Private Nursinghome: ভুল চিকিৎসা? অন্ধই হয়ে গেল সদ্যোজাত, ‘মুখ্যমন্ত্রীকে বলো’-য় ফোন করলেন বাবা

Manatosh Podder | Edited By: অবন্তিকা প্রামাণিক

Nov 02, 2023 | 8:17 AM

Bardhaman: শিশুর বাবা হৃতেশ চৌধুরী বলেন, "এরপর আমরা দক্ষিণ ভারতের একটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাই। সেখানেও আমাদের জানানো হয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গিয়েছে সন্তানের চোখ। তারপরেও দু'টি অপারেশন করা হয়। শুধু তাই নয়, আমাদের বলা হয় ওর দৃষ্টি ফিরে আসার সম্ভাবনা অনেকটাই কম।"

Private Nursinghome: ভুল চিকিৎসা? অন্ধই হয়ে গেল সদ্যোজাত, মুখ্যমন্ত্রীকে বলো-য় ফোন করলেন বাবা
ভুল চিকিৎসায় চোখ নষ্ট শিশুর
Image Credit source: Tv9 Bangla

Follow Us

বর্ধমান: ভুল চিকিৎসার অভিযোগ। সদ্যোজাত শিশুর চোখ নষ্টে তোলপাড় স্বাস্থ্য মহল। কাঠগড়ায় বেসরকারি নার্সিংহোম। ইতিমধ্যেই বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ও জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন শিশুর বাবা। এই অভিযোগের ভিত্তিতে দুই সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক।

প্রসঙ্গত, প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে চলতি বছরের ২৪ জুন বর্ধমানের বাম চাঁদাইপুরেএকটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি হন শিশুর মা। বর্ধমানের বিবেকানন্দ কলেজ মোড়ের কাছে একটি অভিজাত আবাসনের বাসিন্দা এই চৌধুরী পরিবার। মহিলা সাত মাসের গর্ভাবস্থায় প্রি ম্যাচিওর শিশুর জন্ম দেন। তবে জন্মের পর থেকেই শিশুর শারীরিক অবস্থা খারাপ ছিল। পরিবারের দাবি, সেই কারণে সদ্যোজাতকে নিকু বিভাগে ভর্তি রাখার পরামর্শ দেন। সেখানে ৪৩ দিন পর্যন্ত ভর্তি থাকার পর শিশুকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

অভিযোগ, সেই সময় ওই শিশুর পরিবারকে জানানো হয়, প্রিম্যাচিওর অবস্থায় জন্ম হওয়ার জন্য চোখে সমস্যা রয়েছে। চৌধুরী দম্পতি ওখান থেকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এলে মেডিক্যাল কলেজের চক্ষু বিশেষজ্ঞ জানিয়ে দেন, এই সমস্যা প্রিম্যাচিওর বেবির ক্ষেত্রে সাধারণত হয়ে থাকে। পরিবারের দাবি, তাঁরা জেনেছেন যে এই ক্ষেত্রে শিশু চিকিৎসা দু থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যেই করতে হয়।

শিশুর বাবা হৃতেশ চৌধুরী বলেন, “এরপর আমরা দক্ষিণ ভারতের একটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাই। সেখানেও আমাদের জানানো হয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গিয়েছে সন্তানের চোখ। তারপরেও দু’টি অপারেশন করা হয়। শুধু তাই নয়, আমাদের বলা হয় ওর দৃষ্টি ফিরে আসার সম্ভাবনা অনেকটাই কম।”

হৃতেশ চৌধুরী দাবি, বর্ধমানের বেসরকারি হাসপাতাল প্রায় সাড়ে চার লক্ষ টাকা বিল নিয়েছে। তারপরও তাঁদের সন্তানের এত বড় ক্ষতি হয়ে গেল। তিনি বলেন,”আমি স্বাস্থ্য দফতরে জানিয়েছি। প্রয়োজনে আমি আদালতের শরনাপন্ন হব।।” তাঁর স্পষ্ট অভিযোগ ভুল চিকিৎসার কারণেই আমার চার মাসের ছেলের বাম চোখ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এনআইসিইউ-৩ সুবিধা থাকা একটা হাসপাতালে কেন আরপি স্ক্রিনিং করানো হল না।?” প্রশ্ন সন্তানের বাবার।

ঘটনার বিষয়ে শিশুর বাবা হৃতেশ চৌধুরী জেলাশাসক, জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে জানানোর পাশাপাশি। ‘মুখ্যমন্ত্রীকে বলো’ হেল্পলাইনে ফোন করে গোটা ঘটনার কথা জানান। ১৬ অক্টোবর জেলা স্বাস্থ্য অফিসে তাঁকে ডেকে তার বয়ান পিবদ্ধ করা হয়।

জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জয়রাম হেমব্রম বলেন, “আমরা শিশুটির বাবা মায়ের বক্তব্য সহ সমস্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখেছি। হাসপাতালের কাছ থেকেও এই বিষয়ে তথ্য চাওয়া হয়েছে। দুই সদস্যের কমিটি গঠন করে পুরো বিষয়টির তদন্ত শুরু হয়েছে।”

অপরদিকে ওই বেসরকারি হাসপাতালের শিশু বিভাগের ইনচার্জ ডা: মীর. টি. জামান জানিয়েছেন, তাঁদের কাছে প্রথম অগ্রাধিকার ছিল ওই শিশুটিকে চরম বিপন্নতা থেকে বাঁচিয়ে আনা। মানবিক দিক এবং চিকিৎসার প্রোটোকল মেনেই তাঁরা কাজ করেছেন। পরিবারের সদস্যদের সব সম্ভাবনা জানানো হয়েছিল। তিনি বলেন, “শিশুটিকে প্রথমে ১৪ দিন ভেন্টিলেশনের মধ্যে এবং পরে ১০ দিন সি প্যাপ এবং পরে আরও ১০ দিন অক্সিজেন সাপোর্ট দিতে হয়। শিশু স্থিতিশীল না হলে আর ও পি করা সম্ভব ছিল না। এছাড়াও অক্সিজেন সাপোর্ট আর ও পির জন্য দায়ি হলেও সেই মুহূর্তে শিশুটির জীবন বাঁচানোই ছিল মুখ্য। আগে যেমন পরিবারকে জানান হয়েছিল। তেমনিভাবেই শিশুটি অক্সিজেন সাপোর্ট থেকে বেরোনোর পরই তাঁদের মেডিক্যাল কলেজে যাওয়ার কথা বলা হয়।

চিকিৎসক আরও বলেন, “প্রথমে শিশুটির শারীরিক গঠনেই বড় ধরনের সমস্যা ছিল। বাচ্চাটি পঙ্গু হয়ে যেতে পারত। সেই অবস্থায় তাকে কোনও ভাবেই দক্ষিণ ভারত বা নিদেনপক্ষে কলকাতায় নিয়ে চোখের চিকিৎসা করা কার্যত অসম্ভব ছিল।”

 

 

 

Next Article