পূর্ব বর্ধমান: ডিম ভাতের হিসাবেও গরমিলে নাম জড়াল উপপ্রধানের। গালিগালাজ ও প্রাণনাশের ভয়ে পদত্যাগ করলেন প্রধান। দুয়ারে সরকারে শিবিরের খাবারের বিল নিয়ে বিতর্ক ওঠায় পদত্যাগ করলেন বর্ধমানের ২ নম্বর ব্লকের কুড়মুন ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তারা মালিক। তিনি বিডিওকে লিখিত ভাবে জানিয়েছেন, ষষ্ঠ দফার দুয়ারে সরকার শিবিরে নিয়ম বহির্ভূতভাবে বিল পেমেন্ট করতে তাঁকে চাপ দেওয়া হচ্ছে। তিনি তা না মানায় তাঁকে গালিগালাজ ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তাই তিনি পদত্যাগ করছেন। পাশাপাশি তিনি পদত্যাগ পত্রে আরও লিখেছেন, তৃতীয় দফার দুয়ারে সরকার শিবিরেও খাবারের বিল নিয়ে সমস্যা হয়েছিল। তখন বিধায়ক,পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, থানার ওসি বসে সমাধান করা হয়।
ষষ্ঠ দফার দুয়ারে সরকার শিবিরে ২০০ জনের ডিম ভাত খাবারের বিল হয় ৬৫ টাকা করে। সেই বিল ২০০ জনের পরিবর্তে ২৮০ জনের করতে তাঁকে চাপ দেন উপপ্রধান বাসুদেব দে । কিন্তু তিনি ওই দাবি মানতে অস্বীকার করেন।
এই নিয়ে পঞ্চায়েতে দ্বন্দ্ব শুরু হওয়ার পর থেকেই প্রধান তারা মালিক পঞ্চায়েত অফিসে যাননি।
এই নিয়ে বিডিও সুবর্ণা মজুমদার বলেন, “প্রধানের পদত্যাগ অফিসের রিসিভি সিং সেকশনে জমা পড়েছে বলে শুনেছি। দুয়ারে সরকার শিবিরে খাবারের বিল নিয়ে সমস্যা হয়েছে বলে জানাতে পেরেছি।”
তৃতীয় দফার দুয়ারে সরকার শিবিরে ডিম ভাতের বিল নিয়েও উপপ্রধান বাসুদেব দে দুর্নীতি করেন বলে অভিযোগ প্রধানের। সেই সময়েও তাঁকে জোর করে বিল পাশ করতে চাপ দেওয়া হয়। তিনি ভয়ে তিন সপ্তাহ পঞ্চায়েত অফিসে যাননি।
শাসকদলের এই গোষ্ঠী কোন্দলে যথারীতি সরব হয়েছেন বিরোধীরা। বিজেপির জেলার সাধারণ সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন, “রাজ্যের সব পঞ্চায়েতেই একই হাল। মহিলা প্রধান হলে উপপ্রধান সেখানে ছড়ি ঘুরিয়ে সব কিছুতেই ভাগ বসাচ্ছে। দুর্নীতি করে বড় বড় অট্টালিকায় বাস করছেন। আর প্রধান দু’বেলা ঠিক মত খেতেও পান না।”
সিপিএম নেতা কল্যাণ হাজরা বলেন, “কুড়মুন পঞ্চায়েত হল দুর্নীতির আখড়া। এখানে একশো দিনের কাজেও দুর্নীতি হয়েছে। উপপ্রধান নিজের স্ত্রীর নামে ৫০ দিন একশোদিনের কাজে নাম নাম লিখিয়ে নিয়েছেন।”
কটাক্ষ করতে ছাড়েনি কংগ্রেসও। জেলা কংগ্রেস নেতা গৌরব সমার্দার বলেন, “ডিম থেকে বালি সবেতেই পয়সা লাগবে। না হলে গদি থাকবে না।” এই বিষয়ে রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস বলেন, “দল কোন দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেয় না।সুতরাং পদত্যাগের কোন জায়গা নেই। অন্যায় করলে কঠোরভাবে তার ব্যবস্থা নেবে দল।”
অভিযুক্ত উপপ্রধান বাসুদেব দে ক্যামেরায় কিছু না বললেও টেলিফোনে জানান, খাবার নিয়ে রেজুলেশন করা হয়েছিল। সুতরাং এটা সবার মানা উচিত ও সম্মান করা উচিত। তবে হুমকির অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেন।