কালনা : হাসপাতালে পুত্র সন্তান হলে দিতে হবে ৫০০ টাকা। আর কন্যা সন্তান হলে দিতে হবে ৩০০ টাকা। এটাই যেন অলিখিত নিয়ম হয়ে গিয়েছে কালনা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে। সদ্যোজাতের জন্ম হলেই হাসপাতালে আয়াদের এমন দাবি পূরণ করতে হয়। এরা মূলত হাসপাতালের অস্থায়ী কর্মী। ওয়ার্ড গার্ল নামেই তারা পরিচিত। এরা সকলেই হাসপাতালে চুক্তিভিত্তিক কর্মী। খুশির মুহূর্তে আবদার করা এক বিষয়, কিন্তু এ যে রীতিমতো হকের পাওনা বুঝে নেওয়া। প্রসূতির পরিবারের কাছ থেকে দাবি মতো টাকা না পেলেই শুরু হয় দুর্ব্যবহার। হাসপাতালের লেবার রুমের আয়ারা বা ওয়ার্ড গার্লদের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ তুলেছেন প্রসূতিদের পরিজনরা।
শুধু তাই নয়, এমনকী হাসপাতালের চতুর্থ তলার লেবার রুম থেকে প্রসূতি এবং সদ্যোজাতকে ওয়ার্ডে নামতে পর্যন্ত বাধা দেওয়া হয় টাকা না মিললে। অভিযোগ,লেবার রুম থেকে নামতেও চাই না আয়ারা। দীর্ঘদিন ধরেই প্রসূতি ও তাদের পরিবারের সঙ্গে কালনা হাসপাতালের আয়াদের এমন ব্যবহার চলে আসছে। সরকারি হাসপাতালে আয়াদের এই টাকার দাবির অভিযোগ সম্পর্কে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছিল। তবে তাঁরা নাকি কিছুই জানেন না এই বিষয়ে। হাসপাতালের অতিরিক্ত সুপার সুব্রত সামন্ত জানান, “এমন কোনও অভিযোগ আমরা এখনও পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তবে তিনি জানিয়েছেন, “বিষয়টি আমরা অবশ্যই গুরুত্ব দিয়ে দেখব। প্রয়োজন হলে আমরা সেখানে ভিজিট করে বা লেবার রুমে যে ওয়ার্ড গার্লরা রয়েছেন, যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছে, তাঁদের ডেকে আমরা বিষয়টি নিয়ে কথা বলব। যাতে দ্বিতীয় বার এভাবে সাধারণ মানুষের থেকে টাকা তোলা বা হেনস্থার অভিযোগ কালনা হাসপাতালে আর না হয়। এমন অভিযোগ যদি প্রমাণিত হয়, তাহলে বিষয়টি নিয়ে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এই বিষয়ে হাসপাতালে নিয়োগ সংক্রান্ত ইনচার্জ অনিমেষ ঘাঁটি জানিয়েছেন, “আমি ডিউটিতে আসার পর শুনতে পাই লেবার রুম থেকে টাকা পয়সা নেওয়ার অভিযোগ উঠছে। বিষয়টি শুনে আমি থার্ড ফ্লোরে যাই। সেখানে দেখি সত্যিই রোগীর পরিজনরা জড়ো হয়েছে। তাঁরা আমার কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন। এই ধরনের বিষয় বাঞ্ছনীয় নয়। ওরা লিখিতভাবে সুপারের অফিসে বিষয়টি নিয়ে জানিয়েছে।”