WB By-Election 2021: ‘উনি কি হেলে সাপ নাকি ঢোঁড়া? যান অন্য কিছু করুন’, তৃণমূলের সায়ন্তিকাকে তোপ দিলীপের
WB By-Election 2021: পাশাপাশি বিএসএফের ক্ষমতার পরিধি বাড়ানো নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধিতাকেও কড়া ভাষায় সমালোচনা করেন দিলীপ ঘোষ।
উত্তর ২৪ পরগনা: একদিন আগেই ভোট (WB By-Election 2021) প্রচারে খড়দহে গিয়ে বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করেছিলেন তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবারই তার কড়া জবাব দিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সায়ন্তিকা বলেছিলেন, আশেপাশে প্রচুর বিষধর সাপ ঘোরাফেরা করছে। সাপুরিয়া ডেকে সমস্ত বিষ দাঁত ভেঙে দেওয়া হবে। তারই জবাবে এদিন দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘উনি কি হেলে সাপ নাকি ঢোঁড়া সাপ?’
উপনির্বাচন ঘিরে সরগরম খড়দহ। এখানে তৃণমূলের প্রার্থী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। ইতিমধ্যেই যাঁর সমর্থনে প্রচার করেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম-সহ একাধিক তৃণমূলের নেতা। রবিবার আজমতলায় পথসভা করেন সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করেন তিনি। সায়ন্তিকা বলেন, এদিক ওদিক অনেক বিষধর সাপ ঘোরাফেরা করছে। সাপুরিয়া ডেকে সেই সমস্ত সাপের বিষ দাঁত ভেঙে দেওয়া হবে। তারই পাল্টা সোমবার দিলীপ ঘোষ বলেন, “উনি কি ঢোঁড়া সাপ নাকি হেলে সাপ? ওনাকে জিজ্ঞাসা করুন। এসেছেন কেন বিষধর সাপের সঙ্গে লড়াই করতে? রাজনীতি করবেন না, যান অন্য কিছু করুন।”
পাশাপাশি বিএসএফের ক্ষমতার পরিধি বাড়ানো নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধিতাকেও কড়া ভাষায় সমালোচনা করেন দিলীপ ঘোষ। একই সঙ্গে কটাক্ষও করেন তিনি। দিলীপ ঘোষ বলেন, “উনি তো কিছুই মানেন না। সংবিধান মানেন না, আদালত মানেন না। যেদিন ওনার ভাইদের বিএসএফ তুলে নিয়ে গিয়ে ঢুকিয়ে দেবে, জেলের ভাত খাওয়াবে সেদিন বুঝতে পারবেন। সারা ভারতবর্ষের বিভিন্ন রাজ্য থেকে বলছে এই পরিধি বাড়াতে, অথচ সবচেয়ে বেশি উত্তেজনাপ্রবণ বাংলা-বাংলাদেশ সীমান্ত। ২২১৯ কিলোমিটার। উনি আসলে ভয় পাচ্ছেন ভাইদের ব্যবসা নষ্ট হয়ে যাবে। গরু পাচার, সোনা পাচার, স্মাগলিংয়ে সব নেতারা যুক্ত, পুলিশ যুক্ত আছে। সীমান্ত এলাকার মানুষের জীবন এরা ওষ্ঠাগত করে তুলেছে।”
রবিবার শিলিগুড়ি থেকে এই বিএসএফের পরিধি বাড়ানো নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বিএসএফকে আমি সম্মান করি। কিন্তু, কিছু পলিটিক্যাল মানুষ ইচ্ছে করে সীমানায় দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করছেন। সবটাই পলিটিক্যাল ষড়যন্ত্র। আগে সীমানা বরাবর বিএসএফ ১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত ঘুরতে পারত। এখন তা বাড়িয়ে ৫০ করে দেওয়া হয়েছে। কেন?” এখানেই না থেমে মমতা আরও বলেন, “আমাদের সীমান্তে সকলের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক। ভুটানের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক, বাংলাদেশের সঙ্গে ভাল করব। কেন আমরা অকারণে ঝগড়া করতে যাব! একসঙ্গে সকলে মিলে মিশে থাকব। ইচ্ছে করে ভাগাভাগি করে দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করবেন না।”
প্রসঙ্গত, পাকিস্তান লাগোয়া পঞ্জাব এবং বাংলাদেশ লাগোয়া পশ্চিমবঙ্গ ও অসমে বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) ‘অপারেশনাল’ ক্ষমতার চৌহদ্দি বাড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। গত সোমবার, ১১ অক্টোবর, একটি গেজেট নোটিফিকেশন জারি করে কেন্দ্র। তাতেই বিএসএফের ‘ক্ষমতা’ বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করা হয়েছে।
নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এখন থেকে এই তিন রাজ্যে সীমান্ত থেকে মূল ভূখণ্ডের ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকায় অপারেশনাল কাজকর্ম অর্থাৎ অনুসন্ধান, আটক এবং গ্রেফতার করতে পারবে সীমান্তরক্ষী বাহিনী। আগে এই চৌহদ্দি ছিল মাত্র ১৫ কিলোমিটার। পাশাপাশি, গুজরাতে বিএসএফের অপারেশনাল কাজের পরিধি ৮০ থেকে কমিয়ে ৫০ কিলোমিটার করা হয়েছে।
বঙ্গের সঙ্গে বাংলাদেশের সীমানা রয়েছে ২২১৭ কিলোমিটার। কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, দুই দিনাজপুর, মালদহ, মুর্শিদাবাদ, নদীয়া এবং উত্তর ২৪ পরগনার বেশ কিছু অংশের এলাকাবাসী বিভিন্ন সময়েই সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর অত্যাচারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে এসেছেন। বিএসএফের কাজের পরিধি বৃদ্ধিতে এই সংঘাত আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা সংশ্লিষ্ট মহলের।
আরও পড়ুন: ‘কার্ফুর রাতেও গাড়ি নিয়ে বাইরে কেন’, রাত্রিকালীন বিধি নিষেধ নিয়ে কড়াকড়ি কলকাতা পুলিশের