মেদিনীপুর: ৬০ বছরের বেশি সময় ধরে ভোট হয়নি দাসপুর (Daspur) ব্লকের সীতাপুর কৃষি উন্নয়ন সমিতিতে। বাম আমলেও এলাকায় প্রভাব খারাপ ছিল না। এলাকার লোকজনের দাবি, তাই কংগ্রেসের সঙ্গে বামেরা মিলেমিশে এই সমিতি চলেছে। পরে তৃণমূলের জমানায় হাওয়া ঘুরতে থাকে। এবার ভোট হল এই কৃষি উন্নয়ন সমিতিতে। আর প্রথমবার ভোটে লড়ে জয় জয়কার তৃণমূলের। সীতাপুর কৃষি উন্নয়ন সমিতিতে ৪০টি আসনে নির্বাচন হয় রবিবার। বাম ও তৃণমূল সব আসনেই প্রার্থী দেয়। বিজেপি দিয়েছিল ২৫টি আসনে। এদিন ভোটপর্ব চলে দিনভর। গণনার শেষে দেখা যায় এখানে খাতাই খুলতে পারেনি বিজেপি। তবে তৃণমূল ৩১টিতে এবং বামেরা ৯টিতে জয়ী হয়। যদিও এই সমিতির নির্বাচনে সরাসরি কোনও রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করে না। তাদের সমর্থনে থাকা প্রার্থী ভোট লড়ে। এখানেও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
যদিও বিজেপির দাবি, তাদের সমর্থকদের চোখ রাঙিয়ে, ভয় দেখিয়ে এই ভোট থেকে দূরে রাখা হয়েছে। এমনকী তৃণমূল-সিপিএম জোট করে চলছে বলেও দাবি তাদের। অন্যদিকে সিপিএমের বক্তব্য, তারা এই ফলাফলে নিজেদের নৈতিক জয় দেখতে পারছে। তাদের কথায়, এত বছর ধরে এখানে ভোটের দাবি করছিল বাম কর্মীরাই। অবশেষে তা হল। এটাই জয়।
দাসপুর-২ বিজেপি দক্ষিণ মণ্ডলের সভাপতি শান্তনু সর্দার বলেন, “তৃণমূলের প্রশাসন হাতে, সবরকম ক্ষমতা রয়েছে। ওরা চেষ্টা করেছে যাতে আমাদের একজন সদস্যও জিততে না পারেন। সব কিছু ওদের হাতে। ওরা সফল হয়েছে। বাম-তৃণমূল মিলেমিশে সদস্য দিয়ে ভোট করিয়েছে। আমাদের অনেক প্রার্থীকে তো ভয়ও দেখানো হয়েছে। এসব রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে আমরা যেভাবে লড়েছি এটাই অনেক।”
তবে সিপিএমের অমল ঘড়ুইয়ের বক্তব্য, “বাম তৃণমূল জোট করে চলছে একেবারেই এরকম নয়। নির্বাচন না করে মনোনয়নের মাধ্যমে সমিতি চলছিল। তবে বেশিরভাগই তৃণমূলের প্রতিনিধি ছিলেন। অতীতে যা যা দুর্নীতি হয়েছে, তার প্রতিবাদও আমাদের তরফে করা হয়েছে। প্রতিবাদ শুধু না। আমরা বহুদিন ধরেই চাইছি এই সমবায়ে ভোট হোক। আজ নির্বাচন হল। তবে আমরা বলব জয় আমাদেরই। কারণ, দীর্ঘদিন ধরে এই ভোটের দাবি আমরাই তুলছিলাম। সেটা আজ হল।” স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক মমতা ভুঁইয়্যা অবশ্য বলেন, “খুব ভাল লাগছে। এই সরকারের উন্নয়ন দেখে এখানকার মানুষ এগিয়ে এসেছেন।”