পূর্ব বর্ধমান: করোনার (Covid 19) সংক্রমণ যে হারে বাড়ছে তা মোকাবিলায় আবারও নবান্নের তরফে রাজ্যজুড়ে নাইট কার্ফু ঘোষণা করা হয়েছে। যদিও পূর্ব বর্ধমান জেলায় নাইট কার্ফু জারি হলেও বেপরোয়া মানুষজনের গতিবিধি বহাল। যদিও পুলিশও হাল ছাড়তে নারাজ। সোমবার রাতে নিষেধাজ্ঞাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে নাইট কার্ফু ভাঙার অপরাধে ও বিনা মাস্কে রাস্তায় বেরোনোর জন্য ৬৩ জনকে গ্রেফতার করেছে বর্ধমান থানার পুলিশ। বর্ধমান থানার আইসি সুখময় চক্রবর্তীর নেতৃত্বে জিটি রোডের কার্জন গেট চত্বরে এদিন রাতে অভিযান চালানো হয়।
পুলিশ প্রশাসনের মাইকিং-সহ বিভিন্ন প্রচার সত্ত্বেও মাস্ক পরার অনীহা জেলার সর্বত্র দেখা যাচ্ছে। এদিকে পুজোর পর হু হু করে বাড়ছে জেলায় কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা। এই বেপরোয়া মনোভাব নিয়ে জানতে চাইলেই মুখের উপর বলা হচ্ছে, ‘টিকার দুই ডোজ়ই নিয়ে নিয়েছি।’ তবে শুধু টিকাতেই তো আর কোভিড ঠেকানো সম্ভব নয়। তার জন্য প্রয়োজন যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মানা।
এদিন নরমে গরমে এ বার্তাই দিয়ে রাখল পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ। একদিকে যেমন অতিমারি আইন ভাঙায় গ্রেফতার করা হয়েছে। একই সঙ্গে যাঁদের মুখে মাস্ক ছিল না, তাঁদের হাতে মাস্ক তুলে দেওয়া হয়। পাশপাশি প্রত্যেককে মনে করিয়ে দেওয়া হয়, রাত ১১টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত জরুরি প্রয়োজন ছাড়া রাস্তায় বেরোনোয় আপাতত নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
অবশ্য যাঁদের ধরা হয়েছিল, তাঁদের সবাইকেই ব্যক্তিগত বণ্ডে সই করিয়ে রাতেই ছেড়ে দেওয়া হয়। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রথম দু’ একদিন সতর্ক ও সচেতন করার লক্ষ্যে পুলিশ সহনশীলতা দেখাচ্ছে। তবে এই প্রবণতা যদি চলতে থাকে সেক্ষেত্রে পুলিশ কড়া হাতেই নাইট কার্ফু অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
টিকার দ্বিতীয় ডোজ় নেওয়ার পরও অনেকে আক্রান্ত হচ্ছেন কোভিডে। প্রতিদিনই বর্ধমান শহরে তো বটেই গোটা জেলাতেই করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। তবুও অপ্রয়োজনে বহু মানুষ সামাজিক দূরত্ব বিধি শিকেয় তুলে জমায়েত করছেন। সংক্রমণে লাগাম টানতেই এবার বর্ধমানের রাজপথে অভিযানে নামল পুলিশ। বাসিন্দাদের মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে জোর তৎপরতা শুরু হয়েছে। পাশাপাশি শুরু হয়েছে ধরপাকড়।
যেহেতু পুজোর সময় করোনা পরীক্ষাও তুলনামূলকভাবে অনেক কম হয়েছে। তাই পরীক্ষার সংখ্যা বাড়লে তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যাও অনেকটাই বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। পোস্ট কোভিড বিভিন্ন উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসকের দ্বারস্থ হচ্ছেন অনেকেই। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শিশুদের জ্বর ও শ্বাসকষ্টের সংক্রমণ। গত এক মাসে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি হওয়া ৯ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এখনও বহু শিশু চিকিৎসাধীন রয়েছে। শিশুদের এখনও ভ্যাকসিনের আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব হয়নি। তাই বাড়ির বড়দের সতর্ক থাকতেই হবে। একমাত্র সতর্কতাই পারে প্রিয়জনের রক্ষাকবচ হতে।