খণ্ডঘোষ : অনেকক্ষণ ধরে দরজা বন্ধ। ভিতর থেকে কোনও সাড়াশব্দ পাওয়া যাচ্ছিল না। সন্দেহ হয় পরিবারের লোকজনের। ডাকাডাকি শুরু করেন। কিন্তু, ভিতর থেকে কোনও সাড়াশব্দ পাওয়া যায়নি। তখন বাড়ির লোকরা ঘরের দরজা ভেঙে ভিতরে ঢোকেন। ঘরে ঢুকেই সবাই হতভম্ব হয়ে যান। খাটের নিচে পড়ে রয়েছে বছর সাতেকের নাবালকের দেহ। আর তার বাবার দেহ ঝুলছে। আজ ঘটনাটি পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষের লোদনা পঞ্চায়েতের নবগ্রাম কলোনি এলাকার। মৃতদের নাম অতীশ মজুমদার(৩৩) এবং অমর মজুমদার (৭)।
স্থানীয়রা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক অশান্তির কারণে মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন অতীশ মজুমদার। সেই কারণে ছেলেকে খুন করে তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন বলে মনে করছেন তাঁরা । খণ্ডঘোষ থানার পুলিশ দেহ উদ্ধার করে বর্ধমান মেডিকেল কলেজের পুলিশ মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।
খণ্ডঘোষের নবগ্ৰাম কলোনিতে বাড়ি অতীশ মজুমদারের। প্রায় ৬-৭ মাস ধরে স্ত্রীর সঙ্গে পারিবারিক অশান্তি চলছিল। অশান্তির জেরে তাঁর স্ত্রী খণ্ডঘোষের কুমিরকোলা গ্রামে চলে যান। অতীশ মজুমদার তাঁর ১২ বছরের কন্যা ও ৮ বছরের পুত্রকে নিয়ে থাকতেন। একাধিকবার স্ত্রীকে বাড়িতে আনার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু, স্ত্রী ফেরেননি । স্বামীকে মানসিক রোগী অপবাদ দিয়ে চলে যান বলে অভিযোগ। বুধবার ফের অতীশবাবুর পরিবারের কয়েকজন কুমিরকোলাতে তাঁর স্ত্রীর কাছে যান। বাড়িতে ফিরে আসার অনুরোধ করেন। কিন্তু একই অপবাদ দিয়ে তাঁদের সকলকে ফিরিয়ে দেন অতীশ মজুমদারের স্ত্রী। তাঁর স্বামীকে মানসিক চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করার কথাও বলেন পরিবারের লোকজনকে। বাড়ির লোকজন ফিরে আসার পর তাঁদের কাছে সব কথা শোনেন অতীশবাবু।
এরপর ৮ বছরের ছেলেকে নিয়ে ঘরে ঢুকে যান। সেই সময় তাঁর মেয়ে স্নান করতে গিয়েছিল। অনেকক্ষণ ঘর বন্ধ দেখে পরিবারের লোকেরা ডাকাডাকি করেন। কোনও শব্দ না পেয়ে দরজা ভাঙেন তাঁরা। খবর পেয়ে পুলিশ এসে দু’জনকে উদ্ধার করে পাঠায় খণ্ডঘোষ ব্লক হাসপাতালে। সেখানে দু’জনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
অতীশের আত্নীয়দের অভিযোগ, তাঁর স্ত্রীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক আছে। সেকারণেই স্বামীর ঘরে ফিরতে চাইছিলেন না। সেটা জানতে পেরেই এই চরম সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অতীশ। স্ত্রীর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন অতীশের আত্নীয়রা।