পশ্চিম মেদিনীপুর: স্কুল খোলা নিয়ে কম জলঘোলা হচ্ছে না। রাজ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়া বাকি সব কিছু কীভাবে খোলা রয়েছে সেই নিয়ে বারংবার কটাক্ষের মুখে পড়েছে রাজ্য সরকার। তবে এবার পশ্চিম মেদিনীপুরে দেখা গেল উল্টো ছবি। কোনও রকম সরকারি নিষেধাজ্ঞা ছাড়াই খুলে গিয়েছে বিদ্যালয়। তবে করোনাবিধিকে মান্যতা দিয়ে চলছে পঠন-পাঠন।
আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি সরকারী ঘোষণা অনুযায়ী খোলা হবে স্কুল। এতে বেজায় খুশি অভিভাবক থেকে শুরু করে শিক্ষক-শিক্ষিকারা। কিন্তু পাড়ায় পাড়ায় শিক্ষালয়ের ক্ষেত্রে কিছুটা হলেও সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে শিক্ষকদের, এমনি জানালেন তারা।
তবে উল্টো ছবি দেখা গেল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা ২ নম্বর ব্লকের খিরাটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।সরকারি ঘোষণার আগে থেকেই শিক্ষকরা ক্লাস শুরু করে দিয়েছেন। ১৩৫ জন ছাত্রছাত্রীকে রমরমিয়ে চলছে সেই ক্লাস। আর এতে কিন্তু কোনও আপত্তি নেই পড়ুয়া থেকে অভিভাবকদের। স্কুল খোলাতে বেজায় খুশি হয়েছেন তাঁরা।
এক অভিভাবক জানালেন, “করোনা বিধি মেনেই ক্লাস হচ্ছে। আমরা খুবই খুশি। ছেলে-মেয়েরা ভুলেই গিয়েছিল পড়াশোনা কী? ওদের জন্য এটা দরকার ছিল। পড়াশোনার থেকে ওরা আলাদা হয়ে গিয়েছিল। এই স্কুল খোলায় আমরা খুশি।” অন্যদিকে, এক শিশু বলে, “স্কুলে এসে খুব ভালো লাগছে। কবে এসেছিলাম ভুলে গিয়েছি। পড়াশোনাও ভুলে যাচ্ছি। পাশাপাশি অনেকদিন পর বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে দেখা হয়েছে। ভালো লাগছে। ”
এলাকার বিশিষ্ট শিক্ষক মঙ্গল প্রসাদ মাইতি বলেন, “এই করোনা পরিস্থিতিতে আমার ব্যক্তিগত ভাবে মনে হয়েছে সব থেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে শিক্ষা ব্যবস্থার। বিশেষ করে অন্যান্য সমস্ত দিক যখন প্রায় চালু হয়েও গিয়েছে তখন শিক্ষা ব্যবস্থা কিন্তু মার খাচ্ছিল। এই প্রেক্ষিতে আমি অন্তর থেকে অনুভব করেছিলাম যে বিদ্যালয় চালু হওয়া খুবই প্রয়োজন। তাই আমি গাছ তলায় গিয়ে, এবং পাড়ায়-পাড়ায় গিয়ে পড়ানো শুরু করি। কিছু-কিছু শিশু একেবারেই পড়াশোনাই ভুলে গেছিল। তাই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।”
আরও পড়ুন: ছবি: স্মার্ট ফোন নেই, অনলাইন ক্লাস শুধুই স্বপ্ন! সুন্দরবনের পড়ুয়াদের ভরসা গাছ তলা