Lancha Hub: সাংঘাতিক! ছাতা পড়া শক্তিগড়ের ল্যাংচা, রসে ডুবিয়ে দিলেই হয়ে যেত…

Lancha Hub: শক্তিগড়ের ল্যাংচার কথা গোটা বাংলায় সমাদৃত। শক্তিগড়ে ১৯ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে গাড়িতে গেলে, এই ল্যাংচার দোকান দেখে দাঁড়ান না, এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর। শক্তিগড়ের ল্যাংচার রমরমার জন্য ল্যাংচা হাব পর্যন্ত করে ফেলেছে রাজ্য। অথচ সেই ল্যাংচা হাবের অন্দরমহলের এমন দৃশ্য?

Lancha Hub: সাংঘাতিক! ছাতা পড়া শক্তিগড়ের ল্যাংচা, রসে ডুবিয়ে দিলেই হয়ে যেত...
এই দশা হয়েছে ল্যাংচার।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 23, 2024 | 5:45 AM

পূর্ব বর্ধমান: জেলা স্বাস্থ্য দফতর গত কয়েকদিনে একাধিকবার অভিযান চালিয়েছে শক্তিগড়ের ল্যাংচা হাবে। এরপর ভয়ঙ্কর এক চিত্র উঠে এসেছে সামনে। ল্যাংচা হাবের গুদামে গিয়েছিলেন জেলা স্বাস্থ্য দফতর, খাদ্য বিভাগ, ক্রেতা সুরক্ষা বিভাগ এবং পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। গিয়ে দেখেন, কুইন্ট্যাল কুইন্ট্যাল ল্যাংচা সাদা হয়ে গিয়েছে ছাতা পড়ে। ছত্রাকে বীভৎস অবস্থা। এই ল্যাংচা খেলে পেটের রোগ অবধারিত। আরও বেশি কিছুও হতে পারে। মানুষের পেটে যাতে কোনওভাবেই তা না যায়, আধিকারিকরা সেগুলি মাটি খুঁড়ে পুঁতে দিয়েছেন। এ নিয়ে ল্যাংচা ব্যবসায়ীরা অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন ঠিকই। কিন্তু শক্তিগড়ের ল্যাংচা অ্যাসোসিয়েশনের যিনি মাথায়, তিনি কিন্তু মেনে নিচ্ছেন গোলমাল যে হয়েছে।

শক্তিগড় ল্যাংচা কল্যাণ ব্যবসায়ী সমিতির সেক্রেটারি বাবুল মণ্ডলের সঙ্গে কথা বলেছিল টিভিনাইন বাংলা। বাবুল মণ্ডল বলেন, “সচেতনতার অভাব তো ছিলই। না হলে এই জায়গায় আসত না। মাটির তলায় পুঁতে দেওয়া হয়েছে আমি দেখেছি। আমি সাধুবাদ জানাই। এই ল্যাংচা বিক্রি হলে শরীরে সমস্যা তো হতেই পারত।”

শক্তিগড়ের ল্যাংচার কথা গোটা বাংলায় সমাদৃত। শক্তিগড়ে ১৯ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে গাড়িতে গেলে, এই ল্যাংচার দোকান দেখে দাঁড়ান না, এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর। শক্তিগড়ের ল্যাংচার রমরমার জন্য ল্যাংচা হাব পর্যন্ত করে ফেলেছে রাজ্য। অথচ সেই ল্যাংচা হাবের অন্দরমহলের এমন দৃশ্য?

সম্প্রতি যে অভিযান চলে, সেখানে ছিলেন বর্ধমান উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুবর্ণ গোস্বামী নিজে। তিনি জানান, চূড়ান্ত অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে এখানকার রান্নাঘরগুলি রয়েছে। পোকামাকড়, কালিঝুলে ভরা। গ্রামের ভিতর যে গোডাউন, সেখানে কুইন্টাল কুইন্টাল ল্যাংচা গত এক মাস ধরে ভেজে রাখা হয়েছে বলে জানান সুবর্ণ গোস্বামী। তিনি বলেন, “ল্যাংচা ভাঙছি, ভিতরে ছত্রাক। প্রতিটা এরকম। তিন কুইন্টাল ল্যাংচা বাজেয়াপ্ত করতে হয়েছে। পরিবেশবান্ধব উপায়ে সেগুলি মাটি চাপা দেওয়া হয়েছে।” সেই ছাতা ধরা ল্যাংচা রসে ডুবিয়ে দিলে হয়ত বোঝাও যেত না গায়ে এমন ছত্রাক লেগে। স্বাস্থ্য আধিকারিক বলছেন, এমন ল্যাংচা পেটে গেলে তো কেলেঙ্কারি কাণ্ড হতো!

মাটির নিচে এভাবেই পুঁতে দেওয়া হয় ল্যাংচা।

ব্যবসায়ীদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তো উঠছেই। ল্যাংচা অ্যাসোসিয়েশন কী করছিল এতদিন, সে প্রশ্নও ওঠাই স্বাভাবিক। শক্তিগড় ল্যাংচা কল্যাণ ব্যবসায়ী সমিতির সেক্রেটারির দাবি, “আমাদের প্রতিবারই দোকানদারদের সচেতনমূলক বার্তা দেওয়া হয়। সকলকে ফুড লাইসেন্সের আওতায় আসতে বলা হয়। নিয়ম মেনে চলতে বলা হয়। কিন্তু তারপরও যেটা হয়, কোনও দোকানের মালিকানা বদলাচ্ছে, বাবার জায়গায় হয়ত ছেলে দোকানের দায়িত্ব নিচ্ছেন। আমরা এবার অ্যাসোসিয়েশনের তরফে চিন্তাভাবনা করেই ফেলেছি আগামী বছর থেকে ৭ জুলাই প্রতি বছর স্বাস্থ্য় ও খাদ্য দফতরের সমস্ত সচেতনমূলক বার্তা দিতে। এটা প্রতিবার করব বলে ঠিক করেছি। ২৩ জুলাই আমাদের অ্যাসোসিয়েশন ফুড লাইসেন্স নিয়ে অভিযান চালাব। খাদ্য দফতরের যিনি এই বিষয়টা দেখেন তাঁকেও আসার জন্য অনুরোধ করেছি। প্রত্যেককেই লাইসেন্সের আওতায় আনব।”