চন্দ্রকোনা: কয়েক দিন গলার নলিকাটা অবস্থায় উদ্ধার হয় গৃহবধূর দেহ। কৃষিজমি থেকে দেহ উদ্ধার করে চন্দ্রকোনা থানার পুলিশ। শুরু হয় তদন্ত। সেই তদন্ত এগোতেই জানা যায় ওই মহিলাকে খুন করে দেহটি জমিতে ফেলে রেখে গিয়েছিল তাঁর প্রেমিক। শুধু তাই নয়, ওই মহিলার লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়েছিল সে। ঘটনার প্রায় তেরো দিন পর অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত মহিলার নাম শ্রীমতি বর্মণ (৩০)। তিনি উত্তর দিনাজপুর জেলার হেমতাবাদের বাসিন্দা। তাঁর স্বামী মারা যান বেশ কয়েক বছর আগে। তারপরে শ্রীমতি বর্মণের সঙ্গে ফেসবুকে আলাপ হয় পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনার বালা এলাকার বাসিন্দা সৌরভ বেহেরার। অভিযোগ, শ্রীমতি বর্মণের আর্থিক স্বচ্ছলতা ভাল থাকার কারণে সৌরভ ভালবাসার ছলনায় ধাপে ধাপে বহু টাকা ধার নেয় তাঁর কাছ থেকে। এমনকী, বিয়ে করবে বলেও প্রতিশ্রুতি দেয়। এক বছর আগে মন্দিরে বিয়ে করেন তাঁরা। সেই সূত্রে বেশ কয়েক লক্ষ টাকা ও শ্রীমতির কাছ থেকে হাতিয়ে নেয় সৌরভ। অপরদিকে, ওই মহিলা প্রেমিককে চাপ দিতে থাকে আইনিভাবে বিয়ে করার জন্য। কিন্তু এরপরও কোনও কাজ না হওয়ায় শেষমেশ পুলিশকে জানিয়ে দেবেন বলে সৌরভকে ব্ল্যাকমেল করেন শ্রীমতি। এমনটাই পুলিশ সূত্রে খবর।
এরপরই খুনের ছক কষে সৌরভ। হঠাৎ করে মহিলাকে চন্দ্রকোনা আসার জন্য বলে। অভিযোগ, চন্দ্রকোয় আসতেই রাতের অন্ধকারে ধারাল ছুরি দিয়ে তাঁর গলার নালী কেটে খুন করে রাস্তার ধারে ধান জমিতে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায়।
প্রথমে চন্দ্রকোনা থানার পুলিশ খুন হওয়া মহিলার পরিচয় জানতে বিভিন্ন থানায় খবর পাঠায়। এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা শুরু হয়। মোবাইলের টাওয়ার লোকেশনও খতিয়ে দেখা হয়। তারপরে উঠে আসে সৌরভ বেহারা নাম। পুলিশ জানিয়েছে, খুনের পরই গা ঢাকা দেয় সৌরভ। পুলিশ তদন্ত নেমে সৌরভকে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ডেবরা থেকে গ্রেফতার করে। এই ঘটনায় আরও বেশ কয়েকজন জড়িত আছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। ধৃত সৌরভকে মঙ্গলবার তোলা হবে ঘাটাল আদালতে। জানা গিয়েছে, মৃত মহিলার নবছরের এক পুত্র সন্তান রয়েছে। অপরদিকে, সৌরভেরও স্ত্রী পুত্র রয়েছে।