মেদিনীপুর: হাউহাউ করে কাঁদছেন মা। অসহায় বাবা তো কাঁদতে-কাঁদতে মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদার পায়েই পড়লেন। একটাই দাবি, ‘মেয়েকে বাঁচান’। শুধুই কাকুতি-মিনতি যদি মেয়েটাকে বাঁচানো যায়। অভিযোগ, ভুল চিকিৎসা করেছে হাসপাতাল। তারপরই কার্যত মৃত্যু শয্যায় ওই নাবালিকা।
কী হয়েছিল কিশোরীর?
পশ্চিম মেদিনীপুরের কলগাং এলাকার বাসিন্দা রিঙ্কু রায়। তাঁর মেয়ে সুপ্রিয়া রায় অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। সুপ্রিয়ার বয়স তেরো। সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী সে। গত শুক্রবার সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। জানা গিয়েছে, ওই নাবালিকার অ্যাপেনডিক্স ধরা পড়ছিল। অভিযোগ, ওই দিনই কোনও রকম শারীরিক পরীক্ষা না করিয়ে সোজা অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। সুপ্রিয়ার পরিবারের দাবি, অস্ত্রোপচারের পর নাবালিকার রক্তপাত হতে শুরু করে। সেই রক্তপাত বন্ধ না হওয়ায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে রোগী। তারপরে তাকে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করা হয় আইসিইউতে।
রবিবার ভোরবেলা পরিবারের সদস্যদের জানানো হয় তাঁদের মেয়ের শারীরিক অবস্থা গুরুতর। আইসিউ-তে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। এরপরই বিক্ষোভ দেখান বাড়ির লোকজন। কাকতালীয় ভাবে বিশেষ কাজে আজ হাসপাতালে আসেন স্বনির্ভর গোষ্ঠী ও স্বনিযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা। তাঁকে দেখতে পেয়েই কাঁদতে কাঁদতে তাঁর পায়ে পড়ে যান রোগীর বাবা। কাকুতি মিনতি করেন। মন্ত্রী আশ্বাস দেন বিষয়টি খতিয়ে দেখার। তিনি জানান যে সুপারের সঙ্গে তিনি কথা বলছেন। ইতিমধ্যেই মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আউটপোস্টে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন বাড়ির লোকজন ।
বীরবাহা বলেন, “আমরা ভিতরে ঢুকে বাচ্চাটিকে দেখে এসেছি। সুপারের সঙ্গে কথাও বলব যাতে চিকিৎসা ভাল করে হয়।”
রিঙ্কু রায় বলেন, “চিকিৎসক বলেছিল অ্যাপেডিক্স হয়েছে। অপারেশন করতে হবে। অপারেশন হওয়ার পর বলছে মেয়ের শরীরে রক্ত থাকছে না কমে যাচ্ছে। আমরা জোগাড় করে রক্ত এনে দিলাম। ডাক্তারের অবহেলায় এটা হয়েছে। রাত্রিবেলা দুবার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। আমাদের বলেনি। বিনা টেস্টে অপারেশন করল কীভাবে ওরা?” বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করেছেন মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষ। বলেছেন, “বারবার এই ছবি দেখা যাচ্ছে। খোদ মুখ্যমন্ত্রীর ভুল চিকিৎসা হয়েছে। উনি তো সাধারণ মানুষ। তাহলে কার উপর ভরসা করব?” যদিও, এই বিষয়ে হাসপাতাল সুপারের প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।