মেদিনীপুর: বয়স সত্যিই একটা সংখ্যা হরিহরপুরের অনিল পাত্রের কাছে। সে কারণেই ৯১ বছর বয়সেও ভোটের ময়দানে নেমেছেন তিনি। ভোটে জিতে এই বয়সেও জনপ্রতিনিধি হতে চান ‘মাস্টারমশাই’। কাজ করতে চান মানুষের জন্য। তৃণমূলের প্রার্থী তিনি। ৪৫ বছর ধরে ভোটের ময়দানে আছেন। কখনও হারেননি। সেই প্রার্থীই জিতবেন বলে এবারও আশাবাদী দল। তাঁর জয় নিশ্চিত, মানছে বিরোধীরাও। বলছে, উনি মানুষের জন্য সবসময় কাজ করেন। মানুষের পাশে থাকেন। মানুষও এবার সুযোগ পেয়েছেন, ওনাকে দু’হাত ভরেই দেবেন। সবং পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী হয়েছেন অনিল পাত্র।
১৯৬২ সালে রাজনীতিতে হাতেখড়ি অনিল পাত্রের। কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন। এরপর ১৯৭৮ সালে প্রথমবার ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ভোটে হাত-প্রার্থী হন তিনি। সবং ব্লকের নারায়ণবাড়-৭ অঞ্চল থেকে প্রথমবার কংগ্রেসের টিকিটে জিতেছিলেন। প্রধান হয়েছিলেন সেবার। ২০১৮ অবধি জিতে গিয়েছেন প্রতিবার। নবতিপর শিক্ষক এবারও ভোটে লড়ছেন। অনিলবাবু যেন ‘অপরাজিত যুবা’।
রাজ্যের বর্তমান মন্ত্রী মানস ভুঁইঞার বিধানসভা কেন্দ্র সবং। এই মানসবাবুর সঙ্গে দীর্ঘদিনের রাজনীতিক জীবন অনিলবাবুর। ২০১৫ সালে মানস ভুঁইঞা যখন কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিলেন, অনিল পাত্রও কংগ্রেসের সঙ্গে তাঁর চার দশকের সম্পর্ক ছিন্ন করে তৃণমূলে যোগ দেন। ২০১৮-র পঞ্চায়েত ভোটে জিতে সবং পঞ্চায়েত সমিতির খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ হন তিনি। এবার ১৯ নম্বর আসনে প্রার্থী তিনি।
স্থানীয় বাসিন্দাদের মুখে অনিল পাত্রের প্রশংসা। এরকমই একজন সুধাংশুশেখর রাউল। তিনি বলেন, “খুবই ভাল মানুষ উনি। সবসময় মানুষের পাশে আছেন। কখনও কারও সমস্যা হলেই এগিয়ে আসেন। বিপুল ভোটে জিতবেন।” আরেক বাসিন্দা সুকুমার রাউলের কথায়, “উনি নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করেছেন। কোনও রাজনীতির রং বাছেননি। অসীম ধৈর্য তাঁর। জীবনযাপন খুবই সাদামাটা।”
যাঁকে নিয়ে এত হইহই, সেই অনিল পাত্র বলেন, “আজ পর্যন্ত কেউ বলতে পারবে না কাউকে ফিরিয়ে দিয়েছি। কোনও দল, রং দেখি না। আজ এক পার্টি করছে, কাল হয়ত সে অন্য আদর্শে বিশ্বাস রাখবে। কিন্তু ভুললে চলবে না, সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই।”