শালবনি: জিন্দলদের ফিরিয়ে দেওয়া জমিতেই ইস্পাত কারখানা চালু করতে চলেছেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। একদিন আগেই মাদ্রিদ থেকে এ ঘোষণা করে দিয়েছেন মহারাজ। তাতেই খুশির হাওয়া শালবনিতে। উচ্ছ্বসিত আসনাসুলি, জামবেদিয়া সহ ২৮ টি গ্রামের জমিদাতারা। প্রসঙ্গত, বাম আমলেই শালবনি ইস্পাত এবং বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরির কাজে হাত লাগিয়েছিল জিন্দল গোষ্ঠী। ৪৩০০ একর জমি দেওয়া হয় জিন্দালদের। ২০০৮ সালের ২ নভেম্বর সেই কারখানার ভিত্তিপ্রস্তরও স্থাপন করেছিলেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। কিন্তু, কাজ যখন মধ্যগগণে তখনই আচমকা ঘটে যায় এক বড় ঘটনা। মুখ্যমন্ত্রীর ফেরার পথে হানা দেয় মাওবাদীরা। কনভয়ে হয় ল্যান্ডমাইন হামলা। তারপর থেকে ওই এলাকায় মাওবাদীদের ব্যাপক উত্থান দেখতে পাওয়া যায়। পথ প্রশস্ত হয় লালগড় আন্দোলনে। এদিকে এরপর থেকেই কার্য়ত হাত গুটিয়ে ফেলে জিন্দলরা। পড়ে থাকে জমি। থমকে যায় কারখানার কাজ।
তারপর গঙ্গা দিয়ে বয়ে গিয়েছে অনেক জল। এগারোতেই রাজ্যে হয় পালাবদল। ফের শালবনির দিকে নজর যায় নয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। ২০১৪ সালে জিন্দালদের সরাসরি হুঁশিয়ারিও দিতে দেখা যায় মমতাতে। সাফ জানিয়ে দেন শিল্পের জন্য অধিকৃত জমি ফেলে রাখা যাবে না। কাজ না হলে ব্যবস্থা নেবে সরকার। এরপরই ১৩৫ একর জমিতে সিমেন্টের কারখানা তৈরি করে জিন্দলরা। ২০১৮ সালে সেই কারখানার উদ্বোধনও করেন মমতা। এদিকে ফিনিশিং স্টিল, সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প, কর্মীদের আবাসন ইত্যাদি তৈরির জন্য বড় জমি লাগে জিন্দলদের। জানা যায় পরিমাণ প্রায় ১২০০ একর। এই কাজের জন্য নিজেদের হাতে ১৫০০ একর জমি রেখে বাকি ফিরেয়ে দেয় জিন্দলরা।
সেই ফিরিয়ে দেওয়া জমিতেই এবার শিল্প ভাবনা সৌরভের। প্রসঙ্গত, আসানসোলের কল্যাণেশ্বরী শিল্পতালুকে একটি ছোট বেসরকারি ইস্পাত কারখানার বিপণন দূত সৌরভ। সেখানে তাঁর অংশীদারি রয়েছে বলেও খবর। শোনা যাচ্ছে এই কোম্পানিরই বড় মাপের কারখানা তৈরি হতে পারে শালবনিতে। প্রস্তাবিত লগ্নি প্রায় ২৫০০ কোটি। প্রায় ৬ হাজার জনের কর্মসংস্থানের সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছে।