পশ্চিম মেদিনীপুর: অতি গভীর নিম্নচাপের জেরে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়েছে হাসপাতাল। বৃষ্টিতে জেনারেটরও চালানো যায়নি রাতভর। শুক্রবার পার করে শনিবার সকালেও রোগীদের চরম দুর্ভোগের ছবি ধরা পড়ল চন্দ্রকোণা গ্রামীণ হাসপাতালে। শুক্রবার রাতে প্রবল ঝড় বৃষ্টিতে এই হাসপাতালের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় বলে অভিযোগ রোগী ও তাঁদের আত্মীয়দের। তাঁদের অভিযোগ, মোমবাতি, টর্চ জেলে রাতে জরুরি বিভাগের কাজ করতে হয় নার্সদের। এদিকে কারেন্ট না থাকায় পানীয় জলের সমস্যাও তৈরি হয় সকালে। বাইরে থেকে জল এনে দিতে হয় রোগীর আত্মীয়দের। এ নিয়ে বিস্তর ক্ষোভও উগরে দেন তাঁরা।
হাসপাতালের এক নার্স সুমনা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “রাত থেকে বিদ্যুৎ নেই। সারারাত অন্ধকারে হাসপাতাল। একটা এমার্জেন্সি আলো জ্বালানো হলেও কিছুক্ষণ চলে। মাঝে ডাক্তার এসে আমাদের মোমবাতি দিয়ে যান। এভাবেই চলে। হাসপাতালের যে জেনারেটর সেটা অপারেশনের জন্য ব্যবহার হত। কিন্তু সেটা এখন ঠিকমতো কাজ করছে না। মোবাইলের টর্চ জ্বেলে কাজ করতে হয়েছে।”
টুম্পা ভালুক নামে এক রোগীর আত্মীয়ের কথায়, “সারা রাত কারেন্ট নেই, ঘুটঘুটে অন্ধকার। আমরা বললাম, পাখা লাগবে না। অন্তত একটা আলোর তো ব্যবস্থা করুন। সেটাও দিতে পারেনি। রাতের বেলায় বাচ্চা বেড থেকে পড়ে যাচ্ছে। বাথরুম যাব একটু জল নেই। খাওয়ার জল নেই। সকালেও জল নেই। অসুস্থ মানুষকেও রাস্তার ধারে নিয়ে গিয়ে মুখ ধুইয়ে, জল খাইয়ে আনছেন কেউ কেউ।”
এই গ্রামীণ হাসপাতাল চন্দ্রকোণার মানুষের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতাল। যে কোনও বিপদেই রোগী নিয়ে প্রাথমিকভাবে এখানেই আসেন আত্মীয়রা। সেই হাসপাতালের বিরুদ্ধে অব্যবস্থারও অভিযোগ উঠছে। বিদ্যুৎ পরিষেবায় সমস্যা তো রয়েছেই। সঙ্গে হাসপাতালে স্যালাইনের অভাব বলেও এক রোগীর আত্মীয় শনিবার অভিযোগ তোলেন।
এক রোগীর আত্মীয় দিলীপ সরকার বলেন, “আমার পেশেন্টকে কেমো দেওয়ার পর সাইড এফেক্ট হয়। আমরা এখানে আনি। পটাশিয়াম, সোডিয়াম কমে গেছে বলে স্যালাইন দেওয়ার জন্য এনেছিলাম। ওরা বলছে হবে না এখানে। স্যালাইন নেই নাকি এখানে। দু’দিন ধরে এই অবস্থা।” বাইরে থেকেও কেউ কেউ স্যালাইনের বোতল কিনে আনছেন। তবে রোগী তা পাচ্ছেন। হাসপাতালের বিএমওএইচ স্বপ্ননীল মিস্ত্রির কথায়, পুরো বিষয়টি আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখছি। যত শীঘ্র পরিষেবা স্বাভাবিক করা যায়, সে ব্যবস্থাই হচ্ছে।