West Medinipur: অবহেলার অভিশাপ মুছে নবরূপে আত্মপ্রকাশ চন্দ্রকোনা ফাঁসিমঞ্চের!

TV9 Bangla Digital | Edited By: অবন্তিকা প্রামাণিক

Oct 09, 2021 | 6:57 PM

Chandrakona: শুক্রবার বিকেলে নবরূপে সজ্জিত সেই ফাঁসিডাঙ্গার উদ্বোধন করা হয়।

West Medinipur: অবহেলার অভিশাপ মুছে নবরূপে আত্মপ্রকাশ চন্দ্রকোনা ফাঁসিমঞ্চের!
নবরূপে আত্মপ্রকাশ চন্দ্রকোনা ফাঁসিমঞ্চের

Follow Us

চন্দ্রকোনা:  অবশেষে শাপমোচন। দীর্ঘ অবহেলার অভিশাপ মুছে পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে আত্মপ্রকাশ করল চন্দ্রকোনার ঐতিহাসিক ফাঁসির মঞ্চ। ব্রিটিশ শাসকের ভুমিরাজস্ব নীতির বিরুদ্ধে জঙ্গলমহলের (Jangalmahal) কৃষক আন্দোলন চুয়াড় বিদ্রোহের স্মৃতি বিজড়িত। শুক্রবার বিকেলে নবরূপে সজ্জিত সেই ফাঁসিডাঙ্গার উদ্বোধন করা হয়। প্রায় আশি লক্ষ টাকা ব্যয়ে নতুনভাবে গড়ে তোলা হয় এই ঐতিহাসিক স্থান।

এদিনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক রেশমি কোমল ও জেলা প্রশাসনে উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। ছিলেন মহকুমা শাসক সুমন বিশ্বাস। প্রথম দিনই সেই ফাঁসিমঞ্চ দেখতে উপচে পড়ে ভিড়, যা এককথায় জনজোয়ার। গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, পরবর্তীকালে পর্যটকদের প্রবেশের জন্য ৫ টাকা করে টিকিট করে দেওয়া হবে। ঐতিহাসিক এই ফাঁসিডাঙ্গা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সেই অর্থ কাজে লাগানো হবে। এতে রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা হবে না। এদিকে, দীর্ঘদিনের দাবি পূরণে খুশির হাওয়া স্থানীয় মহলে। বিশেষত পুজোর মুখেই নবরূপে সজ্জিত ফাঁসিডাঙ্গা যেন চন্দ্রকোনাবাসীর কাছে এক উপহারস্বরূপ।

প্রসঙ্গত, ১৭৫৭ সালে সিপাহি বিদ্রোহের হাত ধরে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে যে আগুন জ্বলতে শুরু করেছিল তা আর থামেনি। বরং সময়ে সঙ্গে একে একে মাথাচাড়া দিয়েছে বিভিন্ন ক্ষেত্র ও স্তরের বিদ্রোহ ও আন্দোলন। পরবর্তীতে একাধিক দমননীতি এনেও নিজেদের পালে আর হাওয়া টানতে পারেনি ব্রিটিশ শাসকরা। চুয়াড় বিদ্রোহ এরকমই এক বিদ্রোহ, যা ভুমিরাজস্ব নীতির বিরুদ্ধে জঙ্গলমহলের অধিবাসীদের এক বিরাট আন্দোলন। অর্থাত্ বাংলায় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এই অঞ্চলের জমির ওপর যে চড়া ভূমিরাজস্ব ধার্য করে তারই প্রতিবাদে চুয়াড় আন্দোলন সমগ্র জঙ্গলমহল জুড়ে শুরু হয়। শোনা যায়, ১৭৯৮ সালে চুয়াড় বিদ্রোহ দমনকালীন সময়ে অন্যত্র তা প্রায় অস্তমিত হলেও চন্দ্রকোনায় থামেনি। বরং স্থানীয় দুই বিদ্রোহী ভাই, যুগল সর্দার ও কিশোর সর্দার সেই আন্দোলন চালিয়ে গিয়েছিল। পরে সেই আন্দোলনেও ইতি পড়ে। যার ফলস্বরূপ ১৮১২ সালে চার্লস রিচার্ড ও মিস্টার হেনরীর নির্দেশে তাদের ফাঁসির আদেশৃ হয়। চন্দ্রকোনার ২ নম্বর ব্লকের বসনছোড়া গ্রাম পঞ্চায়েত নীলগঞ্জের এক জঙ্গলে ঘেরা উঁচু ঢিপিতে। আর সেই ঢিপিই পরবর্তীকালে এলাকাবাসীর কাছে ফাঁসি মঞ্চ বা ফাঁসিডাঙ্গা হিসাবে পরিচিতি লাভ করে। কথিত আছে, এক এক করে প্রায় ১৪ জনকে ওইস্থানেই ফাঁসি দিয়েছিল ইংরেজ শাসকরা। পরবর্তীকালে ভারত স্বাধীন হওয়ার পর বাম আমলে ফাঁসির মঞ্চকে সংস্কার করা হয়ঁ। কিন্তু তারপর আর প্রশাসনের নজরে আসেনি ফাঁসিডাঙ্গা। ফলে দীর্ঘদিন তা অবহেলায় পড়ে ছিল। যদিও ফাঁসির মঞ্চকে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার দাবি এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের। অবশেষে ব্লক প্রশাসনের উদ্যোগে তা বাস্তবায়িত হল।

আরও পড়ুন: Building Collapse: শহরে ফের ভেঙে পড়ল পুরানো বাড়ি, মৃত ১

Next Article