পূর্ব বর্ধমান: পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢোকার মুখে চেকিংয়ের নামে নগ্ন করে শ্লীলতাহানির অভিযোগ। অভিযোগ, রেহাত করা হয়নি বিশেষভাবে সক্ষম মহিলা থেকে গর্ভবতী মহিলাদেরও। ঘটনায় জোর শোরগোল তালিত গৌড়েশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়ে। এখানেই সিট পড়েছিল ডিএলএড পরীক্ষার্থীদের। ঘটনায় প্রশ্নের মুখে স্কুল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা। অভিযোগ, ডিএল এড পার্ট টুয়ের পরীক্ষা চলছিল। তখনই ঘটেছে এই নক্ক্যারজনক ঘটনা। ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে জেলা স্কুল পরিদর্শকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন অভিভাবকেরা।
যদিও সব দায় এড়িয়েছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক তথা সেন্টার সুপারভাইজার নিখিল কুমার খাঁ। তিনি আবার বলছেন, “এটা আমাদের অগোচরে হয়েছে। এ বিষয়ে আমরা কিছুই জানি না। প্রাইমারি বোর্ড ওদের কী নির্দেশ দিয়েছে সেটা আগে জানতে হবে। আমার কাছে আলাদা করে কোনও অভিযোগ আসেনি।”
অন্যদিকে রীতিমতো রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে পরীক্ষা দিতে আসা এক ছাত্রী বলছেন, “বড় পরীক্ষায় তো মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে মেটালিক জিনপত্র চেক করা হয়। এখানে তো অন্য কিছু। ওদের অধিকার নেই সব কিছু খুলে দেখার। তারপরেও করছেন। এটার দায় কে নেবে? কত মেয়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। পরীক্ষা পর্যন্ত ভাল করে দিতে পারেনি। মহিলাদের পোশাক খুলতে বাধ্য করা হয়েছে। সবকিছুতে বাধ্য করছে। দু’জন মহিলা চেকিংয়ের দায়িত্বে ছিলেন যাঁরা আমাদের এইভাবে হেনস্থা করেছেন।” তিনি যখন এ কথা বলছেন তখন পাশ থেকে আর একজন বলে উঠলেন, গর্ভবতী মহিলাদেরও ছাড় দেওয়া হয়নি। ছাড় দেওয়া হয়নি বিশেষভাবে সক্ষম মহিলাদেরও।
আর এক পরীক্ষার্থী বললেন, “পরীক্ষা হলে ঢোকার সময় সোয়েটার থেকে প্যান্ট সব কিছু খোলা করিয়েছে। ওদের বক্তব্য ছিল আমরা চিরকুট ভরে রেখেছি। সে কারণেই এমনটা নাকি করেছে। নগ্ন করে চেক করেছে। প্রথমদিন এমনটা করেনি। গতকাল করেছে। তারপর আমরা নিজেদের কলেজে জানিয়েছিলাম। আজ খুব একটা বেশি কিছু করেনি। যখন এরকম করছিল তখন আমি বললাম আমাকে ছেড়ে দিন আমি দাঁড়াতে পারছি না। কিন্তু, কোনও কথা শোনেনি। বলছে আপনাকে সব খুলতে হবে। আমাদের উপর থেকে নির্দেশ দেওয়া আছে।”
ক্ষোভ উগরে দিলেন আরও এক পড়ুয়া। বললেন, “চেকিংয়ের নামে অসভ্যতা চলেছে। আমাদের একটা বন্ধু বলছে আমার পিরিয়ডস হয়েছে তারপরেও তাঁকে রেহাত করা হয়নি। আমাদের অন্য বন্ধুরাও তো অন্য জায়াগায় পরীক্ষা দিতে গিয়েছিল কিন্তু তাঁদের সঙ্গে এমনটা হয়নি। শুধু মেটাল ডিটেকটর দিয়ে চেক করা হয়েছে। এখানে কিন্তু ছেলেদের চেকিংয়ে এত কড়াকড়ি হয়নি। যত কিছু কী শুধু তাহলে মেয়েদেরই চেক করতে হয়? নির্দেশ থাকলে তো সবার জন্য একই হওয়া উচিত।” যদিও বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান মধুসূদন ভট্টাচার্য। টেলিফোনে জানান, এমনটা হয়ে থাকলে কেউ ছাড় পাবে না। ডিআইকে তদন্ত করতে বলেছি। স্কুলের প্রধান শিক্ষকের থেকেও রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে।