বর্ধমান: কী কাণ্ড! এসআই (SI)-এর সই জাল করে স্কুল ফান্ডের টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগ স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। ঘটনার খবর প্রকাশ্যে আসতেই সরগরম ওই স্কুলে সহ শিক্ষক থেকে অভিভাবকরা। অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের নাম প্রশান্ত দাস। তাঁর বিরুদ্ধে টাকা তছরুপের অভিযোগে সরব হয়েছেন অভিভাবকরা। তাঁদের অভিযোগ, প্রধানশিক্ষক স্কুলে অনিয়মিত আসেন। স্কুলের বিভিন্ন ফান্ড নিয়ে যথেচ্ছাচার করেছেন। এর জেরে স্কুলে ছাত্রছাত্রী কমছে।
পূর্ব বর্ধমানের রায়না ব্লকের চকচন্দন দুর্গাদাস হাইস্কুলের ঘটনা। সূত্রের খবর, সেখানে পরিকাঠামো ঠিক থাকলেও ভিতরের অবস্থা বেহাল। স্কুলের প্রবীণ শিক্ষক কিশোরকুমার মজুমদার ও অন্য আর এক শিক্ষক শিবমণি সাউ সহ অনেকেই জানান যে, এই স্কুলে ম্যানেজিং কমিটি নেই। ২০১৬ সালে থেকে অ্যাডমিনিস্ট্রেটর হিসেবে দায়িত্বে আছেন এস আই সুশান্ত ঘোষ। ২০১৯ সালে এই স্কুলের প্রধানশিক্ষক হিসেবে দায়িত্বে আসেন প্রশান্ত দাস। শিক্ষকদের একাংশের অভিযোগ, ২০২০ সালেই ভোকেশনাল কোর্সের টাকা নিয়ে বেনিয়ম তারা ধরে ফেলেন। এরপর ডেভেলপমেন্ট অ্যাকাউন্ট, এসএসএম অ্যাকাউন্ট সহ একাধিক অ্যাকাউন্টে গরমিল ধরা পড়ে বলে তাদের অভিযোগ। কখনো টাকা তুলে নিয়ে ব্যক্তিগত কাজে লাগানো, কখনো নিয়ম মেনে খরচ না করার অভিযোগ ওঠে। এছাড়াও প্রশাসকের সই জাল করার অভিযোগও ওঠে।
বিক্ষুব্ধ শিক্ষকদের দাবি,প্রধানশিক্ষক মুচলেখা দিয়ে এইসব অভিযোগ স্বীকার করেছেন। (এই নথিগুলি যাচাই করেনি টিভি৯ বাংলা)। বাকি শিক্ষকদের আরও অভিযোগ স্কুলের বেশিরভাগ দিনই আসেন না প্রধানশিক্ষক। তাঁর বাড়ি কাঁচড়াপাড়ায়। সেখান থেকে মাঝেমধ্যে স্কুলে আসেন। তাঁকে এখানে থাকার প্রস্তাব দেওয়া হলেও তিনি তা মানেননি। শুধু তাই নয়, শিক্ষকদের অভিযোগ, স্কুলে জলের সমস্যা আছে। এমনকী শৌচাগার নিয়েও সমস্যা মেটেনি। কোনও ক্রমে সহ শিক্ষকরাই পঠনপাঠন চালিয়ে যাচ্ছেন।
অভিভাবকদের অভিযোগ, এত সব গণ্ডগোলের জেরে স্কুলে ছাত্রছাত্রীদের সংখ্যা ক্রমশ কমছে। ৮০০ জন থেকে কমে মাত্র তিনশো ছাত্র এখন স্কুলে রয়েছে। শিক্ষকরা স্কুলের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত। এ মাসের শিক্ষকদের বেতন নিয়েও সমস্যা হয়েছিল ৷ বিষয়টি নিয়ে জেলা স্কুল পরিদর্শককে অভিযোগ জানাতে গিয়েছিলেন স্কুলের সহ শিক্ষক শিক্ষিকারা। যদিও জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের হস্তক্ষেপে শেষ পর্যন্ত এ সমস্যা মিটেছে। তবে যাঁর বিরুদ্ধে এত অভিযোগ, সেই প্রধান শিক্ষক প্রশান্ত দাসের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন তোলেননি। অন্যদিকে, অতিরিক্ত জেলাশাসক (শিক্ষা) সানা আখতার জানান, গোটা ঘটনার অভিযোগ পেয়েছেন। ডি আইকে তদন্ত করতে বলা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।