের জাঁতাকলের মধ্যে পড়েছে অসহায় ওই ১৭ টি দোকানদারদের পরিবার। কারণ তাদের এই দোকানের উপরেই চলে জীবিকা নির্বাহ। এখন এই দোকান ভেঙে দেওয়ার ফলে আগামীদিনগুলিতে কী করবেন তাঁরা বুঝে উঠতে পারছেন না। ইতিমধ্যেই পুনর্বাসনের দাবি জানিয়েছেন পৌরসভা কর্তৃপক্ষ ও ব্লক প্রশাসনের কাছে।
বিডিও রথিন্দ্র নাথ অধিকারী জানান, “আদালতের নির্দেশে এই দোকান ভাঙা হচ্ছে। যারা এখানে রয়েছেন তাদের যাতে পুনর্বাসন করা যায় সেই কারণে পৌরসভা ও ব্লক প্রশাসনের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চলছে।” রামজীবনপুর পৌর প্রশাসক বলেন, “আমি ঘটনার কথা জেনে ওদের সঙ্গে দেখা করতে আসি। ওদের জন্য সহমর্মিতা পোষণ করি। ওদের যে চেয়ারম্যান বারবার বলেছেন তোমরা করো। আমি তোমাদের পাশে রয়েছি। কিন্তু আমি পৌরসভার কোনও লিখিত কিছু পাইনি। বা স্কুল কমিটির পক্ষ থেকে কারা-কারা যুক্ত ছিল তাঁদের কথা জানা নেই। কিন্তু এরমধ্যেও আমরা চেষ্টা চালাব যাতে পুনর্বাসন দেওয়া যায়।”
যদিও, আজ সকাল থেকে বাড়ি ভাঙার কাজ শুরু হলে ঘটনাস্থলে ছিল কড়া পুলিশি প্রহরা, যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে। মহকুমা প্রশাসনের আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন ঘটনাস্থলে। অসহায় পরিবার গুলির অভিযোগ তাদের কথা ভাবছে না পৌরপ্রশান ও স্কুল কমিটি। যদিও, তারা বলেন স্কুল ও পৌরসভা সকলেই তাদের সঙ্গে প্রতারণা করল।